পাকিস্তান: গন্তব্য কোথায়?

প্রধান বিচারপতি ইফতিখার চৌধুরির পুনর্বহাল আর আইনজীবিদের লং মার্চ আন্দোলনের সফল সমাপ্তি ঘটায় সমগ্র পাকিস্তান আনন্দিত। যদিও বিচারপতি চৌধুরিকে পুনর্বহালের সম্মতি দিয়ে প্রেসিডেন্ট জারদারী আপাতদৃষ্টিতে হার মেনে তার অবস্থান থেকে পিছু হটে গেলেন, এটি সম্ভাব্য গন্ডগোল আর বিশৃঙ্খলা রোধ করতে পেরেছে যে অঘটন প্রতিবাদকারীদের দাবী না মানলে ঘটতে পারত।

কিন্তু সমস্যা কি মিটেছে? অল থিংস পাকিস্তানের আদিল নাজাম জানিয়েছেন:

কোন কারনে মনে হচ্ছে যে এই গল্পের শেষ হয়নি। আমরা এর আগেও একটা বিচারপতির পুনর্বহাল উদযাপন করেছি। আর প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ থেকে এটা পরিষ্কার না যে সিদ্ধান্তটির পেছনে শর্ত কি কি আছে।

এই ব্লগার পরবর্তী একটি পোস্টে লিখেছেন:

গল্পটি শেষ হতে এখনও অনেক বাকি। এটা কেবলমাত্র নতুন একটা মোড় নিয়েছে এবং আমরা জানি আরো অনেক কিছু আসছে। কিন্তু কি?

আমাদের অবশ্য মনে আছে যে তাকে আগেও পুনর্বহাল করা হয়েছিল- তার সঙ্গীদের দ্বারা সুপ্রিম কোর্টে। আমাদের এটাও মনে আছে যে আমাদের রাজনৈতিক নেতারা ঘোষণা আর প্রতিশ্রুতি দেন ভাঙ্গার জন্য

কালকে আমাদের সকলকে এই প্রশ্ন করতে শুরু করতে হবে: এর পরে কি?

এই ব্লগার সাথে সাথে কিছু ভবিষ্যৎবাণী করেছেন- পরে কি হতে পারে।

চৌরঙ্গী ব্লগের শাকির লাখানি অনুরোধ করেছেন আইনজীবিদের কাছ থেকে খুব বেশী কিছু আশা না করতে:

পাকিস্তানের মানুষ যাদের বেশিরভাগই একেবারে অশিক্ষিত, তাই তারা বিশ্বাস করতে চাইবে যে দেশের পরিস্থিতি রাতের মধ্যে পাল্টিয়ে যাবে। তারা পুনর্বহাল হওয়া প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে সাথে সাথে বিচার আশা করবে, এটা ভুলে যে সাথে সাথে কোন বিচার করা সম্ভব না।

দূর্ভাগ্যবশত:, পরিস্থিতি একই রকম থাকবে দীর্ঘ সময় ধরে। আমাদের বিচার ব্যবস্থা বিবাদীকে সব ধরনের অধিকার দেয় আর বাদীকে দোষ প্রমাণ করতে হয়। আর যেহেতু লুন্ঠনকারী আর ঘুষগ্রহণকারীর (আর এর সাথে চোরাকারবারী ও মাদক ব্যবসায়ী) অনেক অর্থ আছে সব থেকে ভালো উকিল নেয়ার, অনেক দেরী হয় তাদের দোষী সাব্যস্ত করতে (যদি কখনো সম্ভব হয়)।

তাই এখনকার মতো এটা ভালো হবে পূনর্বহাল হওয়া বিচারকদের কাছ থেকে বেশী কিছু আশা না করা। তারা কয়েক দিন বা মাসে এই ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে পারবে না।

টিথ মায়েস্ট্রোতে কামিল হামিদ লিখেছেন:

যদিও উৎসব হচ্ছে এখন, সুধী সমাজের আন্দোলন আর সাধারণ পাকিস্তানীদের এটা বুঝতে হবে যে এটা জরুরী যে এটাকে নতুন যুগের আরম্ভ হিসাবে ব্যবহার করা উচিত প্রতিবাদ আর ন্যায়বিচারের দাবী প্রতিষ্ঠার জন্য। এই সময়ে সন্তুষ্ট হয়ে বসে থেকে স্বার্থান্বেষী দলের কাছে ব্যাপারটি ছেড়ে দেয়া ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনবে।

এই ব্লগার পরামর্শ দিয়েছেন এর পরে কি করতে হবে:

আমরা লড়ে যাব। আমরা বিচার ব্যবস্থাকে শকুনের দৃষ্টি দিয়ে পর্যবেক্ষণ করবো যা এর আগে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠান আর রাজনীতিবিদদের বেলায় প্রয়োগ করতে পারিনি। আমরা আমাদের নায়কদের নায়ক হিসেবেই রাখব আর তাদের জনপ্রিয়তা বা ক্ষমতাকে ব্যক্তিগত লাভের কারনে ব্যবহার করব না।

আমরা আমাদের দাবী পেশ করবো, পুন:প্রতিষ্ঠিত বিচার ব্যবস্থা ব্যবহার করে আর এটাই ধরে রাখব, যা গণতান্ত্রিক সংস্কারের কিছু কম, সংবিধান লঙ্ঘন করে কিছুই নয়।

আমাদেরকে পথে নেমে প্রতিবাদ করে যেতে হবে, কিন্তু এইবারে এটি পরিস্কার করে যে এমন মানুষের সাথে আমরা না যারা দাবি করে যে তারা আমাদের পক্ষে কাজ করছে অথচ নিজেদের সাথে বোমা বেঁধে এমন এলাকায় উড়িয়ে দেয় নিজেদেরকে যেখানে সব থেকে বেশী মানুষ মারা যেতে পারে। আমাদের দাবী করা উচিত সোয়াত বিদ্রোহীদের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া, শান্তি চুক্তি বা সেনা অভিযানরুপে না…

এই তালিকা দীর্ঘ হতে পারে আমাদের সকলের জন্য। কিন্তু আমার মনে হয় আমি আমার বক্তব্য পরিষ্কার করেছি: যে অভুতপূর্ব আন্দোলন আমরা গড়ে তুলেছি তা শেষ হতে পারে না, অবশ্যই হবে না।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .