ক্রিল মাছ ধরা আর চন্দন কাঠ চাষের মধ্যে মিল কোথায়?

প্রথম দর্শনে ক্রিল মাছ আর চন্দন কাঠের মধ্যে মিলের কিছুই থাকতে পারে না কারন এদের একটি সামুদ্রিক প্রাণী আর একটি ভূমির গাছ। প্রানীজগতের দুই প্রানীর বিপদের কথা ভাবলে কিছু মিল পাওয়া যায়।

আইসবার্গপৃথিবী বিখ্যাত কেনিয়ার সংরক্ষণবাদী ডঃ রিচার্ড লিকি সম্প্রতি অ্যান্টারটিকে একটা সফর থেকে ফিরে জানিয়েছেন যে জাপান কার্যকর ক্রিল মাছ ধরার পদ্ধতির উন্নয়ন করেছে যার ফলে জেলে নৌকাগুলো অনেক বেশী সাফল্য পাবে। ক্ষুদ্র এই কাঁকড়া জাতীয় প্রাণীর দলকে টনে টনে এখন তোলা যাচ্ছে যার ফলে তারা দ্রুত এই মাছের মজুত শেষ করছে। সমুদ্রের প্রায় সকল মেরুদন্ডসহ প্রানীর খাদ্য হিসেবে ক্রিল মাছ খুবই গুরুত্বপূর্ন।

ডঃ লিকির বক্তব্য অনুসারে সমুদ্রের এই খাদ্যের রসদ কমে যাওয়ায় সমগ্র খাদ্য শৃঙ্খলে তার প্রভাব পড়ছে আর খারাপ প্রভাব পড়ছে খাদ্য পিরামিডের উপরের দিকে থাকা বড় আর সুন্দর তিমি, ওরকাস, পেঙ্গুইন আর সিলের উপরে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে বিশ্ব উষ্ণায়ন/জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বৈত প্রভাব আর অ্যান্টারটিকের জীবন বাঁচানো বেশ কঠিন হয়ে পড়ছে। ডঃ লিকি বলেছেন:

আর একটা ভয়ঙ্কর তথ্য আমি যা পেয়েছি তা হলো যে ক্রিল মাছ (ভারটিব্রাল জীবের খাদ্য শৃঙ্খলের জরুরী অংশ) কমে যাচ্ছে। একদিকে জলবায়ু পরিবর্তন আর এর প্রভাব বরফের প্রবাহ আর জমাট বরফের উপরে বড় একটা ভুমিকা রাখে, অন্যদিকে বর্তমানে ক্রিল মাছ বিশাল পরিমানে ধরা হচ্ছে জাপানে। আমাকে জানানো হয়েছে যে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেশী করে ক্রিল ধরা এর জনসংখ্যার উপরে ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলছে। এর ফলে খাদ্য শৃঙ্খলের উপরের দিকে থাকা জীব বৈচিত্রের অন্যান্য প্রানীর বেঁচে থাকার উপরে বাড়তি প্রভাব পড়বে।

চন্দন কাঠও অতিরিক্ত আহরণের জন্যে একই রকম বিপদের মধ্যে আছে। সেভিং কেনিয়াস ফরেস্ট ব্লগে কেনিয়ার একটা উদাহরণ দেয়া হয়েছে। এই ব্লগ বলে:

কেনিয়া চন্দন কাঠের গাছ (ওসিরিস ল্যঙ্কিওলাটা) হারাচ্ছে বেআইনি আহরণের ফলে। প্রাথমিকভাবে চিযুলু পাহাড়ে বেআইনিভাবে গাছকাটা মনে হয় আর জানা যাচ্ছে এখন কাজিয়াদো, তাইতা, আম্বোসেলি আর আশেপাশের র‌্যাঞ্চে, সাম্বুরু, কৈবাতেক আর কিকুয়ু এস্কার্পমেন্ট আর অন্যান্য এলাকায় তা ছড়িয়ে পড়েছে। বেশীরভাগ জায়গায় কোন ধরনের নিয়ন্ত্রণ ছাড়া চাষ হচ্ছে।

চন্দন কাঠ বেশীরভাগ সময়ে ব্যবহার করা হয় তার প্রয়োজনীয় তেল থেকে সুগন্ধী তৈরির জন্য যা এর গুড়ি, মূল ডাল আর শিকড়ের কেন্দ্রে থাকে। এই ব্লগ অনুসারে, চন্দন কাঠ পাশ্ববর্তী তাঞ্জানিয়ায় পাঠানো হয় আর কিছুটা প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি করা হয় ‘ইন্দোনেশিয়া, ভারত, দক্ষিন আফ্রিকা, ফ্রান্স, জার্মানি আর পূর্ব এশিয়ার দেশে প্রসাধন আর ঔষধ শিল্পের জন্য।”

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .