আমেরিকা: এলজিটিবি ধর্মযাজক আর বিশপদের অ্যাঙ্গলিকান অন্তর্ভুক্তির জন্য ব্লগিং

মধ্য জুলাইতে, যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক ক্যান্টারবেরি ক্যাথিড্রাল এক দশকে একবার হওয়া ল্যাম্বেথ কনফারেন্সের আয়োজন করে। এটি এমন একটা সমাবেশ যেখানে প্রায় ৬৫০ জন বিশপ আর আর্চবিশপ আসেন যারা পৃথিবীব্যাপি প্রায় ৮০ মিলিয়ন অ্যাঙ্গলিকান খ্রীস্টানদের নেতা।

অন্তত সাতটি সমকামী পুরুষ ও মহিলা, উভলিংগ আর ট্রান্সজেন্ডার (এলজিবিটি) অ্যাঙ্গলিকান (বেশিরভাগ আমেরিকান) সংস্থা সমাবেশে অংশগ্রহণ করে ‘এলজিবিটি লোকদের অ্যাঙ্গলিকান কমিউনান চার্চের জীবন আর সিস্টেমে সম্পূর্ণ অন্তভুক্তি'র সমর্থণে। রক্ষনশীল বিশপরা এই প্রক্রিয়া সমর্থন করেন নি আর হুমকি দিয়েছেন যে এর ফলে চার্চকে বিভক্ত করা হবে। ইকনমিস্ট পত্রিকা অনুযায়ী, নাইজেরিয়া, উগান্ডা, কেনিয়া আর রুয়ান্ডা আরো কিছু ঐতিহ্যবাহি যাজকদের সম্প্রদায় এই মিটিং এ আসেননি প্রতিবাদ হিসেবে

সবচেয়ে বিতর্কিত ও মুক্তচিন্তার ব্যক্তিদের একজন হলো বিশপ জিন রবিনসন, একজন খোলাখুলিভাবে সমকামী ও বিবাহিত। ৬১ বছরের এই এপিস্কোপালিয়ান বিশপ আমেরিকার নিউ হ্যাম্পশায়ারে থাকেন। তাকে সভায় ঢুকতে দেয়া হয়নি কিন্তু সে ল্যাম্বেথের ঘটনা নিয়ে দ্য জিন পুল নামে একটা ভিডিও ব্লগ খোলেন যেখানে তিনি প্রায় প্রতিদিন ভিডিওতে ধারাভাষ্য দিয়েছেন।

একটি ভিডিওতে তিনি এলজিবিটি এপিস্কোপালিয়ান সমাজের সাথে কথা বলেছেন আশা আর সাহসের বাণী দিয়ে।

Gene Robinson Video

বিশপের ভিডিও পোস্টে মন্তব্যের জোয়ার এসেছে, বিপরীত মতামত থাকা সত্বেও খুবই মনকে নাড়া দেয়ার মতো।

একজন মন্তব্যকারী উনা বলেছেন:

ধন্যবাদ জিন। আমি সোজাসুজি বিশাস করি ইশ্বরের ভালোবাসা সব মানুষের জন্য, জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ ব্যাতিরেকে। আমিও প্রার্থণা করি যে আমাদের মধ্যে যারা এমন দেশে বসবাস করে যেখানে সব কিছু লুকিয়ে রাখতে হয়, তারা তোমার সাথে খোলাখুলি সত্য নিয়ে দাড়াতে পারে যে আমরা খ্রিস্টান হিসাবে নিজেদের সংস্কৃতিতে আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি। তোমার মতো, আমিও আশা করতে থাকব, যদিও ল্যাম্বাথের ফলাফল নিয়ে আমি আশাবাদী না।

ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ রোয়ান উইলিয়ামস, যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন চার্চকে একত্র রাখার, আর এলজিবিটিদের অধিকার নিয়ে কোন স্পষ্ট মন্তব্য করেননি, যদিও সবাই জানে তিনি অনেক খোলা মনের ধারণা রাখেন। বিশপ জিন রবিনসন রোয়ান উইলিয়ামসের এই ‘মধ্যবর্তী অবস্থান’ কে লক্ষ্য করেছেন তার আর এক ব্লগ ক্যান্টারবেরি টেলস ফ্রম দ্যা ফ্রিঞ্জ এর একটা লেখায়:

যে সকালে আমরা এডিনবার্গ থেকে চলে এলাম, লন্ডন টাইমসের শিরোনাম ঘোষনা করছিল একটা ঐতিহ্যবাহী ইভাঞ্জেলিকানের সাড়ায় রোয়ান উইলিয়ামসের বেশ কিছু বছর আগের কিছু চিঠির প্রকাশনার কথা। সেখানে তিনি বলেছেন যে অনেক বছরের পড়াশোনা আর প্রার্থণার পর, তিনি এই উপসংহারে পৌঁছেছেন যে বিশ্বাসী, দীর্ঘ জীবন উদ্দেশিত, একই লিংগের দুইজন মানুষের মধ্যে ভালোবাসা ধর্মীয় শাস্ত্রে নিষিদ্ধ না- আর শাস্ত্র এই নতুন বিষয়টা নিয়ে আলোচনাই করেনি। ঠিক এই কথাই আমি আর অন্যরা বরাবর বলে যাচ্ছি।

সে দৃঢ়ভাবে করে গিয়েছে যা সে বলেছিল যে করবে: তার ব্যক্তিগত ভাবনাকে দুরে সরিয়ে মধ্যবতী একটা অবস্থান নেবে ‘সমগ্র চার্চের মঙ্গলের জন্য'। এটা খবর না, বন্ধুরা! কিন্তু এটা অবশ্যই দু:খের।

ল্যাম্বেথ সভায় মুক্তচিন্তার অংশগ্রহনকারীরা আরো বেশ কিছু ব্লগ তৈরি করেছিল, যার মধ্যে ল্যাম্বেথ কনফারেন্স এলজিবিটি অ্যাঙ্গলিকান পোর্টাল, ওয়াকিং উইথ ইন্টেগ্রিটি আর ল্যাম্বেথ নিউজ ব্লগ আছে।

কনফারেন্স এর চুড়ান্ত অফিসিয়াল বার্তায়, এপিস্কোপাল লাইফ অনলাইন, ইন্টিগ্রিটি যুক্তরাষ্ট্র এর প্রেসিডেন্ট আর লস এঞ্জেলেসের একটা এলাকার ধর্ম যাজক রেভারেন্ড সুসান রাসেল এর উক্তি তুলে ধরেছে:

“অন্যথা করার অস্বাভাবিক চাপ সত্ত্বেও, ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ তার লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছেন ল্যাম্বেথ সভাকে সিদ্ধান্তের না করে প্রতিফলণের স্থান করে তুলতে।

অনেক দিনের ভবিষ্যৎবানী করা ক্যু যা ল্যাম্বেথ সভায় হওয়ার কথা ছিল আর আমেরিকান আর কানাডীয়দের ভোটের মাধ্যমে যে অ্যাঙ্গলিকান কমিউন থেকে বাদ দেয়ার চেষ্টা ছিল তা ব্যর্থ হয়েছে। এর জন্য অনেক কৃতজ্ঞ হওয়ার আছে।”

সুসান রাসেল এই আকর্ষণীয় ছবির এলবাম ও তৈরি করেছেন যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ের অনেক কর্মকান্ড দেখানো হয়েছে কমিউনিকেশন সেন্টারে, আর তার সাথে দৃশ্যের আড়ালের অনেক জীবন্ত ছবি আছে কনফারেন্সের সময়ের।

‘ইশ্বরের এপিস্কোপাল চার্চ আর সমকামী পুরুষ আর মহিলা, উভয়লিংগ আর ট্রান্সজেন্ডার গোত্রসহ যে ভালোবাসা তার বিশ্বস্ত সাক্ষী হিসাবে’ ইন্টিগ্রিটি, যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে আর তারাও সিটিজেন মিডিয়ার যথাযথ ব্যবহার করেছে দ্যা ল্যাম্বেথ উইটনেস এ। এটি ক্যান্টারবেরি ইভেন্ট নিয়ে ইনক্লুসিভ চার্চ নেটোয়ার্ক এর জোটের ব্যবস্থাপনায় একটি দৈনিক প্রকাশনা।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .