গত সপ্তাহে মেলবোর্নের রড লেভার এরিনাতে বিশ্ব আদিবাসী কনফারেন্স: শিক্ষা তে পৃথিবীব্যাপী ৩০০০ আদিবাসী প্রতিনিধি তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। এই কনফারেন্সের উপর মুলধারার মিডিয়ার খুব কম কাভারেজ ছিল আর আমার জানা মতে বিশ্বব্যাপী ব্লগগুলোতেও এই নিয়ে কম লেখা হয়েছে।
ন্যাশনাল ইন্ডিজিনাস টিভির জন্য কার্বন মিডিয়া অপূর্ব কিছু ভিডিও প্রস্তুত করেছে যা ব্লাক ট্র্যাকস সাইটে পাওয়া যাবে। তাদের ৫টি এপিসোডে আছে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করা বক্তা আর কনফারেন্সের ডেলিগেটদের সাথে স্বাক্ষাৎকার। ভিডিও স্বাক্ষাৎকারের একটা নমুনা:
ব্ল্যাক ট্র্যাক্স মেলবোর্ণ ভডকাস্ট ২য় এপিসোড – বানিয়েছে কার্বন মিডিয়া এবং প্রকাশ করা হয়েছে ভিমিওর সৌজন্যে।
আমি সৌভাগ্যবান ছিলাম প্রথাগত স্বাগত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে এবং আইসিভি (ইন্ডিজিনাস কমিউনিটি ভলিন্টিয়ার) এর স্টলে সাহায্য করতে পেরে। আইসিভি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যা অস্ট্রেলিয়ান আদিবাসীদের নতুন দক্ষতার শিক্ষা দেয়। যেসব গোষ্ঠী, সংস্থা বা ব্যক্তির ওই দক্ষতা দরকার আইসিভি তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আদিবাসী স্বেচ্ছাসেবকদের দক্ষতা মেলায়। আইসিভির সাথে সেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করা হলো দক্ষতা আর জ্ঞান ভাগ করে নেয়া আর একসাথে আরও অনেক কিছু শেখা। দক্ষতা বিনিময় প্রকল্প থেকে কর্মসংস্থান এর সুযোগ হয়, কর্মসংস্থান হলে হয় গোষ্ঠীর উন্নয়ন।
কনফারেন্সের ডেলিগেটরা যথেষ্ট উৎসাহ দেখিয়েছেন কিভাবে এই প্রোগ্রামকে বিশ্বব্যাপী তাদের প্রয়োজনমাফিক গ্রহণ করা যায়।
ডাব্লুআইপিসিই কনফারেন্স শেষ হবার এক সপ্তাহ পরে ইন্টারনেটে খুঁজে এ ব্যাপারে কম জিনিষই জানা যাচ্ছে। মেলবোর্ন থেকে প্রকাশিত দৈনিক সংবাদপত্র দ্যা এইজ (১৩ ডিসেম্বর ২০০৮) একটু আলাদা ছিল যেখানে তারা এ নিয়ে লিখেছে:
গ্রাহাম হিঙ্গাঙ্গারোয়া স্মিথ হচ্ছেন তি হোয়ারে ওয়ানাঙ্গা ও আওয়ানুইয়ারাঙ্গীর চেয়ারম্যান। এই প্রতিষ্ঠানটি মাউরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে সার্টিফিকেট থেকে পিএইচডি পর্যন্ত ছাত্র আছে।
বিখ্যাত শিক্ষা বিপ্লবের প্রণেতা, প্রফেসর স্মিথ একটা মাউরি স্কুলের প্রারম্ভিককালের শিক্ষক ছিলেন। এই শিক্ষা ব্যবস্থা ১৯৮৮ সালে একটা স্কুল দিয়ে সূচনা করে বর্তমানে ৮০টির বেশী সরকারী অনুদানপ্রাপ্ত স্কুলের নেটওয়ার্কে পরিণত হয়েছে।
তার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যলয়ে মাউরি শিক্ষার স্ফুলিঙ্গ ফোটে।
“আমাদের শিক্ষার বোর্ডে আরো বেশী মাউরি প্রতিনিধিত্বের প্রয়োজন ছিল। এটা একই সাথে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার একটা পদক্ষেপ ছিল,” তিনি বলেছেন। “আদিবাসী জনগোষ্ঠী হিসাবে আমরা আমাদের সামাজিক-অথনৈতিক অনুন্নয়নের কথা বলতে পারবোনা যদি আগে শিক্ষার বিপ্লব না ঘটে।”
ড: ক্রিস সাররা, অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী শিক্ষার নেতৃত্বের ইন্সটিটিউট আর কুইন্সল্যান্ডের শেরবর্গ স্কুলের ভূতপূর্ব প্রিন্সিপাল, এই কনফারেন্সে বক্তৃতা দিয়েছিলেন কিভাবে আমরা আরো শক্তিশালী আর দক্ষ শিক্ষা পেতে পারি যেটা শক্তিশালী সংস্কৃতি আর দক্ষ স্কুলের মূল্য বোঝে।
দ্যা এইজ অনুসারে:
ক্রিস সাররা কনফারেন্সে জানিয়েছেন যে শিক্ষকদের ‘যা লাগে’ নীতি গ্রহণ করতে হবে আদিবাসীদের শিক্ষার উন্নতি করতে।
“তরুণ আদিবাসীরা প্রায় ভুল করে ভাবতো যে চালাক হলে তাদের কম এবোরিজিনাল দেখাবে”, তিনি বলেছেন।
“আপনারা কয়টা তরুণ আদিবাসী বাচ্চাদের কথা শুনেছেন যারা স্কুলে ভালো করতে সচেষ্ট, শুধুমাত্র তাদের আদিবাসী সমকক্ষদের দ্বারা টেনে নীচে নামানোর জন্য এমন মন্তব্য করে যে ”তুমি মনে করো যে এখন তুমি আমাদের জন্য খুব উজ্জ্বল” বা “তুমি একটা নারিকেল,” তিনি প্রতিনিধিদের বলেছেন।
তিনি শিক্ষকদেরকে তাগিদ দিয়েছেন যাতে তারা একজন ছাত্রের আদিবাসী পরিচয়কে গ্রহণ করে আরো উন্নত ফলের অংশ হিসাবে।
মাওরি প্রশিক্ষকরা এখনো সঠিক উত্তর খুঁজছেন।
ব্লাক ট্র্যাক্স স্বাক্ষাৎকারে গ্রহন করা একটা বিষয় ছিল “ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার গুরুত্ব”। “উত্তরের স্কুলে দুই ভাষা ব্যবহার সাম্প্রতিক একটা গরম খবর” – এটি তারা দেখছেন। নতুন একটা সরকারী নীতিতে দেখা যাচ্ছে যে দুই ভাষার প্রোগ্রাম থাকা স্কুলের ক্লাসের সময় কমে যাচ্ছে।
একটি স্বাধীন অস্ট্রেলিয়ান অনলাইন মিডিয়া সার্ভিস ক্রিকিতে এই বিষয়টা ক্যানভাস করা হয়েছে। তাদের নিয়মিত ব্লগার, বব গসফোর্ড (যিনি দ্যা নর্দার্ন মীথ এ লিখেন), এলিস স্প্রিং থেকে ৩০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ইউয়ুন্ডুমুতে কাজ করেন। তিনি এই বিতর্ককে তাড়া করেছেন:
অস্ট্রেলিয়ার সব থেকে ক্ষমতাশালী রাজনীতিবিদ হলেন মারিওন স্ক্রাইমগাওর। ডেপুটি চিফ মিনিস্টার আর শিক্ষা মন্ত্রী হিসাবে, যার সাথে আরো কয়েকটা ছোট মন্ত্রণালয় আছে, পল হেন্ডারসনের এক-আসনের সংখ্যাগুরু এনটি লেবার সরকারে সব থেকে কঠিন কাজ হচ্ছে তার।
গত ৬ সপ্তাহে তিনি সংক্ষেপে তার ডিপার্টমেন্টের সিইওকে চাকুরিচ্যুত করেছেন, একটা দ্রুত আর অজনপ্রিয় নীতি ঘোষণা করেছেন আর লাগাতার আর টিকে থাকা আক্রমণের মুখোমুখি হয়েছেন মিডিয়া থেকে আর সংসদে এনটিতে তার প্রশাসন নিয়ে- বিশেষ করে যেটাকে ধারনা করা হচ্ছে তার বিশেষ শক্তি হিসাবে- দূরবর্তী এবোরিজিনাল গোষ্ঠী-ভিত্তিক শিক্ষা।
মন্ত্রী দীর্ঘভাবে উত্তর দিয়েছেন। সংক্ষেপে যা দাড়ায়:
আমি বিশ্বাস করি আঞ্চলিক অ্যাবোরিজিনাল ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে আর তার ফলে তাদের অস্তিত্ব রক্ষার নিশ্চয়তা আছে। আমি কেবলমাত্র বলছি যে পড়ানো বিকালে হওয়া উচিত।
এটা দেখতে ভালো লাগে যে একজন রাজনীতিবিদ নতুন অনলাইন মিডিয়ার মাধ্যমে একটা বিতর্কিত বিষয়ে বিতর্ক করছেন।
পরিশেষে এনআইটিভি ব্লগ কনফারেন্সের গুরুত্ব সম্পর্কে সংক্ষেপে জানাচ্ছে:
প্রথম বিশ্বের লোকেরা অনেক বিষয়ে কথা বলেছেন যা আমাদের এখানের অস্ট্রেলিয়ার জনগণ মুখোমুখী হয়েছে, সহ্য করছে, আর যুদ্ধ করে যাবে, যেমন আদিবাসী তকমা, আটক অবস্থায় মৃত্যু, আদিবাসী যুবকদের আত্মহত্যা, চুরি হয়ে যাওয়া প্রজন্ম, একীভুতকরণ আর অনেক কিছু।
অন্যান্য আদিবাসী প্রতিনিধিদের সাথে তথ্য আদান প্রদানের সময়ে, সোনার খনির সমান তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল তাদের জন্য যারা শুনতে রাজি ছিল। আমরা অবশ্যই আদিবাসী লোক হিসাবে অনেক যুদ্ধ ভাগ করে নেই, আমরা সবাই চাই একে অপরের বিজয়ের পথ ধরে শিখতে আর শিক্ষিত হতে, আর পরবতী প্রজন্মকে শিক্ষিত করার সঠিক পন্থা খুঁজতে চাই, আর আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য রক্ষা করতে চাই কোন আপোস বা মাঝামাঝি অবস্থার মধ্যে না গিযে, বরং উচ্চ মানের কাজ করে আর বাঁধা উঠিয়ে দিয়ে।
এটা দু:খজনক যে ডাব্লুআইপিসিই এর ভালো যা কিছু অর্জন এখনো পর্যন্ত বেশী মিডিয়ার দৃষ্টিতে পড়েনি।