প্যালেস্টাইনের ফুটবল ইতিহাস

একজন ব্লগারের বক্তব্য অনুযায়ী ফিলিস্তিনিরা তাদের নিজেদের ফুটবল ইতিহাস রচনা করেছে এমন একমাত্র দল হিসাবে যার কোন দেশ নেই কিন্তু নিজস্ব স্টেডিয়াম আছে।

ফিলিস্তিনি হাইথাম সাব্বাহ উত্তেজনা, গর্ব আর খুশীতে টগবগ করে ফুটছেন লিখতে গিয়ে:

শেষাবধি ফিলিস্তিনিরা ফুটবলের মাধ্যমে তাদের জাতীয় অহঙ্কার প্রকাশের নতুন একটা পথ পেয়েছে।

ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে সাব্বাহ ব্যাখ্যা করেছেন:

এক যুগ ধরে প্যালেস্টাইনী ফুটবল দল তাদের নিজেদের মাঠের খেলা আরব দেশগুলোতে যেমন জর্দান, কাতারে খেলছে যদিও ১৯৯৮ সাল থেকে দেশটি ফিফার সদস্য। কারণটা সহজ: বহু বৎসর যাবত প্যালেস্টাইনের একটা নিজস্ব মাঠের দাবীকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে এবং ইসরাইলী আধিপত্যের কারণে দলটি বাধ্য হয়েছে বিদেশে ট্রেনিং নিতে ও খেলতে। আজও এর থেকে ব্যতিক্রম কিছু হয় নি, ইজরায়েল এখনও ফিলিস্তিনি ভূখন্ড অধিকার করে রেখেছে। তথাপি প্রতিরোধের একটা অবলম্বন হিসাবে নিজ ভূখন্ডে প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলে প্যালেস্টাইনী ফুটবল টিম ইতিহাস রচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফিলিস্তিনিরা নিজেদের মাটিতে জর্দানের মুখোমুখি হচ্ছে – এমন একটা দল নিয়ে যাদের নিজেদের খেলার মাঠ আছে কিন্তু দেশ নাই।

সাব্বাহ এর লেখা আরো পাওয়া যাবে এখানে।

ডায়ানা খেলার মাঠে ছিলেন, তিনি সেখানের দৃশ্য এভাবে লিখেছেন কাবোবফেস্টে:

এটা একটা অভূতপূর্ব দৃশ্য, প্রথম বারের মত নিজেদের দলের খেলা দেখার জন্য নতুনভাবে সংস্কারকৃত ফয়সাল হুসেইনী স্টেডিয়াম পূর্ণ হয়ে গেছিল ৮ হাজার প্যালেস্টাইনী ফুটবল সমর্থক দ্বারা।

তিনি আরো উল্লেখ করেছেন:

আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলার উপযোগী রূপে অক্টোবর থেকে স্টেডিয়ামটি সংস্কার করার কাজ চালাচ্ছিল ফিফা এবং পিএফএ । ফিফা সভাপতি জোশেফ ব্লাটার ফয়সাল হুসেইনি স্টেডিয়াম উদ্বোধন করেন যিনি দিনের শুরুতে রামাল্লাতে প্যালেস্টাইনী মহিলা ফুটবল লীগেরও শুভ সূচনা করেন। এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লাটার ঘোষনা করেন, “ফুটবল মানুষকে একত্রিত করে”। অবশ্য ব্যতিক্রম হলো আপনি গাজাতে বসবাস করলে খেলায় অংশ নিতে প্রতিবন্ধকতা আরোপ করা হবে যদি আপনারা প্যালেস্টাইন দলের সদস্যও হয়ে থাকেন অথবা আপনি শতকরা ৯০ ভাগ প্যালেস্টাইনীর একজন হন যারা এই খেলা দেখতে আসতে পারে নাই ইজরাইলের অপছন্দনীয় ভ্রমণে প্রতিবন্ধকতা আরোপের কারণে (স্টেডিয়ামটি দেয়ালের ভেতরে আল-রামে অবস্থিত এবং ফুটবল খেলা দেখার জন্য ইজরায়েলের অনুমতি-পত্র সংগ্রহ করতে হয় ফিলিস্তিনিদের)।

খেলা দেখার জন্য উত্তেজিত দর্শকদের উৎসাহ বন্ধ করতে পারে নি এতদসত্বেও। ডায়ানা লিখেছেন:

এসব সত্বেও পরিবেশ ছিল তরঙ্গায়িত, ফিলিস্তিনি গান (যার মধ্যে আমার পছন্দের কুফিয়া গানও ছিল – সমস্ত স্টেডিয়াম জুড়ে বাজছিলো) ও প্রচুর প্যালেস্টাইনী পতাকা উড়ছিল এবং একটা চমৎকার খেলা দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল আমাদের।

খেলাটির ফলাফল ছিল ড্র।

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ব্রুইজড আর্থ এই বিজয়ের একটা অংশ হতে চাইছিলেন – কিন্তু হতে পারেন নি:

আচ্ছা, এটা কৌতুকপ্রদ নয় এখন আর। প্যালেস্টাইনী ফুটবল উত্তেজনায় সংক্রমিত হয়ে গতকাল কমপক্ষে ৪ ঘন্টা অনলাইনে কাটিয়েছি স্রেফ প্যালেস্টাইনী জাতীয় দলের জার্সি খুঁজে দেখতে ও কিনতে। রবিবার রামাল্লাতে জর্দানের বিরুদ্ধে প্যালেস্টাইনের জাতীয় দলের ফলাফলের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করার দায়িত্ব হিসাবে গর্বিতভাবে জার্সি পড়ে লন্ডনে ঘুরে বেড়াতে চেয়েছিলাম (নিদেনপক্ষে বেশী ঠান্ডা পড়ার আগ পর্যন্ত)। প্রতি মুহূর্তে আপনি যে বিরক্তিকর ক্লাব ফুটবল জার্সি দেখেন তা রাজনৈতিকভাবে বাতিল করার চেষ্টা হিসাবে।

ফলাফল আসলে কিছুই না। দৃশ্যত: আমার আশা ছিল নামিবিয়া অথবা কাজাকাস্থান অথবা ক্যাসিনো সমৃদ্ধ ক্ষুদ্র দ্বীপ দেশ ম্যাকাউ (জনসংখ্যা মাত্র ৪ লাখ) এর জাতীয় দলের জার্সি সংগ্রহ, ব্যবসার জন্য।

যুক্তরাজ্য থেকে ভিউ ফ্রম নর্থ ব্রিটেন বলেছেন আধুনিককালে একটা জাতির পরিচিতির একটা বড় অবলম্বন হচ্ছে খেলাধুলা। তিনি উল্লেখ করেন:

সত্যি বলতে কি খেলাধুলার জগতেই একমাত্র প্যালেস্টাইন দাপ্তরিকভাবে অস্তিত্বশীল, অন্য সব জায়গায় ফিলিস্তিনিরা পরিচিত হয় প্যালেস্টাইনী কর্তৃপক্ষ হিসাবে, এমনকি জাতিসংঘেও।

সত্যিকারের প্যালেস্টাইনী ফুটবল দল পশ্চিম তীরে খেলছে এটা ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রতিনিধিত্বমূলক। একে পূর্ণ স্বাধীন প্যালেস্টাইনের পথে আরেকটা ধাপ এগুনো বলা যায়।

স্কাই নিউজ অন ইউটিউব থেকে তিনি এই ভিডিওটির লিংক দিয়েছেন:

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .