যদিও ‘শোয়াইন ফ্লু’ মহামারি নিয়ে ভীতি কমে গেছে, কিন্তু এইচ১এন১ ভাইরাস নামে পরিচিত এর ভাইরাস এখনও বিশ্বব্যাপী ছড়াচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) আজকে ঘোষণা করেছে যে ২৯ দেশে এখনও এই ভাইরাসের ৪৩৭৯টি নিশ্চিত কেস আছে আর ৪৯ জন এর থেকে মৃত্যুবরণ করেছে।
এখনো আমেরিকা আর মেক্সিকোতে সব থেকে বেশী এই কেস আছে, যদিও এখন এটা প্রায় সব মহাদেশে পাওয়া যাচ্ছে। এই মানচিত্র বিশ্বব্যাপী এইচ১এন১ ভাইরাস থেকে সকল নিশ্চিত কেস আর মৃত্যু দেখাচ্ছে আর এই রোগের প্রভাব আর মানুষের প্রতিক্রিয়া ধারণ করেছে।
এই ছবি মেক্সিকোতে নেয়া হয়েছে, যেখানে ভাইরাসটা সব থেকে ভয়ঙ্কর ছিল। হু জানিয়েছে যে মেক্সিকো ১৬২৬ নিশ্চিত কেসের কথা জানিয়েছে যার মধ্যে ৪৫টা মৃত্যু আছে।
মেক্সিকোতে এপ্রিলে প্রথম ধরা পড়া শোয়াইন ফ্লু ছড়ানোর প্রাক্কালে সেদেশের সরকার সাথে সাথে রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে সকল স্কুল, জাদুঘর, পাঠাগার আর থিয়েটার বন্ধ করার ঘোষণা দেয়। এই ছবি মেক্সিকো সিটির জাতীয় নৃতত্ত্ব জাদুঘর দেখাচ্ছে যা বন্ধ করে দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়, গীর্জা আর জাদুঘর গত বৃহষ্পতিবার আবার খোলা হয়, যেমন খোলা হয় সিনেমা, রেস্টুরেন্ট আর খেলার জায়গা। কিন্তু বাচ্চারা আগামী সপ্তাহের আগে স্কুলে ফিরবে না। এরই মধ্যে আমেরিকা জুড়ে অনেক স্কুল বন্ধ আছে, যেখানে হু রিপোর্ট করছে যে শোয়াইন ফ্লুর ২২৫৪টি নিশ্চিত কেস আছে আর দুটি মৃত্যু। এই ছবি টেক্সাসের ফোর্ট ওয়ার্থের একটা স্কুলের যেটা এইচ১এন১ মহামারির জন্য বন্ধ করা হয়। রোগ নিয়ন্ত্রণ আর প্রতিহত করার সেন্টার এখন পরামর্শ দিচ্ছে যে স্কুলকে আবার খোলা উচিত কারন আগে যা ভাবা হয়েছিল তার থেকে ভাইরাস কম শক্তিশালী। কিন্তু এরই মধ্যে এই বন্ধের কারনে দেশব্যাপী ৪৬৮০০০ জন ছাত্র ছাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।যখন এইচ১এন১ প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা হয় আর ছড়াতে থাকে তখন এটা আতঙ্কের সৃষ্টি করে, বলেছেন এই ছবির চিত্রগ্রাহক। এই ছবি মেক্সিকোর পূর্ব দিকের একটা সুপারমার্কেটের খালি তাক দেখাচ্ছে। চিত্রগ্রাহক যোগ দিয়েছেন যে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে খাদ্য আর ঔষধের কোন কমতি হবে না, যার আমদানী কমে যাচ্ছে।
মেক্সিকো সিটি থেকে নিউ ইয়র্ক শহর পর্যন্ত বদ্ধ স্থান যেমন সাবওয়েতে মানুষ মুখোশ ব্যবহার করছে সোয়াইন ফ্লু থেকে বাঁচার জন্য, যেহেতু এই জীবানু মানুষের মধ্যে মূলত হাঁচি আর কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। কিন্তু অনেক বিতর্ক আছে যে এইসব মুখোশ আসলেই কাজের কিনা।
তারপরেও অনেক মানুষ মুখোশ ব্যবহার করছেন নিজেদের বাঁচানোর জন্য, বিশেষ করে ভ্রমণের সময়ে, তা বিমানের যাত্রী বা কর্মী হোক। এই ছবিতে, ফ্লাইট ক্রু সদস্যরা মুখোশ পরে বোগোটার একটি বিমানবন্দরে তাদের মালামালের অপেক্ষায় আছেন।
এই ছবি যুক্তরাজ্যেও যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে তাই দেখিয়েছে, যেখানে নিশ্চিত ৩৯ কেস আছে শোয়াইন ফ্লুর। মহামারির সাড়াতে, ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এজেন্সি গত সপ্তাহে ঘোষণা করেছে যে তারা এইচ১এন১ এর পুরো জেনেটিক কোড বার করেছেন, যা শোয়াইন ফ্লু প্রতিষেধকের ইউরোপীয় প্রোটোটাইপ তৈরির প্রথম ধাপ।
এই ছবি হংকং এর একটা লিফট দেখাচ্ছে যেটাকে নিয়মিত শোধন করা হয় শোয়াইন ফ্লু থামাতে। যদিও চীনে মাত্র একটা নিশ্চিত কেস আছে এই পর্যন্ত, দেশটা ভাইরাসের ছড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপারে শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন, ৮ মে তে হংকং একটা হোটেলের উপর থেকে সপ্তাহব্যাপী কোয়ারেন্টাইন তুলে নেয় যেখানে একজন মেক্সিকান শোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন। এটি প্রায় ২৮০ জন লোককে মুক্ত করেছে যারা ওই বাড়ির মধ্যে আটকে পড়েছিল।
সবশেষে এই ছবিতে মানুষ মেক্সিকোতে মেট্রোপলিটন ক্যাথিড্রালে সমবেত হয়েছেন। চিত্রগ্রাহক বলেছেন যে তারা অসুস্থদের জন্য প্রার্থনা করছিলেন, এই আশায় যে তারা ‘ভালো সিদ্ধান্ত নেবেন’ আমাদের দেশের শোয়াইন ফ্লু এর বিরুদ্ধে।