- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

পাকিস্তান: বায়তুল্লাহ মেহসুদের বিরুদ্ধে অভিযান

বিষয়বস্তু: দক্ষিণ এশিয়া, পাকিস্তান, যুদ্ধ এবং সংঘর্ষ, শরণার্থী

বায়তুল্লাহ মেহসুদ [1] (জন্ম প্রায় ১৯৭৪) পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তানের একজন প্রথমসারীর সেনা নেতা আর তালিবানের ছত্রছায়ার দল, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্থান [2] (টিটিপি) এর নেতা, যা আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে গঠিত হয়। তিনি পাকিস্তানের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের গোলযোগপূর্ণ এলাকার মেহসুদ গোত্রের লোক আর প্রায় ২০,০০০ তালিবানপন্থী গেরিলাকে নেতৃত্ব দেন। পাকিস্থানের সব চেয়ে কুখ্যাত অপরাধী মেহসুদ ভূতপূর্ব প্রধান মন্ত্রী বেনাজির ভুট্টোকে হত্যার পেছনে দায়ী ধরা হয়। তিনি লাহোর পুলিশ একাডেমিতে হামলার দায় ভারও স্বীকার করেছেন আর মনে করা হচ্ছে এমন অনেক আক্রমণের জন্য তিনি দায়ী।

পাকিস্তান স্পেক্টেটরের [3] মোহসিন সেগাল মেহসুদের সন্ত্রাসী কৌশল নিয়ে বলেছেন:

পাকিস্তানের #১ সন্ত্রাসী হলো বায়তুল্লাহ মেহসুদ যে পাকিস্তানকে করাচি থেকে খাইবার পর্যন্ত কাঁপিয়ে দিয়েছে লাগাতার আত্মঘাতি হামলা, বোমা বিষ্ফোরণ, অপহরণ আর তার অন্যান্য শয়তানী কৌশলে। তিনি নানা দিক থেকে সমর্থন পাচ্ছেন আর পাকিস্তান জুড়ে ক্ষতি করতে পারেন। হঠাৎ করে শূন্য থেকে তার ক্ষমতা আসেনি। তিনি সু্যোগের ব্যবহার করেছেন। তার কৌশল হলো হলো যাযাবর আর কোন নেতৃত্ববিহীন বিদেশী জঙ্গীদের আর স্থানীয় জঙ্গীদের ব্যবহার করা, সাধারণ উজ্জীবক হিসাবে ইসলামের নামে।

বায়তুল্লাহ মেহসুদ মানুষের সামনে আসা বা ছবি তোলা এড়িয়ে চলেন বলে শোনা যায়। আইস্ট্রিম.ইন এর একটি ভিডিও তাকে আর তার সম্ভাব্য লুকাবার স্থান দেখিয়েছে:

গত ১৭ই জুন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে অপারেশন শুরু করেছে [4] তালিবান নেতা বায়তুল্লাহ মেহসুদ আর দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে অবস্থিত তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে।

অল থিংস পাকিস্তানের [5] জওহার ইসমাইল সেনা অভিযানের পেছনের কারন ব্যাখ্যা করেছেন:

যখন সেনাবাহিনী ব্যাখ্যাদানকারীরা একমত ছিলেন না এই অপারেশনের সময় নিয়ে, এখানে কোন বির্তক নেই যে বায়তুল্লাহ আর তার জঙ্গী নেটওয়ার্ককে গুড়িয়ে দিতে হবে যা পাকিস্তানকে ঘিরে ফেলা সন্ত্রাসবাদের সুনামী থেকে বাঁচানোর একটা প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ। আল কায়দা নেতৃত্বের প্রথমসারীর নেতাদেরকে আশ্রয় দেয়া ছাড়াও, টিটিপি বেশ কয়েকটা আত্মঘাতী প্রশিক্ষন ক্যাম্প চালাচ্ছে দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে। তিনি বেশ সফল চেষ্টা চালিয়েছেন বিভিন্ন সন্ত্রাসী দলকে একত্র করতে তাদের ‘সাধারণ শত্রুর’ বিরুদ্ধে লড়ার জন্য।

এই অপারেশনের নাম ‘রাহ-এ-নিজাত’ [6] যার মানে ‘ভালো মুক্তির রাস্তা'। অপারেশন রাহ-এ-নিজাতের শুরুতে বায়তুল্লাহর নিজ গোত্রের বেশ কয়েকজন গোত্রীয় নেতা তার বিরুদ্ধে গিয়েছে। এই জোটের ভিতরের চিত্র প্রো-পাকিস্তানের [7] জুনাইদ খান দেখিয়েছেন:

এখন যখন সেনা অপারেশন অবশ্যম্ভাবী, মেহসুদ গোত্রের লোকদের মধ্যকার ফাটল পরিষ্কার হচ্ছে। দক্ষিণ ওয়াজিরিস্থানের গোত্রের মানুষদেরকে দিক ঠিক করতে হবে কারন নিরপেক্ষ থাকা কঠিন উপায়।

উর্দু মাজা [8] আর একটি পোস্টে অপারেশনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে:

এটা সব থেকে ভালো সময়, আমরা ৩৫ লাখের বেশী পাকিস্তানীকে (শরণার্থী) দূরে সরিয়েছি, এখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দরকার দক্ষিণ আর উত্তর ওয়াজিরিস্থানের সকল জঙ্গীকে পরিষ্কার করা। উত্তরের এলাকা আমাদের সমাজ আর সংস্কৃতির মেরুদন্ড। এ এলাকা পবিত্রতার আর সৌন্দর্যের প্রতীক আর অবশ্যই পর্যটকদের জন্য তীর্থস্থান। কিন্তু এই অপরাধীদের সমূলে মুছে না ফেললে, তারা আবার সমস্যা করতে পারে।

স্থানীয় গোত্রের লোকেরা সেনাকে সাহায্য করতে চাওয়ায় আর যেহেতু মেহসুদের মাথার দাম ধরা হয়েছে ৫০ মিলিয়ন রুপী [9], তাই আশা করা যাচ্ছে যে অপারেশন দ্রুত হবে। কিন্তু পাকিস্তান এখন বাড়তে থাকা শরণার্থীদের সম্মুখীন হচ্ছে যারা যুদ্ধ থেকে পালাচ্ছে। আর এই অপারেশন দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে এটা একটা মানবাধিকার বিপর্যয় সৃষ্টি করবে।