মিশরকে এগিয়ে নিচ্ছেন যেসব নারীরা

অন্যান্য অনেক দেশের নারীর মতো মিশরীয় নারীরাও অনেক সম্ভাবনার অধিকারী যখন তারা তাদের ক্ষমতা মুক্তভাবে প্রয়োগ করতে পারে। ইভা হাবিল, পাসান্ত রিফাত আর রাদওয়া সাদ এল দিন এমন মহিলা যারা তিন ভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

২০০৮ সালের ডিসেম্বরে গ্লোবাল ভয়েসেসে আমি মুসলিমাহ মিডিয়া ওয়াচ থেকে উদ্ধৃতি করেছিলাম যারা ইভা হাবিল সম্পর্কে ব্লগ করেছিলেন। ৫৩ বছরের এই খ্রীষ্টান আইনজীবি গত ১৪ই ডিসেম্বর মিশরের প্রথম মহিলা মেয়র হন। তিনি প্রতিনিধিত্ব করেন কম্বোহাকে যা মিশরের উপরের দিকের কোপ্টিক সেক্টের জনসংখ্যা বহুল একটি রক্ষণশীল গ্রাম্য শহর।

সায়মা আল জামাল তার আয়াম ওয়াইয়াম ব্লগে মিশরের প্রথম নারী ডিজে (ডিস্ক জকি) পাসান্ত রিফাতের একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন:

সায়মা: আর আপনার বাকী পরিবারের কি খবর? তারা কি আপনাকে সমর্থন করছে? কিভাবে?

পাসান্ত: আমার পরিবারের সমর্থন ছাড়া আমি প্রথম নারী ডিজে হতে পারতাম না। আমার ভাই তারেক আমাকে ডিজে হওয়ার কলা শিখিয়েছে আর কোন কিছুতে আমার অসুবিধা হলে আমাকে সমর্থন আর সাহায্য করেছে। আমার মার কথা বলতে – আমি মাত্র ১৫ বছরের ছিলাম আর আমার জন্য এগিয়ে যাওয়া কঠিন ছিল কিন্তু তিনি আমাকে সব সময়ে সাহায্য করেছেন আর আরো দূর যাওয়ার আর ভালো করার প্রেরণা দিয়েছেন। আমার ভাই আহমেদ সব সময়ে আমার সাথে যেত, কারন একটা মেয়ের পক্ষে রাত্রে ক্লাব বা পার্টিতে দেরি করে থাকা কঠিন, তারা আমাকে সমর্থন করেছে আর সাহায্য করেছে আমার মধ্যকার ডিজে এর প্রতিভাকে বিকশিত করতে।

সায়মা: নারী ডিজে হিসাবে কি ধরনের বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন?

পাসান্ত: আমি দৈনিক ১২ ঘন্টা গান নিয়ে কাজ করতাম যেটা মাঝে মাঝে খুব কঠিন মনে হতো। কিন্তু এটা বলতেই হবে যে এর প্রতিটি সেকেন্ড আমি উপভোগ করেছি। আপনি যে কাজ ভালোবাসেন সেটাকে করার আনন্দ কোন কিছু দিয়ে পুরণ করা যায়না। কয়েক জায়গায় আমি কাজ করার চেষ্টা করি। কিন্তু উত্তর ছিল, ‘তোমার বয়স অনেক কম আর আমাদের এখানে মেয়েদের কাজ করার অনুমতি নেই’ কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি। আমি বদ্ধ পরিকর ছিলাম আমাকে যা আনন্দ দেয় তা করার জন্য, যেহেতু প্রথমে সব কিছুই কঠিন। সব থেকে বড় বাধা ছিল ডিজে করার পাশাপাশি আমার পড়ালেখা। সকালে ইউনিভার্সিটি থাকলে রাত্রে দেরী পযর্ন্ত পার্টি থাকা খুব কঠিন ছিল, আর মাঝে মাঝে আমার পরীক্ষার সময়ে পার্টি থাকে, কিন্তু আমি আমার সময় ব্যবহার করতে পারতাম আর আমি দুইটাই করতাম একটা আর একটাকে কোন ধরণের বাধা না দিয়ে।

সায়মা: পুরুষরা নারী ডিজে হিসাবে আপনাকে কিভাবে দেখছে?

পাসান্ত: আসলে তারা মনে করেছিল এটা বেশ ভালো, তারা এসে আমার সাথে কথা বলতো আর আমাকে উৎসাহ দিত।

আর একটা পোস্টে সায়মা এল জামাল লিখেছিলেন মিশরের প্রথম নারী তানুরা নৃত্যশিল্পী সম্পর্কে:

رضوى سعد الدين.. أول راقصة تنورة أكدت أنه لا فرق بين رجل وامرأة
رغم سنواتها التى لم تتعد الثامنة عشرة، إلا أنها صممت على المضى فى طريق لم تفكر فيه فتاة من قبل، لتخترق مجالا قاصرا على الرجال، وهو “لف التنورة” الذى يعد من الفنون التركية التى ظلت لفترة طويلة بعيدة تماما عن المرأة. رضوى سعد الدين أول راقصة تنورة مصرية، قادتها الصدفة البحتة إلى التنورة، حين اختارها راقص التنورة الشهير سامى السويسى مع مجموعة من راقصات الاستعراض ليتم تدريبهن على رقصة التنورة التراثية، كان يرغب فى تقديم شكل جديد للتنورة، ويثبت أن المرأة قادرة على لف التنورة مثل الرجل تماما، إلا أن بعد عدة شهور أخذت أعداد الفتيات تتناقص، ولم يبق منهن إلا رضوى التى دخلت التنورة إلى قلبها، وقررت أن يكون مجال عملها الأساسى. جرت العادة على أن يكون راقص التنورة رجلا، كما أن الجهد المبذول فى الدوران المستمر يجعل من الصعب تصور أن تقوم به امرأة، لذلك ينبهر الجمهور بمجرد رؤيتهم رضوى تلف التنورة على المسرح، وقتها لا تركز إطلاقا على الجمهور، حيث يكون كامل تركيزها مع كلمات الإنشاد الدينى التى تشعر بها لتحولها إلى حركات صوفية. تشجيع والدها المستمر لها لتصبح أول راقصة تنورة رغم رفضه لباقى الفنون الاستعراضية التى تقدمها، يجعلها تبذل مزيدا من الجهد “نفسى أبقى أحسن راقصة تنورة”، وتلفت الانتباه إلى أن التنورة هى فى الأساس زى خاص بالمرأة، فلماذا تكون قاصرة على الرجال؟؟ 15 كيلو هو وزن التنورة الصوفية التى تحملها، هذا الوزن الكبير لا يكون له أى ثقل أثناء عملية الدوران التى لا تتجاوز مدتها ثلث الساعة

মাত্র ১৮ বছর বয়স হওয়া সত্ত্বেও রাদওয়া সাদ এল দিন সেই পথে যাওয়ার সংকল্প করেন যে পথে এর আগে কোন মেয়ে যায়নি আর শুধু পুরুষ শাসিত ছিল। তানুরা নাচ একটি তুর্কি সংস্কৃতি এবং এই তরুনী মেয়ে শিল্পী হঠাৎ করেই এই জগৎে এসে পড়ে। বিখ্যাত তানুরা শিল্পী সামি এল সেওয়েসি কয়েকজন মেয়ের মধ্য থেকে তাকে বেছে নেয় এই নাচের টেকনিকের ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য। তিনি এই নাচকে নতুন রুপে উপস্থাপন করতে চেয়েছিলেন কিন্তু দিনের পর দিন মেয়েদের সংখ্যা কমতে থাকে যখন শেষ পর্যন্ত রাদওয়া ছাড়া আর কেউ ছিল না যে এই কলার প্রেমে পড়ে যায় আর এটাকে পেশা হিসাবে গ্রহন করে। লোকেরা বাহবা দেয় যখন তাদের পুরুষ নৃত্যশিল্পী দেখতে অভ্যস্ত চোখ একজন নারীকে এইসব নাচের ঘূর্ণী দিতে দেখে; কিন্তু রাদওয়া ভীড়ের দিকে লক্ষ্য করেন না যেহেতু তিনি পুরোপুরি সুফি কথা আর তার চলনের মধ্যে ডুবে থাকে। তার বাবা, যে অন্য ধরনের শিল্পকে গ্রহন করেন না তাকে তানুরা শিল্পী হতে উৎসাহ দেন। রাদওয়া জানালেন যে তানুরা মানে স্কার্ট- মেয়েদের পোশাক- তাই নাচটা কেন পুরুষদের হবে? রাদওয়ার তানুরার ওজন ১৫ কেজি যেটা সহ তিনি যখন তার ২০ মিনিটের ঘূর্ণনাচন করেন মনে হয় তখন তা যেন গায়েব হয়ে যায়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .