ইজরায়েলের ‘চ্যানেল টু'র জনপ্রিয় উপস্থাপিকা হচ্ছেন ইওনিট লেভি। গত কয়েকদিন ধরে সাম্প্রতিক গাজা সংকট নিয়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার সহানুভুতিমূলক প্রতিক্রিয়ার কারনে ব্লগোস্ফিয়ারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি জেরুজালেম পোস্টে প্রকাশিত একটি আর্টিকেলে বলা হয়েছে যে ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এর নাম উচ্চারন করার সময় লেভির ভ্রু সাধারণত: কুঁচকে যায় এবং ফিলিস্তিনিদের নিয়ে আলোচনা করার সময় তার মুখ করুণ হয়ে যায়। তার মুখের এই অভিব্যাক্তির জন্যে অনেকে টিভি চ্যানেল থেকে তাকে বহিস্কার করার জন্যে একটি পিটিশনও আরম্ভ করেছে যা মাত্র কয়েকদিনেই ৩৫,০০০ সাক্ষর যোগাড় করেছে। এই পিটিশনের উদ্যোক্তারা বলছেন যে তাদের এই পদক্ষেপ কাজে দিয়েছে কারন লেভি এখন আর সেরকম অভিব্যাক্তি দেখাচ্ছেন না। তবে লেভিকে সমর্থন করে ঐ পিটিশনের বিপক্ষে আরেকটি পিটিশন শুরু করা হয়েছে।
ওয়ানজেরুজালেম.কম লেভির সপক্ষে দ্রুত এবং জোড়াল সমর্থন দেখিয়েছেন:
আমি আগের এক লেখায় ব্যাখ্যা করেছিলাম ফক্স নিউজের উদাহরণ দিয়ে যে অনেক টিভি চ্যানেলই নিজেদের পক্ষপাতিত্বহীন এবং সত্যবক্তা বলে দাবী করে অথচ কাজে তারা সম্পূর্ণ বিপরীত। ইওনিত লেভি আসলেই পক্ষপাতিত্বহীন এবং সত্যবক্তা এবং সেটা তাকে বলে বেড়াতে হয় না। তিনি অনেকদিন ধরেই এটি করে আসছেন এবং তার সংবাদ তিনি পুরো পেশাদারী ঢংয়েই প্রচার করেন যাতে তার ব্যক্তিগত মতামত এবং পরিপ্রেক্ষিত কম থাকে।
সংক্ষেপে বলতে গেলে ইউনিত, আমরা আপনাকে ভালবাসি। এমন ভাল কাজ করতে থাকুন আপনি।
একজন শুভানুধ্যায়ীর সাথে ইওনিত লেভি
ইজরায়েলী কানাডিয়ান ব্লগার লিসা গোল্ডম্যান ইজরায়েলের প্রচার মাধ্যমের সাধারণ প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানাচ্ছেন:
সাম্প্রতিক এক জরীপ অনুযায়ী ৯০% ইজরায়েলী গাজায় অভিযানকে সমর্থন করে। আমার কাছে এই পরিসংখ্যানকে দুশ্চিন্তাজনক মনে হয়েছে। ওহাদ যেমন এই পোস্টে বলেছে মতামতের ভিন্নতা এবং তা নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা সুস্থ গণতন্ত্রের মূল বৈশিষ্ট। আমি দেখেছি যেসব ইজরায়েলীদের যুদ্ধের বিপক্ষে মতামত আছে তাদের বিরুদ্ধে যেরকম উগ্র প্রতিক্রিয়া দেখানো হয় তাতে অনেকেই চুপ করে যাচ্ছে।
তাদের বিরুদ্ধে ভীতি প্রদর্শন করা হয় মৌখিক ভাবে (‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘ষড়যন্ত্রকারী’), এমনকি চাকুরি থেকে বের করে দেয়ার ও হুমকি দেয়া হয়, যেমন চ্যানেল টুর উপস্থাপক ইওনিত লেভির ক্ষেত্রে দেখা যায়। এক বন্ধু ফেসবুকের মাধ্যমে জীবনের হুমকিও পেয়েছে।
যদি আমরা ধরে নেই যে যারা এই জরীপে অংশ নিয়েছে তারা জানে যে ইজরায়েলী প্রচার মাধ্যমকে সেনাবাহিনী শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করে; এবং যদি ধরে নেই যে অংশগ্রহণকারীরা গাজায় কি হচ্ছে তা সব জানে এবং স্থানীয় প্রচার মাধ্যমে যে মতামত দেয়া হচ্ছে তা থেকে ভিন্ন কোন মতামত দেবার মত সাহস রাখে, তারপরেও এখানে ১০% লোক থেকে যায় যারা যুদ্ধকে সমর্থন করে না। টাইম আউট তেল আভিভ এই রকম কিছু ভিন্নমতকে তুলে ধরেছে।
ছবি ইউভালএইচ এর সৌজন্যে এবং ক্রিয়েটিভ কমন্সের আওতায় ব্যবহৃত।