কাজাখস্তানঃ রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য ফাঁসের অভিযোগে সাংবাদিক গ্রেফতার

“আলমা-আতা-ইনফো” পত্রিকার প্রধান সম্পাদক, রমাজান ইয়েশারগেপভকে এ বৎসরের জানুয়ারী মাসের প্রথমদিকে গ্রেফতার করেছে রাষ্ট্রের প্রধানতম বিশেষ সংস্থা জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রাদেশিক কর্মকর্তারা। কাজাখস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর তারাজ থেকে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে আলমাতার এপার্টমেন্টে এসে তাকে বন্দী করে নিজেদের শহরে নিয়ে যায়। গ্রেফতারের দিন থেকে ইয়েশারগেপভ অনশন শুরু করেন।

সরকারী ভাষ্য অনুযায়ী তিনি রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য ফাঁসের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন। ঘটনা পরিক্রমায় জানা যায় গেলো শরৎকালে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একজন নিজস্ব প্রতিনিধির ফাঁস হওয়া তথ্যের বরাতে ধারণা করা হয় তারাজের বিশেষ বিভাগের কর্মকর্তারা স্থানীয় ব্যবসা হস্তগত করার সাথে জড়িত। একেবারে ক্ষুদ্র কলেবর ও প্রকাশনায় নিরীহ মানের ইয়েশারগেপভের পত্রিকা এ বিষয় নিয়ে “কে দেশ চালায় – রাষ্ট্রপতি নযারবায়েভ নাকি জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ?” শিরোনামে একটি খবর ছাপায়।

খবরটি ছাপার পর পরই ইয়েশারগেপভ নানাবিধ হুমকি পেতে থাকেন। বাধ্য হয়ে ২০০৮ এর ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের দুতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ও প্রার্থনা করেন। অবধারিতভাবে দুতাবাস আবেদনে তেমন গুরুত্ব প্রদান করে নি – তবে ইয়েশারগেপভ এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা বিধানের জন্য কাজাখস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আহবান জানায়। কিন্তু ৬ই জানুয়ারী তাকে আটকদেশ দেয়া হয় ও পরে গ্রেফতার করা হয়। “অন্যায় দাপ্তরিক সুবিধাগ্রহণ” এবং “রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য অবৈধভাবে সংগ্রহ ও ফাঁসের” অভিযোগে ৮ বৎসর পর্যন্ত জেলভোগের বিধান রয়েছে।

সাম্প্রতিক অগ্রগতি হলো – ওএসসিই বিশেষ প্রতিনিধি মিকলস হারাজটি কাজাক প্রচারমাধ্যমের স্বাধীনতার স্বার্থে ইয়েশারগেপভকে ছেড়ে দিতে কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করেছেন। জেল ও হুমকি প্রদানকে তিনি চরমতম সামাজিক এবং রাজনৈতিক সমস্যা নিয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রের ওএসসিই প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ বলেও উল্লেখ করেছেন। রাষ্ট্রের গোপনীয়তা ও সাংবাদ-সূত্র সম্পর্কিত আইন সংশোধনের জন্য কর্তৃপক্ষকে আহবান জানিয়েছেন ওএসসিই কর্মকর্তা।

অসংখ্য স্থানীয় বেসরকারী সংস্থা এবং প্রচারমাধ্যমের অধিকার বিষয়ক পর্যবেক্ষক কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ বাতিলের জন্য সোচ্চার হয়েছে এবং বলেছে যে ক্ষমতাবানদের অবৈধ কার্যকলাপের তথ্য প্রকাশ করা সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব। গতকাল প্রধান বিরোধী দল “আজাত” বলেছে যে “আলমা-আতা ইনফো” পত্রিকা বন্ধ এবং এরপরেই রামাজান ইয়েশারগেপভের আটকাদেশ প্রমান করেছে যে যারা বিরাজিত সমস্যাগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরে এবং নিজেদের অবস্থানে সুদৃঢ় থাকে সরকার যুদ্ধ করছে তাদের বিরুদ্ধে, দূর্ণীতির বিরুদ্ধে নয়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .