আজারবাইজান: সংস্কৃতি ধ্বংস করা হচ্ছে

আর এক বছর পার হলো ১৯৯৪ এর যুদ্ধবিরতির পরে যা নাগোরনো কারাবাখ নিয়ে আরমেনিয়া আর আজারবাইজানের মধ্যকার যুদ্ধ থামিয়ে ছিল, কিন্তু দীর্ঘস্থাযী শান্তির আশা দেখা যাচ্ছে মিলিয়ে যাচ্ছে। দুই দেশ একে অপরকে দায়ী করছে অপরপক্ষের সাংস্কৃতিক আর ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শনগুলো ধ্বংস করার জন্য।

কিন্তু নাখিচেভেন এনক্লেভে থাকা একটা পুরনো আরমেনীয় কবরস্থান ধ্বংস করার বিষয়টাকে যেমন প্রায় তুলে ধরা হয়, তেমন অনেক কম জানা যায় আজারবাইজানের সাংস্কৃতিক নিদর্শনের ক্ষতি সম্পর্কে। গালাকাক গুন কিছু ধ্বংসের কথা বর্ণনা করেছেন

কেবলমাত্র সুশাতেই ৮টি জাদুঘর, ৩১টি লাইব্রেরী আর ৮টি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ধ্বংস করা হয়েছে। হাজিবেয়োভ জাদুঘরের ৩০০টির বেশী জিনিষ, বুলবুল জাদুঘরের ৪০০টি, নাভাব্বের ১০০টি, আগদাম জাদুঘরের ২০০০টি, গুবাদলি জাদুঘরের ৩০০০ টি, জেঙ্গিলান জাদুঘরের ৬০০০টি আর এর সাথে কারাবাখ ইতিহাসের আর কার্পেট জাদুঘরের ১০০০টি নিদর্শন ধ্বংস করা হয়েছে বা আর্মেনিয়ায় পাঠানো হয়েছে।

ƏN SON XƏBƏRLƏR, MƏQALƏLƏR ব্লগ পাঠকদের আজারবাইজান সেনাদের একটা তালিকা দিয়েছেন যাদেরকে যুদ্ধের সময়ে আর্মেনীয়রা আটক করেছিল আর যাদেরকে সুশার স্থাপত্য আর কবরখানায় ধ্বংসতে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।

মামাদোভ ভুগার: আমাদেরকে মুসলিমদের কবরস্থান ধ্বংস করতে বাধ্য করা হয়েছিল, আর [পাথর] গাড়িতে করে বিক্রির জন্য নেয়া হয়েছিল। সব মুসলিমদের কবরস্থান ধ্বংস করা হয়েছিল। তারা সুশা ধ্বংস করতে চেয়েছিল।

কাজিমোভ কারিম: অন্যান্য আটক সেনাদের সাথে, আমাকে বাধ্য করা হয়েছিল ইব্রাহিম খানেন আর মোল্লা ভাগিফের কবর ধ্বংস করার জন্য , আর বুলবুল আর হাজিবায়োভ স্থাপত্য আর কবরস্থান।

গাফারোভ রাউফ: সকল কবরস্থান ধ্বংস করা হয়েছে। সম্ভবত তারা মৃতদের কাছ থেকে সোনার দাঁত নিতে চেয়েছিল। তারা মসজিদের উপরে চার্চের চিহ্নও এঁকে দেয়।

বাগিরোভ সাহিব: ধ্বংসাবশেষ থেকে পাওয়া জিনিষ দিয়ে সাম্ভেল বাবায়ানের জন্য একটা বাড়ী নিমার্ন করা হয় [ভূতপূর্ব আটককৃত কারাবাখক আরমেনীয় সেনা নেতা]।

মেহদিয়েভ নাজিম: জিনিষগুলো দিয়ে [আর্মেনীয়] জেনারেল আদ্রানিকের জন্য একটা মন্যুমেন্ট তৈরি করা হয়। আজারতামারতিক সংবাদপত্রে তার সাক্ষাতকারে, নগারনো কারাবাখের সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের ডিপার্টমেন্ট পরিচালক জান্না আলেক্সসানিয়ান বলেছেন, ”সুশায় দখলের সময়ের আজারবাইজানদের সকল মনুমেন্ট আমরা ধ্বংস করবো।”

সালাম, জোস গাল্মিসিনিক্স মন্তব্য করেছেন প্রত্নতাত্বিক খোড়াখুড়ির উপরে আজিক্স গুহাতে, এলাকার একটা প্রথম দিকের প্রোটো- মানুষের আবাসস্থল। ব্লগে বলা হয়েছে যে এটা আজারবাইজান ভূমিতে অবস্থিত

“২০০৩ সালে, আর্মিনফো সংবাদ সাইটে লেখা হয়েছিল যে “আজিক্স গুহাতে প্রত্নতাত্বিক অভিয়ান চলছে।” এটা আজারবাইজানের সব থেকে পুরোনো আবিস্কার যেটার বয়স ১.৫ মিলিয়ন বছর। আর্মেনীয়রা ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড আর স্পেনের বিজ্ঞানীদের সাথে এখানে অভিযান করে জাতীয় আর আর্ন্তজাতিক আইন ভঙ্গ করছে তাদের অননুমোদিত ‘অভিযানের’ ফলে।”

একটা ফেসবুক পাতা তৈরি করা হয়েছে এই কাজের প্রতিবাদ করার জন্য আর কাউন্সিল অফ ইউরোপের সেক্রিটারী জেনারেল টেরি ডেভিস দুই দেশের রাজধানীতে সফর করেন গত ডিসেম্বর (২০০৮)। তবে এলাকার সাংস্কৃতিক আর ঐতিহাসিক স্থাপত্যের অবস্থা তদন্তের জন্য একটা আর্ন্তজাতিক মিশনকে পৌঁছুতে দেরী করানো হচ্ছে।

“ক্ষতির কারনে আমি খুবি হতাশ,” ডেভিস বলেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। ”আজারবাইজান আর আর্মেনিয়া দুই জনই ভুগেছে, আর এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য শুধু আপনাদের না [বরং ইউরোপীয়দের]। এগুলো আমাদের সাধারণ মূল্যবোধ আর আমাদের এটা রক্ষা করা উচিত।”

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .