- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

সৌদি আরব: সর্বসাধারণের জন্য সিনেমার প্রত্যাবর্তন?

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., সৌদি আরব, ধর্ম, শিল্প ও সংস্কৃতি

গত ৩০ বছর ধরে সৌদি আরবে সর্বসাধারণের জন্য সিনেমা নিষিদ্ধ রয়েছে। যদি দেশের বাসিন্দারা বড় পর্দায় সিনেমা দেখতে চায়, তারা পার্শবতী দেশ বাহরাইন বা স. আরব আমিরাতে যায়। কিন্তু গত সপ্তাহে জেদ্দায় একটা পাবলিক সিনেমা দেখানো হয় পুরুষ মহিলা মিশ্রিত দর্শকের মাঝে। এখানে আমরা দেখব এই ব্যাপারে সৌদি ব্লগগুলো কি বলছে।

জন বুরগেস ক্রসরোড অ্যারাবিয়া [1] ব্লগে বলেছেন:

সৌদি গ্যাজেট জানিয়েছে যে সর্বসাধারণের জন্য সিনেমা সৌদি আরবে ফিরে এসেছে। সৌদি চলচ্চিত্র ‘মানাহি’ জেদ্দায় মহিলা-পুরুষ সবার জন্য দেখানো হয়েছে, আর তায়েফেও। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে এই চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ঈদ উল আজহার [2] উৎসবের অংশ ছিল, তাই আমি নিশ্চিত না- আর প্রতিবেদনে পরিষ্কার বোঝা যায়না- এই সিনেমা ছুটির পরেও চলবে কিনা। প্রতিবেদনে এটা বলা হয়নি, কিন্তু এটা ভালোভাবে পরিষ্কার যে মক্কা অঞ্চলের গভর্নর প্রিন্স খালেদ আল ফায়সালের [3] অনুমতি ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। প্রিন্স খালেদের ক্ষমতা আছে তার ক্ষমতাসীন এলাকায় কিছু পরিবর্তন আনার, আর তিনি তা করার ইচ্ছাও দেখিয়েছেন।

তরুন সৌদিরা আশা করছে এটা একটা চিরস্থায়ী পরিবর্তন হবে যেহেতু বিদেশে গিয়ে শুধুমাত্র বড় পর্দায় চলচ্চিত্র দেখতে দেখতে তারা হয়রান হয়ে গেছে।

রুহশা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন [4]:

কেএসএ তে চলচ্চিত্র সরকারীভাবে নিষিদ্ধ আর লোকে বাহরাইন বা ইউএইতে নিজেরা যায় চলচ্চিত্র দেখতে (বা পাইরেটেড সংস্করণ কেনে বাসায় দেখার জন্য)।

মজার ব্যাপার হলো গত সপ্তাহে জেদ্দা আর তায়েফে ‘মানাহি’ দেখানো হয়েছিল। এটা ভীষন জনপ্রিয় আর সফল ঘটনা হয়েছে যা ১০ দিন ধরে চলেছে। সদ্গুণ তুলে ধরা আর পাপ নিরোধ করার কমিশনের [5] প্রধান আব্দুল্লাহ আল গাইথ এর বিরুদ্ধে বলেছেন: ”এই ব্যাপারে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার- নিষিদ্ধ করো এটাকে। এর কারন চলচ্চিত্র খারাপ আর এর দরকার আমাদের নেই। আমাদের যথেষ্ট খারাপ জিনিষ এরই মধ্যে আছে।”

যেটা অদ্ভুত সেটা হলো আজকের খবরে বেরুলো উলটো বক্তব্য। অফিসিয়াল মন্তব্য হচ্ছে “আমরা সিনেমার বিরুদ্ধে না যদি এটা ভালো জিনিষ দেখায় আর ইসলামী আইন ভংঙ্গ না করে।”

‘মানাহি’ প্রযোজনা করেছে রোটানা হোল্ডিংস, প্রিন্স ওয়ালেদ বিন তালালের [6] একটা মিডিয়া কোম্পানি। রোটানার পরের চলচ্চিত্র ‘এয়াল মানফৌহা'র কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।

এটা আর একটা নিদর্শন যে পরিবর্তনের বাতাস বইছে। ভালো হত যদি কেএসএ ভালো একটা মিডিয়া/ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড উন্নয়ন করত যারা মান ঠিক করতো যে কি দেখানো যাবে আর যাবে না, আর কিভাবে ইউরোপ, আমেরিকা আর এশিয়ার চলচ্চিত্র দেখানো যাবে।

ক্লোজ আপ চলচ্চিত্রের উপরেই মন্তব্য করেছে- আর সৌদি চলচ্চিত্র নির্মাণের ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে [7]:

فكرة المبادرة فيلم “مناحي” تستحق التحية والتقدير، رغم أنني أعتقد أنه لايتجاوز في مضمونه التهريج الكوميدي “الماصل” .. ومن قبله فيلم العلاقات العامة “كيف الحال؟” الذي شاهده السعوديون في سينما البحرين بكل سخرية وامتعاض ..

ومع ذلك أعتقد أن في مجتمعنا شباب مبدع واعد قادر على تقديم أعمال سينمائية قديرة تنبع من عمق روحنا وهويتنا، بكاميرا واحدة وطاقم صغير يقوم بجميع الأدوار يكتب ويصور ويمثل ويمنتج !

‘ মানাহি’ চলচ্চিত্র তৈরির পেছনের চিন্তাকে স্বাগত আর অভিনন্দন জানানো উচিত, যদিও আমি মনে করিনা যে এর বিষয়বস্তু কমেডি ‘আল মাসিল’ বা জনগণের কাছে প্রচারণা চালানো চলচ্চিত্র ‘কাইফ আল হাল [8] [প্রথম সৌদি চলচ্চিত্র হিসেবে স্বীকৃত] এর চেয়ে উৎকৃষ্ট বা সমকক্ষ হয়েছে। এদুটি সিনেমা সৌদিরা বাহরাইনের সিনেমা হলেতে ব্যঙ্গ আর বিরাগ সহকারে দেখেছিল।

তবে আমি বিশ্বাস করি আমাদের সমাজে সৃজনশীল আর আত্মপ্রত্যয়ী তরুণ আছে যারা পারে সিনেম্যাটিক কাজ করতে যা আমাদের আত্মা আর পরিচয়ের ভিতর থেকে উঠে আসবে; একটা ক্যামেরা আর ছোট ক্রু নিয়ে, সব ভূমিকা পালন করে- লেখা, ফিল্মিং, অভিনয় আর প্রযোজনা!