পাকিস্তান: গণতন্ত্রের বিজয়

পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি ইফতিখার মোহাম্মদ চৌধুরীকে আবার পুনর্বহাল করা হয়েছে যা সে দেশের চলমান আইনজীবিদের প্রতিবাদ এবং লং মার্চ কর্মসূচীর প্রাথমিক লক্ষ্যকে পূর্ণ করেছে। পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে এটা ঘোষণা করেন (১৫ই মার্চ, ২০০৯)। এর সাথে সরকার রাজী হয়েছে সকল চাকুরীচ্যুত বিচারপতিদের পুনর্বহাল করতে আর নওয়াজ শরিফ ও শাহবাজ শরিফের ব্যাপারে সুপ্রীম কোর্টের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথাও বলা হয়েছে।

গাপ্পু ব্লগের ফারহান লিখেছে:

অবশেষে পাকিস্তান সরকার পাকিস্তানের মানুষের ইচ্ছার সামনে হেঁট হয়েছে। সব উপায় চেষ্টা করে (ব্যর্থ হয়ে), শেষ উপায় হিসাবে, পাকিস্তান সরকার অবশেষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে চাকুরীচ্যুত বিচারপতিদের পুনর্বহাল করা যার মধ্যে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি ইফতিখার মোহাম্মাদ চৌধুরীও রয়েছেন। অবশেষ পাকিস্তানে সত্যিকারের উৎসব হচ্ছে, আইনজীবী, ছাত্র, সূধী সমাজ, কর্মী আর ব্লগারদের আন্দোলন সফল হয়েছে।

ইসলামাবাদ মেটব্লগস এর তালহা মাসুদ আশ্বস্ত হয়েছেন:

পাকিস্তানের সর্বত্র মানুষ উৎসব করছে, আর আমিও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছি কারন আমি ভয় পেয়েছিলাম যে আজকে রক্তপাত হবে।

ডেডপ্যান থটস এর ফায়সাল তার পোস্ট ‘মানুষ কথা বলেছে‘ তে লিখেছেন:

আজকে এই দেশের জন্য একটা বিশাল দিন, একটা স্মরণীয় মুহুর্ত। এটা দারুন শুধুমাত্র এই জন্য না যে প্রধান বিচারপতি তার স্বস্থানে পুনর্বহাল হয়েছেন, বা নেতাদের অবশেষে সুবুদ্ধি হয়েছে। এটা একটা দারুন মুহূর্ত কারন গতকাল পাকিস্তানের মানুষ একত্র হয়ে তাদের নেতাদের দেখিয়েছে যে ভুলের জন্য তাদেরকে দায়ী করা হবে। এটা মহান কারন যে গণতন্ত্রের কথা আমাদের নেতারা সবসময়ে বলেন গতকাল পুর্ণপ্রবাহে ছিল যেখন জনগণ দাবী করছিল আর তাদের দাবী পূরণ করা হচ্ছিল, তাদের এক আওয়াজ আর এক দাবী ছিল আর তাদেরকে আটকাতে সকল প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছিল, পুলিশ ব্যাটন মারছিল আর কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ছিল আর তাদের পথে কাটাঁতার দেয়া হয়েছিল, এই সবই ম্লান হয়ে গিয়েছিল এই মহান দেশের মানুষের শক্তির সামনে।

লেট আস বিল্ড পাকিস্তান সব সংবাদের রিপোর্ট আর অন্যান্যদের ব্লগ পোস্ট মিলিয়ে চেষ্টা করেছেন লং মার্চ আর প্রধান বিচারপতি ইফতিখার চৌধুরীর পুর্নবহালের পিছনের আসল গল্প খুঁজে পেতে।

লং মার্চের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে জিও টিভি, বেসরকারী একটা টিভি চ্যানেলের প্রচার পাকিস্তানের অনেক শহরে বন্ধ করে দেয়া হয় যখন বিক্ষোভকারীদের উপরে হামলা সেখানে প্রচারিত হচ্ছিল। চুপ! – চেন্জিং আপ পাকিস্তান জানিয়েছে:

শোনা যাচ্ছে যে পিপিপির (পাকিস্তার পিপলস পার্টির) সদস্য আর তথ্য মন্ত্রী শেরি রেহমান জিও সংবাদ ব্যান করার প্রতিবাদে তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।

কলকাতা, ভারত থেকে নিলা কান্ত চন্দ্র পাকিস্তানীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন গণতন্ত্রের এই বিজয়ে আর মন্তব্য করেছেন যে ভারতীয়দের এর থেকে অনেক কিছু শেখার আছে:

ভারতীয়দের পাকিস্তানীদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে গণতন্ত্র বাঁচিয়ে রাখার ব্যাপারে। ভারতীয়রা ঘুমিয়ে পড়েছে ভারতে গণতন্ত্রের লোক দেখানো চর্চার মাধ্যমে, তার সারবস্তু বাদ দিয়ে।

দীর্ঘ সময় ধরে, একটা পুরো প্রজন্ম, ভারতীয়রা তাদের গণতন্ত্রকে সাধারনভাবে গ্রহন করেছে। এর ফলে গণতন্ত্র উদাসীনতার সম্মুখীন হচ্ছে আর তা যেন কোমাতে চলে গেছে। একটা গণতন্ত্র ততটুকুই ভাল যা তার নাগরিকদের বিবেক চেতনা আর প্রতিবাদএ প্রতিফলিত হয়।

তাই আমি আশা করি আমার দেশবাসী আমাদের প্রিয় পড়শি পাকিস্তানের কাছ থেকে শিখবে। আর ততক্ষণ পর্যন্ত, আমি তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলছি: “পাকিস্তানীরা জিন্দাবাদ!”

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .