- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

এপ্রিল ফুল আইফোন ঠাট্টা: ফলাফল গ্লোবাল ভয়েসের ম্যানেজিং ডিরেক্টের লুকিয়ে যেতে বাধ্য হন

বিষয়বস্তু: কৌতুক, ঘোষণা

আর্ন্তজাতিক ব্লগিং প্রজেক্ট গ্লোবাল ভয়েস-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর জর্জিয়া জিএপি পপলওয়েল [1]। তিনি তার কমিউনিটি মেইলিং এর তালিকা ধরে যে ই-মেইল পাঠিয়েছেন, সেখানে ঘোষণা করা হয়েছিল, এই প্রকল্পে যে সমস্ত স্বেচ্ছাসেবক অংশগ্রহণকারী রয়েছে, তাদের প্রত্যেককে একটা আইফোন দেওয়া হবে। এই ই-মেইল ছিল এপ্রিল ফুল-এর একটি মজা। আপাত: দৃষ্টিতে এই বিষয়টি খুবই নিরীহ একটি তামাশা ছিল। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবকদের অনেক এই রসিকতাটি ধরতে পারেনি। তাদের কাছে এই বিষয়টিকে খোঁড়া এবং হৃদয়হীন কাজ বলে মনে হয়েছে। একজন বিকারগ্রস্থ ও বাজে রসিকতা করা ব্যাক্তি এ ধরনের কাজ করতে পারে বলে তারা মনে করেছেন।
[2]
পপলওয়েল বলেন, “চমক সৃষ্টি করা এই ই-মেইল পাওয়ার সময়, সবাই কি আসলেই মনে করেছিল আমি স্টীভ জবসকে চিনি? সত্যিই অবিশ্বাস্য ব্যপার”।

একজন স্বেচ্ছাসেবক লেখক কর্মী বলেন, “এ এক নিষ্ঠুর প্রকৃতির রসিকতা”। তিনি স্বীকার করেন, মেইল পাওয়ার পর তিনি উত্তেজিত বোধ করছিলেন এবং ভদ্রমহিলা তার তিন বছরের পুরোন নোকিয়া মোবাইল ফোন কাছের এক পুকুরে ছুড়ে ফেলে দেন। তবে তিনি এই মেইলের জটিল দ্বিতীয় অনুচেছদ পড়ার আগেই এই কাজ করে ফেলেন বলে জানিয়েছেন।

অন্য আরেকজন মন্তব্য করেন “আমি সবসময় জানি জিএপি এক দুষ্ট প্রকৃতির ব্যাক্তি এবং এই ধরনের বাজে কাজ আমার চিন্তাকেই সঠিক বলে প্রমানিত করেছে। এখন আমি আমার দামী আইফোন- খাপ এবং ব্লুটুথ হ্যান্ডসেট নিয়ে কি করবো? এই মেইল পাবার পর আমি এক দৌড়ে এসব জিনিষ কিনে ফেলেছিলাম।”

অন্য একজন স্বেচ্ছাসেবক বলেন,“ তিনি জানতেন এই মেসেজটি ভুয়া এক মেইল। কিন্তু তার কিছু চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যার তৈরী হয় তাতে তিনি এই সত্যটিকে বুঝতে অক্ষম হন যে ই-মেইল বিনে পয়সায় তাকে মোবাইল ফোন দিচ্ছে সেটি আসলে ঠাট্টা। একই রকম ঘটনা অরো অনেক স্বেচ্ছাসেবকের ক্ষেত্রে ঘটে। তারা এই মেইল পাওয়ার পর মানসিক পীড়ন অনুভব করেন। একজন স্বীকার করেন তিনি আদিবাসী তাঁতীদের ২৫০টি আইফোনের কেস বা খাপ তৈরী করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই খাপ তিনি তার এক সহকর্মীর কাছে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন। স্বেচ্ছাসেবক বলেন, “এ ক্ষেত্রে আমি ১৩০০% লাভ করতাম। আমি জিএপির কাছে অনেক টাকা পাই”।

[3]

গ্লোবাল ভয়েসের একজন স্বেচ্ছাসেবী ব্যবসায়ী আদিবাসী সম্প্রদায়ের তাঁতীদের কাছ থেকে আইফোনের এই ধরনের ২৫০টি খাপ তৈরীর আদেশ দেয়। সেগুলো এখন ইবে এবং এটসেই নামক সাইটে বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে।

গ্লোবাল ভয়েসেসের কোন স্বেচ্ছাসেবক যাদের সাথে আমরা কথা বলেছি স্বীকার করেনি যে তারা জানে কে জিএপিকে মৃত্যুদন্ডের হুমকি দিয়েছিল। এই হুমকির তাকে তার ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগোর বাসা থেকে উদ্বাস্তু করেছিল। এপ্রিল ফুলের দিনই তিনি তার বাসা ছেড়ে আজানা স্থানে আত্মগোপন করেন। একজন স্বেচ্ছাসেবক জানান হুমকিদাতা মধ্যে প্রাচ্য অথবা উত্তর আফ্রিকা (মেনা) টিমের কেউ একজন – কিন্তু তিনি বলেছেন, “কাউকে যেন না জানানো হয়, তিনি এ কথা বলেছেন”।

এই বিষয়ে সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় মেনার সম্পাদিকা আমিরা আল হোসাইনি [4] বলেন, “আমি কারো দিকে আঙ্গুল তুলতে চাই না। কিন্তু আমি যদি তা করি, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ার দিকে আঙ্গুলি নির্দেশ করবো”। নতুন স্থাপিত একটি ওয়েব সাইট (www.serves_gap_right.org) এ বিবৃতি প্রদানকালে দক্ষিণ এশিয়ার দলটি তাদের ফোরামে অনুষ্ঠানিকভাবে এই ধরনের কোন হুমকি প্রদানের কথা অস্বীকার করে। তারা সঙ্কেত দেয়, এটি জিএপির সাথে খুব কাছের কেউ একজন করেছে যা তার একই এলাকা থেকে এসেছে , “সম্ভবত ল্যাটিন আমেরিকা অথবা—–*কাশি* —- ক্যারিবীয় অঞ্চল হতে”।

[5]
কিছু গ্লোবাল ভয়েস স্বেচ্ছাসেবক বিশ্বাস করেন পপলওয়েল হুমকির পর যেখানে অবস্থান গ্রহন করেছেন তা অনেকটা এ রকম কোন স্থান।

গ্লেবাল ভয়েসের আঞ্চলিক স্বেচ্ছাসেবক এবং অনুবাদ দল যে এ ধরনের হুমকি প্রদানের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল না তা প্রমানের জন্য আলাদা একটি ওয়েব সাইট স্থাপন করে যার নাম আমরা এই কাজাটি করি নি (www.we_didnt_do_it.org)। তারা আলাদা একটি তহবিল স্থাপন করে, যা জিএপির দামী রির্সোটে অবস্থান করার বিল চুকিয়ে দেবে। গুঞ্জণ শোনা যাচ্ছিল যে উদ্বাস্তু হিসেবে তিনি সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। এই তহবিল তৈরীর উদ্যেগ পরে বাতিল করে হয় যখন আবিস্কার করা হয় যে যে টাকা প্রদান করা হচ্ছিল তা একজনের ব্যাক্তিগত পেপাল এ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে।