জর্জিয়া, রাশিয়া, সার্বিয়া: কিছু ঐতিহাসিক তথ্যের ব্যবহার (বা অপব্যবহার)?

দক্ষিণ ওসেটিয়া সংকটের বিস্তারিত ও তাজা খবরের জন্যে গ্লোবাল ভয়েসেস বিশেষ কাভারেজ পাতা দেখুন

সার্বিয়ান ব্লগাররা ককেশাস অঞ্চলের পরিস্থিতি কাছ থেকে দেখছেন। অনেকে কসোভোর ঘটনা আর দক্ষিন ওসেটিয়ার নতুন আসা সুযোগগুলোর তুলনা আর পর্যালোচনা করেছে। কয়েকজন নিজেদের চিন্তা প্রকাশে সাবধান ছিল আর প্রধানত: রাজনীতিবিদদের চিন্তা তুলে ধরেছে। আলেক্সান্দার টি এর একটা লেখা এখানে প্রকাশিত হয়েছে, একজন সার্বিয়ান ব্লগার যে তার ব্লগে রাশিয়ার সরকারী কর্মকতাদের শেষ বিবৃতির কিছু অংশ উদ্ধৃত করেছে, যারা জর্জিয়ার সেনা অভ্যুত্থানকে কিছু ঐতিহাসিক ঘটনার সাথে যুক্ত করেছেন:

এটা কি, কোন প্রচার? পশ্চিমী?

“দক্ষিণ ওসেটিয়ায় রাশিয়ার অপারেশন অনেক আলাদা ছিল আমেরিকান আর [ন্যাটোর সার্বিয়ার বিরুদ্ধে অপারেশন ১৯৯৯] এর তুলনায়, বলেছেন [সেরগে লাভ্রোভ] রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকার [ওয়াল স্ট্রীট জার্নাল] এ প্রকাশিত একটা আর্টিকেলে। তার কথা অনুযায়ী, বোমা মারার উদ্যোক্তারা সেনা স্থাপনাতে হামলা যখন শেষ করলো, তখন তা পরিণত হয় ব্রীজ, টেলিভিশন টাওয়ার, যাত্রী ট্রেন, জনগণের জিনিষের উপর হামলায়,” যার মধ্যে আছে বেলগ্রেডে চীনা দূতাবাসের উপর হামলা।

যতদুর রাশিয়া জড়িত, “তারা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী জোর প্রয়োগ করেছে, তাদের আত্মরক্ষার অধিকার আর দক্ষিণ ওসেটিয়ার বিরোধ সংশ্লিষ্ট চুক্তির কারনে আসা দায়িত্ব থেকে,” বলেছেন লাভ্রোভ। “রাশিয়া এটা হতে দিতে পারেনা যে তার শান্তিরক্ষীরা চুপ করে দেখবে তাদের চোখের সামনে তারা ১৯৯৫ সালে বসনিয়ার শহরের [স্রেব্রেনিচ্চা] মত গণহত্যা চালায়,” বলেছেন লাভ্রোভ।

রোগোজিন বলেছেন: শাকাশভিলি (জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট)গাভ্রিলো প্রিন্সিপ না (এই যুগোস্লাভ জাতীয়তাবাদী ১৯১৪ সালে অষ্ট্রিয়ার আর্চ ডিউককে সারায়েভোতে হত্যা করার পর এর প্রতিক্রিয়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত গড়ায়)

“ন্যাটো তে রাশিয়ার দূত দিমিত্রী রোগোজিন জর্জিয়ার পরিস্থিতির সাথে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগে শক্তিশালী রাষ্ট্রের অবস্থানের তুলনা করেছেন, জোর দিয়ে যে এটা অনিবার্য যে রাশিয়া আর পশ্চিমা দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরো শীতল হবে।

“এখনের আবহাওয়া আমাকে ১৯১৪ এর ইউরোপের কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন একজন সন্ত্রাসীর কারনে শক্তিশালী দেশগুলো সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আমি আশা করি যে মিখাইল শাকাশভিলি ইতিহাসে আর একজন নতুন গাভ্রিলো প্রিন্সিপ হিসাবে উদ্ভুত হবে না,” বলেছেন রোগোজিন।

এখানে আলেক্সান্ডার টির ব্লগ থেকে কিছু মন্তব্য দেয়া হয়েছে:

ডক্টর উ বলেছেন:

এটা খুব পরিষ্কার। পশ্চিমা দেশের সাথে ঝগড়ায় রাশিয়া একটা ধারণা আর একটা চিত্র ব্যবহার করছে যা তাদের কাছে পরিষ্কার। স্রেব্রেনিচ্চার কথা মনে করিয়ে দেয়া ডাচম্যানের গালে চড়ের সামিল আর গাভ্রিলো প্রিন্সিপকে মনে করানো হয় ইংরেজরা তার ব্যাপারে কি চিন্তা করে আর বলে সেই অনুযায়ী: যে বোকা তাদেরকে দামী আর অপ্রয়োজনীয় একটা যুদ্ধে টেনে নিয়েছিল। ইংরেজদের প্রতিক্রিয়া পড়ে, এই স্মরণ করানো কার্যকর।

এই প্রবেশাধিকার থেকে সার্বিয়া অনেক কিছু শিখতে পারবে।

ব্লাকবক্স৯২:

আমি মনে করি রাশিয়া প্রমান করেছে যে তারা পশ্চিম থেকে আলাদা না যখন তাদের স্বার্থের প্রশ্ন আসে। ঠিক এই ভাবে রাশিয়া কসোভোর ব্যাপারে পশ্চিমের অবস্থানের বিপক্ষে অবস্থান নেয়।

আলেক্জান্ডার টি, এর লেখক মন্তব্যকারীদের সাথে আলোচনায় যুক্ত হন। তার একটা উত্তরে তিনি টাইমসের একটি সম্পাদকীয় আর্টিকেলের উদ্ধৃতি দিয়েছেন। দূর্ভাগ্যবশত: সে ওই আর্টিকেলের প্রকাশনার তারিখ উল্লেখ করেননি।

পশ্চিমা দেশ তাদের বৈদেশিক রাজনৈতিক গুরুত্ব পাল্টায়, টাইমসের প্রধান আর্টিকেলে তা লেখা আছে। তারা তাদের এখনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে পাল্টিয়ে নেয় নতুন শক্তিশালী রাষ্ট্র যেমন রাশিয়া আর চীনের জাতীয়তাবাদ দমন করে গণতান্ত্রিক ভাবের দিকে তাদের অগ্রযাত্রার সাথে।

পুরো সম্পাদকীয় মূলত: পশ্চিমের বৈদেশিক নীতির ব্যাখ্যা, যা ‘নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা'র গল্প। অন্যান্য জিনিষের মধ্যে পশ্চিম থেকে পূর্বে সম্পদ আর ক্ষমতার যে ভেসে আসা তা তুলে ধরা হয়েছে আর সেই ধরনের রাজনৈতিক আর অথনৈতিক স্থানান্তর যেমন প্রতিযোগীতার ধারণার প্রতিবিম্ব বেশী চিন্তিত করে বেইজিং এ গত দুই সপ্তাহ ধরে ‘নেস্ট’ স্টেডিয়ামে বিরোধী জাতি দেখার থেকে, এই আন্তর্জাতিক বিশ্লেষণ ব্যাখ্যা করেছে।

সম্পাদকীয় লেখকের মতে, চীন, রাশিয়া আর আরব দেশগুলো তেলের স্বল্প উৎপাদন মূল্য আর উচ্চ বাজার মূল্যের কারনে ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তারা রাজত্ব করে সামাজিক অযোগ্যতা, অথনৈতিক অস্থিতিশীলতা আর অতিরঞ্জিত বৈদেশিক নীতি আর নিজের উপর আস্থার কারনে।

বিশ্বের প্রধান শক্তিদের এই ধরনের অবস্থান বিশ্ব গণতন্ত্রের সংগ্রামকে বিপদ্গ্রস্ত করে আর এর ফলে একটা বিশ্ব সমাজ ব্যবস্থার সৃষ্টি হতে পারে যা শুধু পারষ্পরিক ভীতির উপর টিকে থাকবে।

এখনের মতো বিশ্বের একমাত্র বড় শক্তির নতুন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বা জন ম্যাকেইন হোক না কেন, পশ্চিমকে নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার মুখোমুখী হতে হবে, আর্টিকেলের শেষে তা বলা হয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .