সৌদি আরব: শোয়াইন ফ্লু কি হজ্জ্বের জন্য হুমকি হবে?

প্রতি বছর লাখ লাখ মুসলমান মক্কাতে একত্র হন হজ্জ্ব করার জন্য, যা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি। এই বছরের হজের মৌসুম কি এইচ১এন১ বা শোয়াইন ফ্লু ভাইরাসের কারনে বিপদ্গ্রস্ত? এই অঞ্চলের ব্লগাররা এ নিয়ে মন্তব্য করেছেন।

ক্রসরোড অ্যারাবিয়াতে জন বুরগেস ব্যাখ্যা করেছেন:

শরিয়া আইন সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ একজন সৌদি গবেষক দেখেছেন যে এইচ১এন১ বা শোয়াইন ফ্লু ভাইরাস আছে এমন স্থান থেকে আগত ওমরাহ (যা বাধ্যতামূলক না) পালনকারীদের নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ঘটনার নজীর আছে পূর্বে। আমি সন্দেহ করছি যে চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে হজ্জ্ব নিয়ে যা নভেম্বরের শেষে হবে। হজ্জ্ব বাধ্যতামূলক, যা সম্ভব হলে, প্রত্যেক মুসলমানের জীবনে একবার করা উচিত।

একই ধরনের আশঙ্কা করা হয়েছিল কয়েক বছর আগে, যখন বার্ড ফ্লু (এইচ৫এন১) ভীতিকর ছিল। একজন সৌদি বিদ্বান যদি ভয়ঙ্করভাবে এটা ছড়ায় তাহলে হজ্জ্ব বাতিলের কথা বলেন, কিন্তু অন্যরা এই প্রস্তাব নাকচ করেন। বির্তক ছিল যে জনসাধারণের স্বাস্থ্যগত কারনে হজ্জ্ব কখনো বাতিল করা হয়নি আর এটা করা ইসলামের পরিপন্থী হবে। এর বিপরীতে যুক্তি হচ্ছে যারা অসুস্থ তারা নীতিগতভাবে হজ্জ্ব করতে বাধ্য নন।

মহামারী আকারে ছড়াতে পারে এমন রোগ আর হজ্জ্ব দীর্ঘ ঐতিহাসিক সঙ্গী। অনেক রেকর্ড আছে হজ্জ্বযাত্রী কর্তৃক প্লেগ থেকে কলেরা পর্যন্ত অনেক রোগ ছড়ানোর, যার ফলে মক্কা, মদিনা আর জেদ্দাতে হাজার হাজার লোক মারা গেছেন বছর ধরে। কেবলমাত্র ১৯ শতকের শেষ ভাগে এসে কোয়ারেন্টাইন কঠোরভাবে আরোপ করা হয় [২১০ পাতা পিডিএফ] এলাকার বাইরে রোগ বিস্তার রোধে, বিশেষ করে আক্রান্ত তীর্থযাত্রীদের দেশে। কোয়ারেন্টাইন আর মেডিক্যাল স্ক্রিনিং এর কঠোর প্রয়োগের ফলে তীর্থযাত্রীদের বাচাঁনো সম্ভব আর এমতাবস্থায় তাই মনে হয় যথেষ্ট। শোয়াইন ফ্লু, আগের বার্ড ফ্লুর মতো, কোন ব্যাপার না হতে পারে। তবে, কেবলমাত্র সময় এটা বলবে। যদি না হয়, তবুও এটা ভালো যে মানুষ আগে থেকেই এর হুমকি নিয়ে চিন্তা করছে।

মিডল ইস্ট ইন্সটিটিউটের সম্পাদকের ব্লগ যোগ করেছে:

এটা অদ্ভুত থেকে অদ্ভুততর হচ্ছে। মিশরের গ্রান্ড মুফতি পরামর্শ দিচ্ছেন যে শোয়াইন ফ্লুর কারনে হজ্জ্ব থামানোর জন্য মুসলিম জ্ঞানীরা সম্মিলিত একটা ফতোয়া জারি করুক। এর আরবী সংস্করণ এখানে। মনে রাখবেন- আমি জানি আমি এটা বার বার বলি- মিশরে শোয়াইন ফ্লুতে কেউ আক্রান্ত হয়নি। আসলে কালকে পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যা (হু) এর তথ্য অনুসারে, সমগ্র মধ্য প্রাচ্যে কেবলমাত্র ইজরায়েলে সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে (সাতটা কেস)। আর হু বলেছে, ”হু যাতায়াতে কোন বাধা আরোপ করছে না ইনফ্লুয়েঞ্জা এ (এইচ১এন১) ভাইরাসের প্রসার রোধের জন্য।” আর হ্যাঁ আর একটা জিনিষ: হজ্জ্ব নভেম্বরের আগে না। আমি কি এখানে কিছু বুঝতে পারছি না? ইসলামের সমগ্র ইতিহাসে হজ্জ্ব কি কখনো থামানো হয়েছে স্বাস্থ্যগত কারনে? আমি জানি না, কিন্তু অন্তত একজন আক্রান্ত ব্যক্তি দরকার এটা বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য। (মধ্য প্রাচ্যে কেবলমাত্র যে কেস নেই তাই না, ইজরায়েল ছাড়া, কিন্তু ইন্দোনেশিয়া, মালায়েশিয়া, পাকিস্তান এ নেই- অন্তত কোন আক্রান্ত মুসলমান।)

1 টি মন্তব্য

আলোচনায় যোগ দিন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .