ইন্দোনেশিয়া: দুর্নীতি দমন প্রধান হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন

ইন্দোনেশিয়ার দূনীর্তি দমন কমিশন (কেপিকে) এর প্রধান আন্তাসারি আজহারকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঔষধশিল্পের মালিক নাসরুদ্দিন জুলকারনাইনকে হত্যার পরিকল্পনার জন্য।

নাসরুদ্দিন মাথার আঘাতের কারনে মারা গেছেন। যে দুইজন মধ্য এপ্রিলে নাসরুদ্দিনকে গুলি করেছিল তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে আর তারা আন্তাসারির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছে।

গত সোমবার ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ আন্তাসারিকে সন্দেহভাজন হিসাবে নিশ্চিত করেছে। তবে, প্রেসিডেন্ট ইয়োধোইয়োনো, স্টেট সেক্রেটারী হাত্তা রাজাসার মাধ্যমে জানিয়েছেন যে রাজপ্রাসাদ আন্তাসারিকে এখনি অস্থায়ী বরখাস্ত করতে চাচ্ছে না, কেসের আরো অগ্রগতি না হওয়া পর্যন্ত তারা দেখবে।

স্থানীয় ইংরেজী সাপ্তাহিকী দ্যা জাকার্তা গ্লোব উদ্ধৃতি দিয়েছে একজন কেপিকে কমর্কতাকে যিনি বলেছে, ”কেপিকে একটা সংস্থা যেটি একজনের উপরে নির্ভরশীল না।”

পাতুং তার ইন্দোনেশিয়া ম্যাটার্স ব্লগে বলেছেন:

কেন আন্তাসারি আজহার নাসরুদ্দিনকে মারার হুকুম দিয়ে থাকতে পারেন এর দুটি সম্ভাব্য সংস্করণ আছে :

দূর্নীতি, আরএনআই আর গোল্কার – কেউ কেউ মনে করে যে এই হত্যাকান্ড সম্পর্কিত পিআরবি হোল্ডিং কোম্পানি আরএনআই এর ফাইন্যান্স পরিচালক রানেন্দ্র দাঙ্গিং এর দূর্নীতির যে বিচার হচ্ছে তার সাথে। পরিশোধিত চিনি আমদানির মনোপলি থেকে কথিত ৪.৫ মিলিয়ন রুপিয়া জালিয়াতির জন্য (৩৭০,০০০ ডলার) মার্চের ৩০ তারিখে রানেন্দ্রের বিচার শুরু হয়েছে। আরএনআই আর জাতীয় লজেস্টিক এজেন্সি (বুলোগ) চিনি আমদানী নিয়ন্ত্রণ করে।

রানেন্দ্রের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য জুলকারনাইনকে ডাকার কথা ছিল- এখন তিনি আর তা পারবে না। আর এন আই এর বিরুদ্ধে বর্তমানে আরো কয়েকটা দূর্নীতির তদন্ত চলছে, যদিও একটা মাত্র আদালত পর্যন্ত পৌঁছেছে।

অন্য গুজব শোনা যাচ্ছে যে নাসরুদ্দিন জুলকারনাইন কর্তৃপক্ষের সাথে সহযোগীতা করতে প্রস্তুত ছিলেন পিআরবি আর আরএনআই এর অন্য দূনীর্তি মামলা ফাঁস করে দেয়ার জন্য। লক্ষ্য ছিল কোম্পানিতে তার প্রতিপক্ষকে পর্যদুস্ত করা আর তার পদোন্নতির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়া- আর এই কারনে গলফের মাঠে তিনি আন্তাসারিকে বন্ধু করেছিলেন। কিছু মামলায় গোল্কার পার্টির সিনিয়র সদস্যদের নাম আসতে পারে।

এই ভাষ্যে আন্তাসারি যাদের তদন্ত আর বিচার করার কাজ তার করার কথা ছিল, তাদেরকে টাকার বিনিময়ে রক্ষা করেছেন, এবং গোল্কার পার্টিকে।

ভালোবাসার ত্রিভূজ: ২২ বছরের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এখানে জড়িত, রাহানি বা রানি জুলিয়ান্তি। সে মর্ডানল্যান্ড গল্ফ ক্লাবে খন্ডকালীন ক্যাডি হিসাবে চাকরি করত, যেখানে নাসরুদ্দিন আর আন্তাসারি খেলতেন। দুইজনই তার কাজের জন্য তাকে টাকা দিয়েছেন বলে শোনা যায়, গলফ কোর্স আর এর বাইরে। গত বছর তিনি নাসরুদ্দিন জুলকারনাইনের তিন নম্বর বউ হন।

শোনা যায় যে আন্তাসারি রানির ব্যাপারে মোহগ্রস্ত হয়ে পড়েন আর জুলকারনাইন এই সম্পর্ক গুজব প্রেসের কাছে তুলে ধরার ভয় দেখান।

এর মধ্যে তেগু উসিস, অনেক ইন্দোনেশিয়াবাসীর মতো বিশ্বাস করেন যে আন্তাসারিকে ফাঁসানো হয়েছে। স্থানীয় রাজনৈতিক প্লাটফর্ম পলিটিকানাতে প্রকাশিত তার লেখায় তিনি নিজেকে জিজ্ঞাসা করেছেন যে আন্তাসারির মতো একজন, যিনি ইন্দোনেশিয়ার দূর্নীতিকে গোড়া থেকে উৎপাটন করতে বদ্ধপরিকর, যিনি আগে কফির আমন্ত্রণ পর্যন্ত ফিরিয়ে দিয়েছেন যেহেতু এটা তার কাজের মূল্যবোধের সাথে মেলে না, এই মানুষ হত্যার মতো এমন একটা নৃশংস আর বোকার মতো কাজ করবেন।

তেগুহ ব্যাখ্যা করেছেন:

Memang, Antasari bukanlah KPK, dan KPK bukankah Antasari. KPK adalah sebuah lembaga. Antasari “hanya” menjadi ketua di lembaga tersebut. Tapi, jika sang panglima KPK dilibas, tidakkah itu bakal menimbulkan rasa jeri di lembaga pemberantasan korupsi tersebut? Boleh jadi, kolega Antasari akan jauh lebih hati-hati karena takut nasibnya akan berakhir sama dengan Antasari. Semoga saja kecemasan ini tidak menjadi kenyataan.

অবশ্যই আন্তাসারি কেপিকে না আর কেপিকে আন্তাসারি না। কেপিকে একটা এজেন্সি। আন্তাসারি এই এজেন্সির কেবলমাত্র ‘প্রধান'। কিন্তু যদি কেপিকের জেনারেলকে এইভাবে বের করা হয়, তার অধস্তনরা এখানে কাজ করতে কি দ্বিধান্বিত হবেন না? যা হতে পারে তা হলো আন্তাসারির সহকর্মীরা নিজেদের নিয়ে সাবধান থাকবেন, এই ভয়ে যে তাদের ভাগ্য আন্তাসারির মতো হবে। আশা করি আমার এই ছটফটে ভাব আসলে সত্যি হবে না।

দেশের বিচার ব্যবস্থায় মানুষের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার জন্য দূর্নীতি দূরীকরন কমিটির কাজ করার কথা।

কেপিকের প্রধান হিসাবে নিয়োগের পর থেকে, আন্তাসারি নতুন শত্রু তৈরি করেছিলেন – ইন্দোনেশিয়ার রাজনীতির বিশিষ্টজনদের। তার উচ্চস্তরের সফলতা ছিল ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের মেয়ের শশুর আউলিয়া পোহানকে দূর্নীতির জন্য বিচার করে জেলে পাঠানো।

কাগজে কলমে, কোন ইন্দোনেশিয়ার মানুষ কেপিকের আওতার বাইরে নয়।

ইন্দোনেশিয়ার টুইটার ব্যবহারকারীরা আন্তাসারির গ্রেপ্তার নিয়ে তাদের চিন্তার কথা জানিয়েছেন, যেহেতু দেশটায় দূর্নীতি খুব বড় একটা বিষয়।

উদাহরণস্বরুপ, পোয়েট্রি বলেছেন:

poetri

এই মুহূর্তে সব থেকে বোকা যারা বেঁচে আছে হলো তারা যারা আন্তাসারিকে ফাঁসিয়েছে। আপনাদের আরো সিএসআই দেখা উচিত। আমি আশা করি আপনারা কখনো মানুষের প্রতিনিধী হবেন না, যদি হন তাহলে জাতি আরো পঙ্গু হয়ে যাবে আপনাদের সাহায্যে।

ইন্দোনেশিয়ার মাটিতে দূর্নীতি বিরোধী কাজ জনপ্রিয় সমর্থন পায়। কেপিকের লক্ষ্য হলো কেবলমাত্র দূর্নীতিগ্রস্তকে বিচারের সম্মুখীন করাই না বরং ইন্দোনেশিয়ার তরুণদের মধ্যে সততার মূল্য সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া। ২০০৮ এ, কেপিকে শুরু করেছিল ‘ওয়ারুং কেজুজুরান’ বা ‘সততার মুদি দোকান’ উদ্যোগ দিয়ে, যেখানে ছাত্র আর অফিসের কর্মচারীরা তাদের প্রয়োজন অনুসারে জিনিষ কিনতে পারে একটা স্বচ্ছ বাক্সে টাকা দিয়ে, যেটা দোকানের ভিতরে থাকবে মানবহীনভাবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .