- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

ব্রাজিল: মধ্যপ্রাচ্য বন্দী বিনিময়ে আনন্দ আর অশ্রু

বিষয়বস্তু: নাগরিক মাধ্যম

আরব বংশদ্ভুত ব্রাজিলিয়ান ব্লগারেরা মধ্যপ্রাচ্যের যে কোন কিছু আগ্রহ সহকারে জানতে চায় এবং তারা ওখন আলোচনা করছেন ইজরায়েল-লেবানন বন্দী বিনিময় [1] বিষয়ে। ব্রাজিলে মধ্য প্রাচ্যের বাইরে সব থেকে বেশী আরব থাকে এটা বিবেচনা করে, এই বন্দী বিনিময়ের পক্ষে-বিপক্ষে বেশ কিছু আবেগপূর্ণ মতামত দেখা গেছে, যেমন অশ্রু বিসর্জিত হয়েছে তেমনি আনন্দধ্বণিও প্রকাশ পেয়েছে:


গ্রুভ ইজ ইন দ্যা রাহাল
(পর্তুগীজ ভাষায়) তার “আমার খুবই দু:খ লাগছে” লেখায় প্রয়োজন মনে করেছেন যে আরবদের জন্য তার অনুভুতি জানানো দরকার:

মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নিয়ে কথা বলা কঠিন। আমি যতই পড়ি না কেন, তা কখনো যথেষ্ট না। কিন্তু আমি জানি কি বলা দরকার প্যালেস্টাইনি, লেবানিজ আর সাধারণ ভাবে আরবদের কষ্ট দেখে দু:খিত হয়ে। যারা আমাকে জানে আর আরব বিশ্বের সাথে আমার গভীর সম্পর্কের কথা জানেন, তারা ভাবতে পারে যে আমার অবস্থান পক্ষপাতদূষ্ট। আমি ইজরায়েলিদের দোষ দেইনা, যারা পারষ্পরিক সমস্যার শিকার। কিন্তু এখানের যা হচ্ছে তা একটা মুল সত্য থেকে আসে: কোন শেকল তার সব থেকে দুর্বল জোড়া থেকে শক্ত না। হ্যা, আরবরা শক্তিশালী, কিন্তু এই ক্ষেত্রে তারা খারাপ অবস্থানে আছে।

দুর্ভাগ্যবশত:, উগ্র জাতীয়তাবাদ, শিয়া ধর্মীয় উগ্রতা এই ধরনের পরিস্থিতিতে তাদের অবস্থান খুঁজে পায়…


ফেলিক্স ধিম্মি
, জার্মনিতে থাকা এক ব্রাজিলীয়ান, আশা করেছিলেন যে অন্তত একজন বন্দীকে জীবন্ত ফিরত দেয়া হবে আর তিনি খুব হতাশ হয়েছেন যে শুধু কফিন এসেছে:

অসম্মানজনক শত্রুর কাছে প্রতিশ্রুতির সম্মান করা একটা বৈধ পন্থা যদি তা থেকে শান্তি আসে। আর হেজবুল্লাহর মনোভাব দেখা যায় এর বিরুদ্ধ কিছু। তাদের মনোভাব হচ্ছে ঘৃণা, ছোট করা আর অরবদের অহমকে লেলিয়ে দেয়া। একে বাড়িয়ে দেয়া মূল্যহীন গর্ব দিয়ে, গর্ব যা পাওনা না বরং নিরাপরাধদের মৃত্যুর উপর নির্ভরশীল। যেমন ছোট বাচ্চারা কুন্তার আর তার সহযোগীদের কারনে মারা গেল, যে কাজ এই দলের মূল লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যায়, আর তা হল ইজরায়েল আর তার লোকদের ধ্বংস, এই ধরনের অপরাধীদের জন্য ভদ্র নিয়ম খাটে না।

আনোয়ার আসি [2] মনে করেন (পর্তুগীজ ভাষায়) এই মুক্তি অন্য কোন বিশেষ দিনে হলে হত না, ঠিক সেই দিন যে দিন লেবানিজরা ২০০৬ এর যুদ্ধে ইজরায়েলের সাথে বিজয়ের দ্বিতীয় বার্ষিকি পালন করছে।

এই লেবানিজ যোদ্ধাদের মুক্তি হেজবুল্লার নেতৃত্বাধীন ইসলামিক রেজিস্টেন্সের জন্য একটা বড় বিজয়, যা কোন চেষ্টার ত্রুটি করেনি লেবাননে ইজরায়েলি দখলদারিত্বের ফলে সৃষ্ট জঘণ্য কাজের সমাপ্তি টানতে এবং জেলে ইহুদি বন্দীদের বিষয়টাও সমাধান করতে। হেজবুল্লাহ এই ধরনের হামলা শেষ করার কথা দিয়েছে। হেজবুল্লাহ যখন কোন কথা দেয়, তারা তা রাখে। বন্দীদের ক্ষেত্রে তাদের অকৃত্রিম কথা তারা রেখেছে।

পেড্রো ডোরিয়া [3] যাকে অনেক দিন ধরে মধ্য প্রাচ্যের খবর নিয়ে তার কাভারেজের কারনে যে কোন তথ্যের জন্য যোগাযোগ করা হয় [4], এই চুক্তির লক্ষ্য নিয়ে প্রশ্ন করেছেন, বিবেচনা করে যে এইসব অপহরণ যুদ্ধের কারন ছিল যা লেবানিজ সরকারের আত্মবিশাস শেষ করেছিল।’

জিজ্ঞেস করাতে কোন ক্ষতি নেই: লেবাননকে ঘৃণা করার মূল্য কি ছিল, যদি ইজরায়েলি সরকারকে হেজবুল্লাহর কাছে শর্তসাপেক্ষে আত্মসমর্পন করতে হয়? এই (বন্দি) বিনিময় আগে আলোচনা করলে ভালো হত, যখন সেনারা আর লেবানিজ যুদ্ধের শিকাররা জীবিত ছিল আর হেজবুল্লাহর সামনে দেখানোর মত লেবানিজ সরকারের কিছু ক্ষমতা ছিল। একটা বোকার যুদ্ধ – এই ওয়েবলগ যা অনুসরন করেছে- আরো খারাপ ফলাফল এনে দিয়েছে।

শেষ করার আগে নিচে দেখুন ব্রাজিলিয়ান শিল্পী কার্লোস লাতুফের করা একটি রাজনৈতিক কার্টুন [5] , যিনি ইজরায়েলের বিপক্ষে এবং প্যালেস্টাইনি আর লেবানিজদের সমর্থক।


ব্রাজিলের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে আরবদের সূত্র গভীরভাবে প্রথিত। ধারণা করা হয় যে ১৯ শতকের শেষ আর ২০ শতকের প্রথম দিকে প্রায় ৭০,০০০ আরব অভিবাসী (বিশেষ করে লেবানিজ, সিরিয়ান আর কিছু জর্ডান, প্যালেস্টাইন আর ইরাক থেকে) ব্রাজিলে এসেছিল, যারা সে দেশে সম্পূর্ণ বা আংশিক আরব বংশভুত এক কোটি লোকের পূর্বপুরুষ। আরব- ব্রাজিলিয়ান চেম্বার অফ কমার্সের [6] হিসাব অনুযায়ী মধ্য প্রাচ্যের বাইরে সবচেয়ে বৃহৎ আরব জনগোষ্ঠী হচ্ছে আরব ব্রাজিলিয়ানরা।