গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ইনিসিয়েটিভ সম্প্রতি শুরু করা হয়েছে। এই উদ্যোগটির লক্ষ্য হচ্ছে কর্পোরেশনের জন্যে বাক স্বাধীনতা আর গোপনীয়তা সংক্রান্ত একটি আচরন বিধি তৈরি করা। এটি তৈরি করেছে মানবাধিকার, মিডিয়া উন্নয়ন, গবেষণা সংস্থা, ইন্টারনেট এবং যোগাযোগ কোম্পানি যেমন ইয়াহু, গুগুল আর মাইক্রোসফট এদের নিয়ে গঠিত একটি কোয়ালিশন। এর লক্ষ্য হচ্ছে এটি নিশ্চিত করা যে আইসিটি কোম্পানিগুলো তাদের ‘অন্যান্য ব্যবহারকারীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আর গোপনীয়তার অধিকারকে সম্মান করার দায়িত্ব’ স্বীকার করে।
অনলাইন সেন্সরশীপে কর্পোরেটদের অংশগ্রহণের (বিশেষ করে চীনে) প্রতিবাদ ও জবাব হিসাবে এই উদ্যোগটি শুরু করা হয়। এটি তৈরি করতে দুই বছরের বেশী সময় লেগেছে। বেশীরভাগ সময় ব্যয় হয়েছে কিছু নীতি ঠিক করতে আর উপায় বের করতে যাতে সেগুলো মানবাধিকার সংস্থা আর ব্যবসায়ী উভয়ের কাছে গ্রহনযোগ্য হয়।
গ্লোবাল ভয়েসেস এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রেবেকা ম্যাকিনন এর ওয়ার্কিং গ্রুপে অংশগ্রহন করেছেন। তিনি তার ব্লগ আরকনভারসেশনে লিখেছেন:
বেশ কয়েকজন আমার কাছে জানতে চেয়েছে ‘এটি কি আসলেই কোনভাবে প্রভাবিত করতে পারবে’ বা ‘এই জিনিষ কি লোক দেখানো কিছু যা ব্যবহার করে কোম্পানিগুলো কংগ্রেসের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তাদের পেছন থেকে সরাতে পারে?’
হিউমান রাইটস ওয়াচ, চীনের মানবাধিকার সংস্থা, হিউমান রাইটস ফার্স্ট এর মতো সংস্থা আর কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস তাদের সুনামকে নিশ্চয়ই এর পিছনে দেবে না যদি না তারা মনে করতো এটা অর্থপূর্ণ।
তারা বলেছিল যে এই উদ্যোগকে সামনের কয়েক বছরে তার মূল্য প্রমাণ করতে হবে একটা অর্থপূর্ণ আর কঠোর প্রক্রিয়া শুরু করে যার মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর নীতি মেনে চলাকে মূল্যায়ন করা যাবে।
গণতন্ত্র আর প্রযুক্তি কেন্দ্রের লেসলী হ্যারিস হচ্ছেন এই উদ্যোগের একজন প্রবক্তা। তিনি তার ব্লগ পলিসিবেটাতে লিখেছেন:
শুধুমাত্র উদ্দীপক না, এই উদ্যোগের দরকার অংশগ্রহনকারী কোম্পানী থেকে শক্ত প্রতিশ্রুতি যাতে কর্পোরেট ডিউ ডিলিজেন্স এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা রক্ষা করা হয় উচ্চ পর্যায় থেকে, বিশেষ করে সরকার থেকে চাপ সামলানোর জন্যে। এবং যেসব বাজারে তারা কাজ করে সেখানকার ভোক্তাদের কাছে যাতে বাক স্বাধীনতা আর গোপনীয়তার ব্যাপারগুলো স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করা হয়। কোম্পানিগুলো এইসব দায়িত্ব কিভাবে সম্পন্ন করছে তা একটি স্বাধীন আর বিশ্বাসযোগ্য জবাবদিহীতা মুলক ব্যবস্থার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে।
চীনা/ইংরেজী সেন্সরশীপ বিরোধী ব্লগ জিএফডাব্লিউ পোস্ট করেছে একটা সারসংক্ষেপ, অংশগ্রহনকারীদের কাছ থেকে উদ্ধৃতির একটা তালিকা আর তাদের বর্তমান তথ্য।
যে সকল সংস্থা যুক্ত ছিল শেষ পর্যন্ত তাদের সকলে এই নীতিতে সই করেনি। অ্যামনেস্টি ইন্টানেশানাল আর রিপোর্টাস সান্স ফ্রন্টিয়ার্স প্রক্রিয়া থেকে সরে গেছে। আরএসএফ বিশ্বাস করে যে এই উদ্যোগ ‘ঠিক দিকে একটা পদক্ষেপ’ কিন্তু এটা কাজে পরিণত করার ক্ষমতার অভাব রয়েছে উদ্যোক্তাদের, আর তাদের সমালোচনা এখানে দিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইউকের ইন্টারনেট দমন পাতা তাদের অবস্থান আলোচনা করেনা, কিন্তু তাদের কাছে একটা ভিডিও আছে যেখানে গ্লোবাল ভয়েসেস এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ইথান জুকারম্যান অনলাইন সেন্সরশীপ নিয়ে আলোচনা করেছে।
প্রাথমিকভাবে, মনে হচ্ছে যে কিছু প্রতিষ্ঠান মনে করে যে তারা ভালো প্রবক্তা হতে পারবে যদি তাদেরকে তাদের নীতি বিসর্জন দিতে না হয়, আর অন্যরা মনে করে যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যুক্ত থাকা আর বিতর্কের প্রক্রিয়ার শুরু করা যা থেকে লাভজনক পরিবর্তন হতে পারে।