মরোক্কো: পিস কর্পস স্বেচ্ছাসেবক ব্লগারদের হালের খবর

আমেরিকার পিস কর্পসের স্বেচ্ছাসেবকদের একটি অতিথি দেশ হচ্ছে মরোক্কো। সারা দেশে আমেরিকার পিস কর্পস স্বেচ্ছাসেবকরা ইংরেজী, ও অন্যান্য উন্নয়নমূলক বিষয়ে শিক্ষা দেয়, কৃষি আর মহিলাদের প্রকল্পে সাহায্য করা ছাড়া আর আরো অনেক কিছু করে যা একজন কর্মঠ যুবক স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে মরোক্কোতে করতে পারে। আর মরোক্কান যারা তাদের আতিথেয়তার জন্য বিখ্যাত, বেশীরভাগ সময় এইসব স্বেচ্ছাসেবীদের স্বাগত জানায়। আমার অনেক মরোক্কান সহকর্মী যুবক শান্তিরক্ষী স্বেচ্ছাসেবক আর ফুলব্রাইট স্কলারদের কথা স্নেহের সাথে মনে করে।

গত মাসে গ্লোবাল ভয়েসেস মরোক্কোর শান্তিরক্ষী ব্লগারদের উপর দুই পর্বের একটি পরিক্রমায় দেখিয়েছিল যে তারা একটি প্রাণবন্ত আর কর্মঠ দল। দুই বছর কাজ নিয়ে আসা শান্তি রক্ষী হিসাবে অনেক স্বেচ্ছাসেবী চলে গেছে আর অনেকে যোগদান করেছে, যার জন্য আমি নতুন আর পুরানো সবার সাথে দেখা করেছি জানতে যে তারা এখন কি করছে।

কনি ইন মরোক্কো যার মরোক্কোয় অবস্থানের সময় প্রায় শেষ হতে চলেছে, তার অভিজ্ঞতার কথা বলছে:

লোকে জিজ্ঞাসা করে যে এই অভিজ্ঞতা আমার মধ্যে পরিবর্তন এনেছে কিনা। আমি আশা করি একটা জিনিস পাল্টাবে না আর তা হলো আমি পুনরায় ব্যবহার করা যায়না এমন জিনিষ কত কম ব্যবহার করি। এটি অবিশ্বাস্য যে কি কররে কাগজের টাওয়েল বা ন্যাপকিন না ব্যবহার করে থাকা যায়…এমন কি টয়লেট পেপার! আমার মনে পড়ে মা কি করে একটা বলের সুতা আর অন্যান্য জিনিষ বাঁচাতেন। হয়তো আমরা আমাদের ছেলেবেলার নিয়মে ফিরে গেলে অগ্রগতি করব। আমার মনে হয় আমি আগের থেকে কম বৈষয়ীক হব, একেবারে বাদ দেব না, কিন্তু কম। আর আমি জানি যে আমাকে সহ্য করার অনুশীলন চালিয়ে যেতে হবে… এখানের থেকে উল্টো!

২৭মান্থসউইদাউটবেসবল মরোক্কো ছেড়ে যাওয়ার কষ্টের কথা বলেছে (সত্যিকারই!):

আমার পক্ষে কি সম্ভব হবে বেশী বস্তুবাদী না হয়ে গ্যাঞ্জাম ছাড়া থাকা? আশা করছি তাই! তার আগে, আমি আমার কল্পনায় পরের বাড়ির জন্য মরোক্কান জিনিষ কিনে যাচ্ছি। যখন আমি কিনি তখন চিন্তা করি আমার কল্পনার বাড়িতে এগুলো কেমন লাগবে। বা অন্তত: এই বাড়িতে কেমন লাগবে… জয় বলেছিলেন যে তিউনিশিয়াতে গবেষনার জন্যে থাকাকালীন সময় তার সাথে অনেক শান্তিরক্ষী স্বেচ্ছাসেবকের পরিচয় হয়েছিল আর পরে তারা এখান থেকে কেনা জিনিষ যখন বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল তা সেখানে মানায়নি। আমি প্রায় শুন্য থেকে শুরু করবো, যাতে আমি পছন্দমত সাজাতে পারি। আর যা মানাবেনা তা চমৎকার উপহার সামগ্রী হবে!

৩২এন৫ডাব্লিউ ব্লগের করি যিনি মরোক্কোতে তার কাজ শেষ কররে ফিরে গিয়েছেন সম্প্রতি তার ব্লগে মন্তব্য করেছেন:

যখনি মানুষ জিজ্ঞাসা করে যে পিস কর্পসের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল, এখন থেকে আমি বলব যে তা এমন ছিল, কিন্তু পুরো ব্যাপারটি ইংরেজীতে না আর অনেক বেশি হাটতে হয়েছে।

জেনি ইন মরোক্কো অনেক বেশি চিন্তাশীল, আর গুরুত্ব দিয়েছেন সেইসব জিনিষের উপর যা তিনি এতদিন শিখেছেন:

পিস কর্পস স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে আমি যদি একটি জিনিষ শিখে থাকি তা হলো যে সব জায়গায় বৈপরীত্য আছে কিন্তু তা জীবনের অংশ। একবার আপনি এইসব বৈপরীত্য গ্রহণ করে নেন, আপনি জীবনে মানুষের অভিজ্ঞতা দেখার আর বোঝার সুযোগ পাবেন। পৃথিবীতে জীবন কতো বিচিত্র আর বিস্তৃত হতে পারে আর আমি কৃতজ্ঞ যে আমি সুযোগ পেয়েছি জীবনের এই সমৃদ্ধ বৈচিত্র দেখার।

পরিশেষে ডানকান গোজ টু মরোক্কো, নতুন একজন পিস কর্পস স্বেচ্ছাসেবক তার প্রথম কয়েক সপ্তাহের অভিজ্ঞতার উপর মন্তব্য করেছে:

দুই সপ্তাহ হল যে শপথ নিয়ে আমি এখানে থাকতে এসেছি। চারপাশের সবাই আমার সাথে অভ্যস্ত হচ্ছে আর সারা দিন আমাকে না দেখলে জিজ্ঞেস করে যে আমি কোথায় ছিলাম। আমি দিনের বেশ কিছু সময় শহরের কেন্দ্রে কাটাই যখন কিছু করার থাকে না। আমার ভাষার উন্নতি হচ্ছে, কিন্তু তারপরেও আমি অনেক কিছু বুঝতে পারি না, বিশেষ করে যখন আমার সাথে না বলে দুইজন নিজেদের মধ্যে কথা বলে তখন। ভাগ্যক্রমে তুনফিটেতে (আমার বাজার শহর) আমি একজন শিক্ষক পেয়েছি। আমি সেখানে সপ্তাহে এক দুইদিন পড়তে, ইমেল আর মেল চেক করতে আর ঘুরে বেড়াতে যাব। সেখানে বিবাহিত আরও দুইজন স্বেচ্ছাসেবক আছে, আর তারা আমার প্রতি উদার আর আমি তাদের পছন্দ করি যেটা সৌভাগ্যজনক যেহেতু আমি পরের বছরের অনেকটা সময় তাদের সাথে অতিবাহিত করব (আমার শান্তিরক্ষীর কাজ শেষ করতে)।

অন্যান্য গোত্রের লোকদের সাথেও আমি পরিচিত হতে চেষ্টা করছি। আমি আসলে যা করি তা হল রাস্তা দিয়ে আমি হাটতে থাকি কিছু বাড়ির কাছে না আসা পর্যন্ত। তারপর আমি হেটে সবার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করি, এই আশায় যে চা বা কিছু খাবারের জন্য আমাকে আমন্ত্রন করা হবে। নিজেকে অনেকটা চ্যারিটির সামগ্রী মনে হয় কিন্তু আমার পন্থা এখনো পুরোপুরি অসফল হয় নি। আমি লোকদের সাথে পরিচিত হচ্ছি আর অন্যান্য গোত্রের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে। আমার মনে হয় এটা গুরুত্বপূর্ণ কারন আমি যেসব গোত্রের কাছে যাচ্ছি তারা গরীব আর আমার গোত্রের (যেটা আর একটু বেশী কেন্দ্রে অবস্থিত) থেকে তাদের প্রয়োজন বেশী। একজনের সাথে দেখা হবার পরে বলেছিল, ”আমাদের সাহায্য করো, আমরা গরিব।” এটা শোনা কঠিন কারন পিস কর্পসের স্বেচ্ছাসেবার পরেও এখানে বড় কোন পরিবর্তন হয়নি। আমার মনে হয় সব থেকে কার্যকর আর গুরুত্বপূর্ণ যে জিনিষ আমি আমার গোত্রের লোকদের কাছে পৌছাতে পারি তা হলো “খাওয়ার আগে আর বাথরুমে যাওয়ার পর আপনাদের হাত ধোবেন।” কিন্তু সাহায্যের কথা বললে যে ব্যক্তি দিনে তিনবার শুধু রুটি খায় সে এমন কথা শুনতে চাইবে না।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .