কোরিয়া: নেটিজেন আর সংবাদপত্রের মধ্যে যুদ্ধ

বিষয়টি শুরু হয়েছিল কোরিয়াতে আমেরিকার গোমাংস ব্যবসার বিরুদ্ধে অভিযোগ আর ছোট ছোট প্রতিবাদ দিয়ে। কোরিয়ানরা বিচলিত ছিল আমেরিকা আর কোরিয়ার মধ্যেকার বাণিজ্য আলোচনায় অস্বচ্ছতা নিয়ে আর বিশেষ করে মূল প্রচার মাধ্যম বর্তমান সরকারকে শর্ত হীন সমর্থন দেয়ায়। মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ বেশী দিন স্থায়ী হওয়ার কথা নয়, কিন্তু তা ৪০ দিন ধরে চলছে আর প্রত্যেক রাতে আরো বেশী লোক তাদের পরিবারসহ যোগদান করছে।

অতি সম্প্রতি, প্রধান রক্ষণশীল পত্রিকাগুলো, ‘চো-জুং-দোং’ (যা কোরিয়ার সব চেয়ে বড় তিন পত্রিকার অদ্যাক্ষর) ইন্টারনেট পাঠকদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। এই নেটিজেনরা পত্রিকা গুলোর সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।

চো-জুং-দোং এর গ্রাহক না হওয়া, যেসব রেস্টুরেন্টে চো-জুং-দোং রাখা হয় সেখানে না যাওয়া, জাতীয় প্রচার মাধ্যম কেবিএস না দেখা- অন্যান্য প্রগতিশীল সংবাদপত্র পড়া, সাবওয়েতে অন্য যাত্রীদের জন্য পত্রিকা রেখে যাওয়া, যেসব কোম্পানি অন্যান্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয় তাদের প্রশংসা করা, যেসব কোম্পানি চো-জুং-দোং এ বিজ্ঞাপন দেয় তার প্রতিবাদ করা আর তাদের পণ্য না কেনা – এই অনুরোধগুলো ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। নেটিজেনরা তাদের এই প্রচারণা কি করে আরও ব্যাপকভাবে ছড়ানো যায় তার চিন্তা আলোচনা করেছে।

যদিও মূল প্রচার মাধ্যমগুলো এই প্রচারণাগুলো গুরুত্বের সাথে নেয় নি, এই প্রতিবাদ কয়েক দিনে চোশুন পত্রিকার বিজ্ঞাপনের আয় ৩০ % কমিয়ে দিয়েছে। নেটিজেনদের কার্যক্রম কিছু কোম্পানিকে চো-জুং-দোং এ দেয়া তাদের বিজ্ঞাপন বাতিল করতে অনুপ্রাণিত করেছে এমনকি কারো কারো ওয়েবসাইটে এ ব্যাপারে দু:খ প্রকাশ করা হয়েছে

조선일보와 중앙일보, 동아일보의 광고기업들이 네티즌 항의에 따라 광고 철회를 알리는 내용이다.

“…네티즌의 비판과 우려는 곧 우리 국민이 르까프를 아직도 애정이 담긴 시선으로 지켜보고 있다는 것으로 생각하고 겸허히 받아들이며, 회사영업에 다소 지장이 초래되더라고 국민정서를 고려하여 지적하신 언론매체 광고는 자제하기로 결정하였으며 이후 광고에 대해서는 신중을 기하도록 하겠습니다.” – 르까프(http://www.lecaf.co.kr/)

“금일 주요 5대 일간지에 광고가 동시에 나가지 못해 고객님들의 정서에 부응해 드리지 못했던 점을 죄송스럽게 생각하며…” – 신선설농탕(http://www.sinsunfood.co.kr/)

“신문광고로 고객님들께 심려를 끼쳐드려 죄송합니다. (중략) 고객님들의 질책대로 금일 이후 광고에는 신중을 기하겠으며…” – 농협목우촌(http://www.moguchon.co.kr/)

কিছু কোম্পানি যারা চোসুন, জুঙ্গাং আর দোং-আ সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল তারা ঘোষণা দিয়েছে যে নেটিজেনদের প্রতিবাদের কারনে তারা তা ফিরিয়ে নেবে:

“… আমরা মনে করি যে লেকাফ এর প্রতি নেটিজেনদের সমালোচনা আর চিন্তা বুঝিয়ে দেয় যে মানুষ এখনো আমাদের কথা দরদ দিয়ে ভাবে। যদিও এতে আমাদের ব্যবসায় প্রভাব পড়তে পারে, আমরা মানুষের অনুভূতির মূল্য দেই আর তাই ঠিক করেছি যে এমন প্রচার মাধ্যম যা প্রশ্নবিদ্ধ সেখানে বিজ্ঞাপন দেব না। পরবর্তীতে বিজ্ঞাপন দেয়ার ব্যাপারে আমরা আরো সাবধান হবো।” – লেকাফ

“ আমরা গ্রাহকদের অনুভূতি না বুঝে পাঁচটি দৈনিকে এক সাথে বিজ্ঞাপন দেবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি…” – শিনসান ফুড

“… পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গ্রাহকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা তৈরির জন্য আমরা ক্ষমা প্রার্থী। গ্রাহকদের সমালোচনার প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে বিজ্ঞাপন দেবার ব্যাপারে আমরা সাবধান হবো…” নোংঘিয়ুপ মোগুচোন

নেটিজেনরা কেন চো-জুং-দোং কে নিয়ে বিচলিত?

[…]국민과 함께 하지 않는 대통령과 정치인들, 그리고 언론들은 결국 심판받을 수 밖에 없는 건 당연한 이치다. 조.중.동 등 한나라당 기관지로 치부되는 언론들이 쓰레기 취급을 받고 있다. 그건 이명박정부와 한나라당의 시녀노릇을 하고 있다는 이유 때문이다. 1년전만 하더라도 조.중.동은 노무현정부의 한미FTA강행과 소고기 수입문제에 대해 검역주권을 강조하고 요구했던 논조의 기사들을 게재했으나, 이명박정부로 권력이 바뀌자, 360도 기사내용이 바뀐 것이다. 이것은 결국 자신들의 권력에 아부하는 조.중.동이라는 언론들의 기회주의성과 이중성을 적나라하게 드러낸 것이다. 언론이란 국민과 민족을 대변하는 정론직필이 아니면 이미 그 존재가치가 없는 쓰레기에 불과하며 생명이 끝난 것이다. 또한 인터넷 시대에 있어 권력의 실체는 더 이상 언론들이 아니라, 정보를 공유하여 정확하고 객관적인 진실을 알아내고 주장하고 행동하는 네티즌들이 권력이다. 따라서 언론들이 더욱 국민과 민족을 대변하는 진실보도와 공정보도를 하지 않으면 대중은 외면한다는 의미가 된다[…]

এটা ঠিক যে প্রেসিডেন্ট, রাজনীতিবিদ আর মিডিয়া যারা জনগনের সাথে নেই তাদের সমালোচনা করা যায়। মিডিয়ার মধ্যে চো-জুং-দোং যার সংবাদকে আসলে জঞ্জাল হিসেবে দেখা হয় কারন তা আদতে লি সরকার আর গ্র্যান্ড জাতীয় পাটির চাকর হিসেবে কাজ করে। এক বছর আগেও চো-জুং-দোং এই ধরনের লেখা ছাপত যে গোমাংস আমদানির বেলায় আমেরিকা আর কোরিয়ার মধ্যে এফটিএ (ফেয়ার ট্রেড এগ্রীমেন্ট) প্রয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের জীবানুমুক্ততা (কোয়ারেন্টাইন) দাবি করা উচিত। একবার লি সরকারের কাছে ক্ষমতা গেল আর তাদের দৃষ্টিভঙ্গী সম্পূর্ণ পালটিয়ে গেল। তাদের সুযোগ সন্ধানী মনোভাব আর শক্তিশালীদের কাছাকাছি হবার চেষ্টা লক্ষণীয়। মিডিয়া যদি মানুষের প্রতিনিধিত্ব না করতে আর ঠিক মতো না লিখতে পারে, তাহলে তার আর জীবন নেই, তা তখন শুধু জঞ্জাল। তা ছাড়া ইন্টারনেটের যুগে, কর্তৃপক্ষের অস্তিত্ব শুধু আর মিডিয়া না, বরং নেটিজেন যারা তথ্য শেয়ার করে, সত্য অনুসন্ধান করে আর জোর দেয়। তাই মিডিয়া যদি মানুষের প্রতিনিধিত্ব ঠিক মত না করে, আর পক্ষপাতহীন ভাবে না লেখে, মানুষ দূরে সরে যাবে।

একজন নেটিজেনের সরল একটি উক্তি জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছিল।

미래의 한국사 시험문제:2008년 시민혁명으로 폐간된 신문은? 정답: 조중동.[…]

ভবিষ্যতে কোরিয়ার ইতিহাস পরীক্ষার একটি সম্ভাব্য প্রশ্ন: কোন কোন সংবাদপত্র ২০০৮ এর গণ অভ্যুত্থানের সময় প্রকাশ হওয়া বন্ধ হয়ে যায়? উত্তর চো-জুং-দোং…

একটি বিষয় দেখার মতো হলো নেটিজেনরা কিভাবে প্রযুক্তির পূর্ণ ব্যবহার করেছেন। তারা মোমবাতির জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করে এবং কর্মী আর পুলিশের ভিতর গন্ডগোলকে ইন্টারনেটের জনপ্রিয় চ্যানেল আফ্রিকা (কোরিয়ান ইউটিউব) এ দেখায়, যা তাদের ক্ষেত্র। তাদের মোবাইল ফোন আর গ্যাজেট তাদের চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা সাথে সাথে ইন্টারনেটে প্রকাশিত হয়ে যারা অংশগ্রহণ করছে না তাদেরকে দেখানোর কাজে ব্যবহৃত হয়।

এখানে একজন নেটিজেনের অনুভূতি বর্ণনা:

새벽까지 인터넷 생방송을 지켜 보다가 저도 연일 이런 생활이 계속 되는 통에 피곤하다는 이름으로 ,,가만히 앉아서 피곤하다고..그냥 잠이 들고 말았네요.잠이 편하지 않습디다..꿈도 뒤숭숭하고..무언지 모를 압박감에 깊은 잠에 빠지지도 못하고..어젯밤 많은 분들이수건이며 쵸코파이며 따듯한 옷, 물이 필요하다고 하는데도 전 아무 것도 못하고 그냥 멍하니 화면만 바라 보다…그러다 잠 잔다가ㅗ무식한 돼지처럼 잠 자겠다고 그냥 잠이 들었네요……….. 정말 미안합니다. 미안합니다……..죄송합니다………고작 평범한 아줌마가 할 수 잇는 일들을 찾느라 이리 저리 조중동에 광고하는 회사이름 찾아 전화 돌리고…………홈페이지 찾아가 서명하고 글 쓰고..등등의 일련의 일들도 님들의 애씀 앞에선 그저 휴지보다 못한 일들이 되고 맙니다[…]

আমি ভোর পর্যন্ত ইন্টারনেটে সরাসরি প্রচার দেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ক্লান্ত হওয়ার অজুহাতে। আরামের ঘুম ছিলনা এবং কোন কারনে আমার স্বপ্ন শব্দযুক্ত ছিলনা। যদিও অনেক লোকে বলছে তাদের আরো গামছা, চকো পাই, গরম কাপড় আর পানি দরকার, আমি ঘোরের মধ্যে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে অজ্ঞানের মতো ঘুমিয়ে পড়েছি। আমি আসলেই দু:খিত্‌… একজন মধ্য বয়স্ক সাধারন মহিলা যা করতে পারে তা হলো যেসব কোম্পানি চো-জুং-দোং এ বিজ্ঞাপন দিয়েছে তাদেরকে ফোন করা… আমার মতামত তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া … আপনারা যা করেন সে তুলনায় এটা কিছুই না।

অন্য দিকে, ফেয়ার ট্রেড কমিশন ঘোষনা করেছে যে তারা একটা রেগুলেশন দেয়ার কথা পুনর্বিবেচনা করছে (শিন্মুন গোশি) যার ফলে সংবাদপত্রদের অধিকার থাকবে তাদের গ্রাহকদের সুবিধা আর উপহার দেয়ার যা এর আগে নিষিদ্ধ ছিল। বড় পত্রিকা যেমন চো-জুং-দোং যাদের টাকা আছে তারা টিকে থাকতে পারবে, আর ছোট সংবাদপত্রের টিকে থাকতে শক্ত প্রতিযোগিতা করতে হবে।
প্রতিবাদ

মনে হচ্ছে এই যুদ্ধ দীর্ঘদিন চলবে।

1 টি মন্তব্য

এই জবাবটি দিতে চাই না

আলোচনায় যোগ দিন -> আড্ডা ব্লগ

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .