- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

ইয়েমেনঃ মুষলধারে বৃষ্টিঝড়ে ৪০ জন হত

বিষয়বস্তু: ইয়েমেন, তাজা খবর, দুর্যোগ, পরিবেশ

ইয়েমেনে ৪০ জনের বেশী মানুষ নিহত [1] এবং ৩০ জন নিখোঁজ হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি হাধরামাউত এ আঘাত হানলে।

মুমেন্টস ইন ওয়ার্ডস ফ্রম হাধরামাউট [2] এ লিখতে গিয়ে ওমর বারসাওয়াদ সেই ঘটনা আমাদের জানিয়েছেনঃ

হাধরামাউত এবং এর আশেপাশে ভ্রমণ এখন নিরাপদ নয় এবং তা ভয়ংকর হতে পারে। গত তিনদিন যাবত হাধরামাউত, মাহরা এবং শাবওয়াতের বেশীরভাগ জায়গায় অঝরধারায় বৃষ্টি হচ্ছে; কখনও তুমুল বৃষ্টি হলেও বেশীরভাগ সময় গুড়িগুড়ি। মোটেই সুবিধাজনক চিত্র নয়।

আরবীয় প্রথায় বৃষ্টিকে ইশ্বরের আশীর্বাদ ভেবে উৎসব করা হয়, বারসাওয়াদ ব্যাখ্যা করেছেনঃ

মানুষজন, বিশেষতঃ বেদুইনরা বৃষ্টির আগমনে উৎসবে মেতে ওঠে যেহেতু এই বৃষ্টি মানে পানির আবির্ভাব। এই শুষ্ক প্রান্তরে অধিকাংশের কাছে পানি মহামূল্যবান ও বিলাসবহুল রূপে বিবেচিত। কিন্তু যখন এই বৃষ্টি মুষলধারে ও অঝরধারায় বর্ষিত হয় তখন বহুবিধ বিপর্যয় ডেকে আনে এবং অনেকের জীবন কেড়ে নেয়।

তিনি পুনরায় যোগ করেছেনঃ

এখানের ভূ-অভ্যন্তর পানি প্রবাহ উপযোগী নয়; বন্যার জলাধারা গড়িয়ে প্রবাহিত হয়। এ পর্যন্ত অসংখ্য সেতু, বাড়ী, আবাদিত জমি বন্যায় ভেসে গেছে। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সড়ক চলাচল অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে এবং এর রধ্যে স্থলভাগের আল মুকাল্লা থেকে ওয়াদি পর্যন্ত প্রধান সড়কও অচল। ওয়াদির অনেক শহর ও গ্রাম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অথবা সড়ক ভেসে গেছে। পুর্বাভাস মারফত জানা যায় বৃষ্টি আরো কিছু দিন বহাল থাকবে সুতরাং এটা নিশ্চিত যে আরো অনেক বেশী ক্ষতি হবে। তবে আশা করা যায় হয়তো কোন মানুষ মারা যাবে না।

দুঃখজনক হলেও আশানুরূপ ঘটে নি – অনেক মানুষ ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছে। রয়টারের মতেঃ [1]

রাষ্ট্রপতি আলী আবদুল্লাহ সালেহ শনিবার বলেছেন, মুষলধার বৃষ্টিঝড় পুরো দেশটাকে অসহায়ভাবে পানির নীচে মুড়ে ফেলেছে এবং বন্যায় ৪২ জন নিহত এবং ৩১ জনের মত নিখোঁজ হয়েছে।

তিনি বলেন, দক্ষিণের প্রদেশ হাধরামাউত এবং মাহরাতে ৩০ ঘন্টার ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যায় ১৭০০ এর মত বাড়ীঘর ভাসিয়ে ধ্বংষ ও শত শত পরিবারকে ভিটে ছাড়া করেছে।

বারসাওয়াদ উক্ত অঞ্চল ভ্রমণকারীদের সতর্ক করে দিয়েছেনঃ

এই অঞ্চলে ভ্রমণকারীদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। বন্যায় ভেসে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক; যাদের বন্যার তীব্রতা সম্বন্ধে ধারণা ছিল না অথবা বেপরোয়া হয়েছিল, নিহতদের মধ্যে তারাই সর্বাধিক। এখানের স্থানীয় বৃদ্ধরা যা বলে তাই সবচেয়ে বড় উপদেশ, তারাই আসলে ভাল জানে। যদি স্থানীয়রা সামনে ভ্রমণের অথবা কোন নিদৃষ্ট একটা দিকে যেতে নিষেধ করে তবে যে কারো জন্য সেটা পালন করা নিরাপদ। বন্যায় ডুবে যাওয়া কোন সড়ক অতিক্রম করবেন না যদিও পানি শান্ত ও নিরাপদ দেখতে মনে হয়; যদি ইতোমধ্যে সড়কটি অসংখ্য মানুষ অতিক্রম করে না থাকে। কখনও উপত্যকায় বেশীক্ষন দাঁড়াবেন না, উচুঁ ভূমিতে সরে আসুন।


গ্লোবাল ভয়েস অনলাইনে
প্রেরিত একটা ইমেইলে বারসাওয়াদ লিখেছেনঃ

আল মুকাল্লাতে কোন বিদ্যুৎ অথবা লাইনের পানি নেই, ইন্টারনেটও অত্যন্ত ধীরগতিসম্পন্ন এবং বেশীরভাগ সময় বন্ধ থাকে – বুধবার থেকে গতকাল পর্যন্ত আমার কোন ইন্টারনেট সংযোগ ছিল না। শেষ পোস্টটা ওয়ার্ডে লিখে দ্রুত আমার ব্লগে কপি পেস্ট করে কয়েক মিনিটের মধ্যে সব লিংক স্থাপন করতে হয়েছে।

আজ সকালে সূর্য উজ্জ্বল কিরণ দিচ্ছে এবং ইশ্বরের ইচ্ছায় পানি হয়তো শুকিয়ে যাবে। সবচেয়ে বড় সমস্যা এখন ওয়াদি হাধারমাউতে যেখানে হাজার হাজার মানুষের বাড়ীঘর বন্যার তোড়ে ভেসে গেছে, তাদের মধ্যে আমার আত্মীয়স্বজনও রয়েছে। ভয় পাচ্ছি পুরো হিসাব নিকাশের পরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হয়তো আরো ব্যাপক দেখা যাবে এবং মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। হয়তো আপনারা জানেন ওয়াদি হাধরামাউতের বেশীরভাগ বাড়ী মাটি দিয়ে তৈরি করা হয় – ভারী বর্ষন, বন্যা এবং জমে থাকা পানিতে সেসব ঘরবাড়ী স্রেফ ধ্বসে গেছে। গ্রাম ও শহরের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় শবজীসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পন্য-সামগ্রহীর সরবরাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে (বেশীরভাগ দোকানই বন্ধ)। তবে যেহেতু রাষ্ট্রপতি এখন এখানে আছেন সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম দ্রতগতিতে সম্পন্ন হবে বলে মনে করি।

এই বিপদের সময়ে হাধরামাউতে আমাদের বন্ধুদের জন্য প্রার্থণা করছি।