দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে পরিবেশ ব্লগারদের সম্মিলন

গত ১১ই অক্টোবর ২০০৮ তারিখে গ্লোবাল ভয়েসেস পরিবেশ, কার্বন স্মার্ট আর আরবান স্প্রাউট দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে পরিবেশবাদী ব্লগারদের একত্র করে।

পরিবেশ নিয়ে ব্লগিং করা বহুমুখী একটি কাজ, কারন এটা অনেক বড় একটা বিষয়। এটা বোঝা গিয়েছিল টেবিলে তুলে ধরা ব্লগারদের চিন্তা থেকে। আর তাদের ব্লগ দেখলে, আপনি দেখবেন যে তারা প্রত্যেকে পরিবেশ নিয়ে আলাদা ধরনের লেখা লেখেন, আর তাদের চিন্তার ব্যাপারও ভিন্ন। কার্বন স্মার্টের পরিবেশ বান্ধব নির্মাণ আর প্রযুক্তি থেকে খাবার জায়গার পর্যালোচনা আর রিল্যাক্স উইথ ড্যাক্স ব্লগে পরিবেশ নিয়ে চলচ্চিত্র…এগুলি দেখায় যে দক্ষিন আফ্রিকার ব্লগারদের পরিবেশ সম্পর্কে প্রবল অনুরাগ আছে আর তারা বিশ্বব্যাপী ‘পরিবেশ রক্ষার অভিযান’ এর অংশ। আমাকে যে প্রশ্ন করা হয়েছিল তা হল, এটা কি করে হল যে সমগ্র আফ্রিকার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্লগাররা পরিবেশ নিয়ে লেখার ব্যাপারে সব থেকে সচেতন? এর একটা কারন ডিজিটাল ডিভাইড। অন্যান্য সাব সাহারান দেশের তুলনায় ইন্টারনেট ব্যবহারের হার দক্ষিণ আফ্রিকায় বেশী। আমরা আফ্রিকার অন্যান্য এলাকায় দক্ষিন আফ্রিকার মতো (বিশেষ করে কেপ টাউনে) এতো সংখ্যক ‘পরিবেশ বান্ধব ব্লগার’ দেখি না কারন আমি কোন সমাজ বিজ্ঞানী না হলেও বলতে পারি যে আফ্রিকাতে ইন্টারনেট প্রবেশ এর সম্ভাবনা বাড়লে আমরা আরো ব্লগার পাব যারা পরিবেশ নিয়ে লিখবে।

আমরা ব্লগিং এর ব্যাপারে সংক্ষেপে আলোচনা করেছি, বিশেষ করে আমাদের সাইটে বিজ্ঞাপন দেয়াকে গ্রহন করবো কিনা, বিশেষ করে তা আমাদের কন্ঠের সাথে আপোস না করে করা যায় কিনা। যেমন আপনি যদি একটা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কাজের সাথে একমত না হন, কিন্তু তারপরেও আপনার যখন গুগুল এ্যাড থাকবে, এদের বিজ্ঞাপণ আপনার সাইটে আসতে পারে। এটাকে কি করে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়? এটা একটা উন্মুক্ত আলোচনা ছিল, যদিও আরবান স্প্রাউটের ওয়ান্ডা পরামর্শ দিয়েছে যে আপনার সাইটে কোন বিজ্ঞাপণ আসবে তার উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ থাকবে যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপণ সার্ভিস আপনি বেছে নিন না কেন।

গ্রিনফ্লেভারের রাফেয়েলা আর একটা ব্যাপার তুলে ধরে, ‘ব্লগকে পরিবেশ সংক্রান্ত প্রতিবাদী কাজের জন্য ব্যবহার করা'। তবে অনেক কোম্পানী তাদের বিরুদ্ধে মতামত দেয়ার জন্য মামলা ঠুকে দিতে পারে এবং তা থেকে রক্ষা পাবার জন্যে করনীয় বিষয় কি হতে পারে সেটা নিয়ে আলোচনা হয়। আমি ইএফএফ.অর্গ কে রিসোর্স হিসাবে উল্লেখ করেছি, আর বার্কম্যান সেন্টারের (ইন্টারনেট ও সমাজ সংক্রান্ত গবেষণার প্রতিষ্ঠান) কাছ থেকে আইন আর অনলাইনে বাক স্বাধীনতার ব্যাপারে নির্দেশনা পাওয়া যায়।

কার্বনস্মার্টের রোরি আমাদের সবাইকে চ্যালেঞ্জ করেছে যে আমাদের আরও অবস্থার পরিবর্তন সম্পর্কে লেখা উচিত, দেখানোর জন্য যে পরিবেশ আন্দোলন আসলেই হচ্ছে। মানুষ পরিবেশের উপর তাদের প্রভাব নিয়ে চিন্তা করছে আর সত্যিই কিছু করছে সেই ব্যাপারে। এই লক্ষ্যে রোরি একটা ম্যাপ করার প্রকল্প নিয়েছে যার নাম ‘গ্রিনিং আফ্রিকা‘। জিভি এনভায়রনমেন্টে আগের এক লেখায় এই ম্যাপের ব্যাপারে বলা হয়েছে।

আরবান স্প্রাউটের গ্লেন ভাবছে একটা ম্যাপ বানানোর কথা যেখানে পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্য গুলোর তালিকা ও তাদের সম্পর্কে বিশদ তথ্য পাওয়া যাবে। সে আর ওয়ান্ডা শুণ্য থেকে এই প্রাথমিক তালিকা (ডাইরেক্টরি) তৈরি করেছে আর এটা এখন আরবান স্প্রাউট সাইটের অংশ। ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্ব কাপের জন্য আসা অনেক ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এটা একটা ভালো উৎস হতে পারে। গ্রিনস্টে.কো.জা কে বুকমার্ক করে রাখেন কারন অচিরেই এই প্রকল্প দাড়িয়ে যাবে।

আরো কত ভালো ভালো ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে এবং একমত হওয়া গেছে যে এটা এধরনের সম্ভাব্য অনেক সম্মিলনের মধ্যে প্রথম এমন একটা উদ্যোগ। পরিবেশ নিয়ে সচেতন ব্লগারদের দেখা সাক্ষাৎ, মতামত বিনিময় আর বিভিন্ন উদ্যোগের ব্যাপারে সাহায্য করতে এর বিকল্প নেই। ব্লগার যারা উপস্থিত ছিল তাদের প্রত্যেককে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। আশা করছি এটা এমন আরো অনেকে স্বাক্ষাত অচিরেই হবে। আমি কেপটাইন শহরের পরিবেশবাদী ব্লগারদের দারা উজ্জ্বীবিত আর উদ্দীপ্ত হয়ে ফিরেছি।

Environment bloggers in Capetown

উপস্থিত ব্লগারদের তালিকা এখানে দেয়া হলো (কোন বিশেষ ক্রমানুসারে না):

এই সংক্রান্ত একটি উইকি পাতাকে পাওয়া যাবে পরবর্তী স্বাক্ষাৎের জন্য সব তথ্য আর সব সময়ের মতো যদি কোন ব্লগার গ্লোবাল ভয়েসেস এর লেখকের দলে যোগদান করতে চান পরিবেশ ব্লগার হিসাবে, দয়া করে (মূল পোস্টে) মন্তব্য করেন।

কেপটাউনের ছবি ফ্লিকার সেট ‘ আই লাভ কেপটাউন’ এ দেয়া আছে। আবারো ধন্যবাদ দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশবাদী ব্লগারদের তাদের সময় আর আথিতেয়তার জন্য।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .