আদিবাসী জনগোষ্ঠী নিয়ে সারা বিশ্বে সচেতনতা বাড়ছে। ব্রিটেনের জনপ্রিয় সংবাদপত্র দা গার্ডিয়ান ও দি অবজারভার আদিবাসীদের বর্ণনা দিতে ব্যবহৃত দুটি বিশেষনের উপর নতুন নীতিমালা তৈরী করেছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন এই ধরনের বর্ণনা দিয়ে আদিবাসী সমাজকে একপেশে করে ফেলা হয় এবং তাদের আইনগত অধিকার খর্ব করা হয়। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্য দুর করতে এক প্রচারণা অভিযান শুরু করেছে সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল নামের প্রতিষ্ঠানটি।
এই প্রচারণা দুটি শব্দ সমষ্টির বিরুদ্ধে যা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট বর্ণনার জন্য ব্যবহার করা হয়। এদুটি হলো ‘আদিম জনগোষ্ঠী’ এবং ‘পাথুরে যুগ’। এ সব বর্ণনা ব্যবহারের বিপক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিষ্ঠানটি ‘এদের ঝেটিয়ে দুর কর’ বা ‘স্টাম্প ইট আউট’ প্রকল্পের মাধ্যমে তার সমর্থকদের বলছে তারা যেন আদিবাসীদের সমন্ধে এ ধরনের অবমাননাকর বর্ণনা প্রচারমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে কিনা সেই দিকে চোখ রাখে। প্রচারিত হলে সম্পাদকদের কাছে পোস্টকার্ড বা ই-মেইলের মাধ্যমে প্রতিবাদ পাঠাতে প্রতিষ্ঠানটি সমর্থকদের অনুরোধ জানিয়েছে।
সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল ব্লগ সম্প্রতি ব্রিটেনের প্রচারমাধ্যমের সাথে এক আলোচনায় অংশ নেয়। এই আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে প্রচার মাধ্যমে কিভাবে বর্ণনা করা হবে তা নিয়ে আলোচনা।
সারভাইভাল এর পরিচালক স্টিফেন কোরের কাছ থেকে ব্রিটেনের দি ইনডিপেডেন্ট পত্রিকায় এক প্রতিশ্রুতিশীল মতামত আসে। যখন প্রাক্তন বিবিসির কর্মী মাইকেল বুয়েরেক বিষয়টির উপর তার মতামত দেন তারপর থেকে বিশ্বজুড়ে আদিবাসী সমাজ বর্ণনার ক্ষেত্রে ‘আদিম’ শব্দ ব্যবহার নিয়ে বির্তক এক নতুন মাত্রায় পৌঁছে।
স্বীকৃত বহুঈশ্বরে বিশ্বাসী জোসেন পিটজেল ওয়াটার তার দ্যা ওয়াইল্ড হান্ট ব্লগে আমাদের জানাচ্ছেন:
সম্প্র্রতি সারাভাইভাল-এর ‘স্টাম্প ইট আউট’ প্রচারণা ব্রিটিশ পত্রিকায় দা গার্ডিয়ান এবং দি অবজারভারকে সাফল্যের সাথে প্রভাবিত করতে সমর্থ হয়েছে। তারা এখন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর পরিচয় বর্ণনায় ‘আদিম’ এবং ‘পাথুরে যুগ’ শব্দগুলোকে নিষিদ্ধ করেছে।
পিটজেল ওয়াটার-এর পোষ্টের উপর হিয়ার ইন দ্যা কেভ অফ ওয়ান্ডার লিখেছে:
‘আদিম’ এবং ‘পাথুরে যুগ’ উভয় শব্দ এসেছে বিবর্তনের বাতিল হয়ে যাওয়া এক পুরনো ধারণা থেকে। সারা বিশ্বে এখন এ রকম কোন জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব নেই। বিবর্তন মানে কোন এক পরিবেশ গ্রহণ করার সিঁড়ি বা মই নয়। কাজেই আদিম সমাজ থেকে সামনে এগিয়ে অগ্রবর্তী কোন সমাজে যাওয়ার বিশেষ রাস্তা নেই।
সংক্ষেপে বলতে গেলে বলা যায় এই ধরনের বর্ণনাগুলো ১৯ শতকের তৈরী। স্বজাত্বভিমান/মানবস্বজাত্ববোধ বিষয়টি বৈজ্ঞানিক এবং নৃতত্ববিদরা অনেক বছর আগেই বাতিল করে দিয়েছে, কারণ তা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিত নয়।