জাপান: মিজুকি শিগেরুর গোপন কথা

৮৬ বছর বয়সী মিজুকু শিগেরু (水木しげる) হচ্ছেন জাপানের একজন নাম করা মাঙ্গা (কমিকস) শিল্পী যার কৃতিত্ব গুলোর মধ্যে রয়েছে গত ৪ দশকেরও বেশী সময় ধরে জাপানের বেশ কিছু নাম করা মাঙ্গা আর এনাইম (জাপানী কার্টুন) টেলিভিশন সিরিজ। তার কাজ বিশেষ করে সমাদৃত জাপানী লোক কাহিনীর জীব বা ভূত ‘ইয়োকাই‘ (妖怪) নিয়ে বিভিন্ন গল্পের জন্য, যাদের প্রতি মিজুকি শিশু অবস্থায়ই আকৃষ্ট হয়েছিলেন। তার সব থেকে জনপ্রিয় ১৯৫৯ সালের সৃষ্টি ‘গেগেগে নো কিতারো‘ নামক একটি মাঙ্গা সিরিজ যাতে কিতারো নামে কবর স্থানে এক চোখ ছাড়া জন্মানো একটি এতিম ইয়োকাই আছে, যে মানুষ আর ইয়োকাই এর মধ্যে শান্তির জন্য লড়ে। (গেগেগে কিতারোকে অনুসরণ করা পোকা আর ঘুণপোকাদের করা শব্দ)। এই গল্প টেলিভিশনের অনুষ্ঠানের জন্য বেশ কয়েক বার নেয়া হয়েছে এবং জাপানে ইয়োকাই সংক্রান্ত মাঙ্গাকে জনপ্রিয় করার কৃতিত্ব তাকেই দেয়া হয়।


ভিডিওতে গেগেগে নো কিতারো এর ২০০৭ সালের সিরিজের শুরুর অংশ


ভিডিওতে জাপানী টিভিতে মিজুকি শিগেরুর স্বাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব। পরবর্তী পর্বগুলোর জন্যে ক্লিক করুন পর্ব ২, পর্ব ৩, পর্ব ৪, পর্ব ৫

মিজুকির গেগেগে নো কিতারো সম্প্রতি ৪০ বছর পূর্তি করেছে, আর জাপানে এটি এখনো আগের মতই জনপ্রিয়। ব্লগার তা২৬ একটি লেখায় এই প্রশ্ন করেছেন, ”কেন গেগেগে নো কিতারো এতদিন ধরে জনপ্রিয়?” এই ব্লগার মাঙ্গার এই ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও দীর্ঘ জীবনের জন্য নীচের ব্যাখ্যা দিয়েছেন (জাপানী ভাষায়):

今尚進化する鬼太郎

কিতারো এখনো প্রকাশিত হচ্ছে।

日本のアニメやドラマで息の長い作品の代表格はと言えば、『サザエさん』であり、『水戸黄門』ということになりそうだが、すでにその域に達したと言ってよい作品に、水木しげる氏の『ゲゲゲの鬼太郎』がある。この『ゲゲゲの鬼太郎』の原型とも言える『墓場の鬼太郎』が貸し本として登場したのが1960年、少年マガジンに初めて掲載されたのが1965年、『ゲゲゲの鬼太郎』としてアニメ化されたのが1968年というから、アニメ化されてから数えても、すでに 40年目ということになる。

জাপানী এনাইম আর নাটকের মাধ্যমে যেগুলো সময়ের সাথে টিকে আছে তাদের মধ্যে ‘সাজায়-সান’ আর ‘মিতো কোমণ’ রয়েছে। কিন্তু একটি কাজ যা ‘গেগেগে নো কিতারো’ এর সমান স্তরে আসতে পেরেছে তা হল ‘হাকাবা কিতারো’ যাকে ‘গেগেগে নো কিতারোর’ প্রতিরূপ বলা যায়। এটি ১৯৬০ সালে একটি বই হিসেবে প্রথম প্রকাশিত হয় আর শোনেন ম্যাগাজিনে ১৯৬৫ এ প্রথম প্রকাশিত হয়। ‘গেগেগে নো কিতারো’ ১৯৬৮ সালে এনাইমে রূপান্তরিত করা হয়, তাই এই সময় থেকে গণনা করলেও এর ৪০ বছর হয়েছে।

鬼太郎がすごいのは、今まだ完全な現役であるだけでなく、『進化』していることだ。この2008年にも『ゲゲゲの鬼太郎千年呪い歌』*1として7月12日より劇場公開される予定だし、原型である『墓場の鬼太郎』*2のほうも2008年1月よりフジテレビ系の深夜アニメ枠「ノイタミナ」で放映され、13日深夜に放送された第10話の視聴率が5.8%(関東地区、ビデオリサーチ調べ)を獲得し、 07年1月放送の「のだめカンタービレ」(第2話)の5.5%を抜き、同枠の新記録となった*3。また、水木しげる氏の故郷である、鳥取県境港市では、境港駅から繁華街のアーケード通りまで『水木しげるロード』*4として多くのオブジェを配して町おこしに成功し、今や観光地としても多くの来客を迎えるようになった。

কিতারোর ব্যাপারে যা বিস্ময়কর তা হল যে এতদিন ধরে এটা যে শুধু চলছে তাই না, বরং এটি ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে। ২০০৮ সালেও ১২ই জুন থেকে কিতারো থিয়েটারে আসবে ‘গেগেগে নো কিতারো: সেনেন নোরিও উতা’ নামে (শতাব্দীর অভিশপ্ত গান) আর এর প্রতিরূপ ‘হাকাবা কিতারো’ নোয়তামিনা নামে ফুজি টেলিভিশনের রাতের একটি এনাইম স্লটে দেখানো হচ্ছে গত জানুয়ারি ২০০৮ থেকে। হাকাবা কিতারোর দশম পর্বের রেটিং ছিল ৫.৮% (কান্তো উপজেলায় ভিডিও রিসার্চ লিমিটেড এর অনুসন্ধানে), যা ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে দেখানো ‘নোদামে ক্যান্তাবিলে’ (দ্বিতীয় পর্ব) এর রেটিং ৫.৫ % কে অতিক্রম করেছে আর একই সময়ের স্লটের জন্য একটা নতুন রেকর্ড গড়েছে। তা ছাড়া আর্কেডের ধারে বিভিন্ন চিত্র কর্ম রাখা হয়েছে যাকে “মিজেকু শিগেরু সড়ক” বলা হচ্ছে। এটি সাকাইমিনাতো স্টেশন থেকে মিকুকি শিগেরুর শহর সাকাইমিনাতো শহরে গিয়েছে, যা শহরটাকে সফল ভাবে অনুপ্রাণিত করছে। এখন অনেকে পর্যটক হিসেবে এখানে আসে।


ভিডিওতে ‘গেগেগে নো কিতারো: সেনেন নোরিও উতা’ (শতাব্দীর অভিশপ্ত সঙ্গীত) এর ট্রেইলার


ভিডিওতে ২০০৭ সালে প্রচারিত ‘গেগেগে নো কিতারোর’ ১৩তম পর্ব

成功の秘密は?

সফলতার পিছনের গোপন কথা?

『妖怪物』というような特異な分野が、一時期のブームでは終わらずに、定番として半世紀の間人気を保ち、なおかつ、今尚進化している。この秘密はいったいどこにあるのだろう。一過性で終わってしまうものと、これだけ長く受け入れられるものの違い、それは何なのか。

“ইয়োকাইবুতসু” নামের এই অদ্ভুত জিনিষ যে সময়ে জনপ্রিয় হয়েছিল তা কখনো শেষ হয় নি, বরং এটি তার জনপ্রিয়তা অর্ধ শতক ধরে ধরে রেখেছে, আর এখনো তা বিবর্তিত হচ্ছে। আমি ভাবি এই সফলতার পেছনে রহস্য কি? যে সব বিষয় যা ক্ষণস্থায়ী আর যা এত দিন ধরে টিকে যায় সে সবের মধ্যে পার্থক্য কি ?

一つには、水木しげる氏の徹底ぶりがあると思う。水木氏は、幼少時代から怪異なもの、不思議なものに対する憧れが強く、子供のころは彼が『のんのんばあ』と呼ぶ不思議なおばあさんに様々な伝承や怪異な物語を聞き、境港という土地に根付く妖怪たちと共に成長する。そして、長じて戦時中には、徴兵されて南方戦線に送られ、悲惨な戦争を体験するだけでなく、自ら九死に一生を得て片腕を失って帰還する。まさに生と死の狭間である幽界を自ら彷徨った体験を持つ。そして、戦後は妖怪漫画を書く傍ら、古い文献にある妖怪伝承や、古い絵巻や絵本、そして、柳田國男氏らの民間の妖怪伝承等を積極的に塊集した。のみならず妖怪伝承を収集するため、自ら旅に出て、それは遠く海外にまで及ぶ。塊集家としても研究家としても間違いなく第一人者である。

আমার মনে হয় মিজুকি শিজেরুর মধ্যে একটা সম্পূর্ণতা আছে। ছেলেবেলা থেকে মিজুকি অদ্ভুত আর রহস্যজনক জিনিষের প্রতি আকৃষ্ট হত, আর সে যখন শিশু ছিল তখন সে বিভিন্ন ঐতিহ্যের কথা একজন ‘নোনোনবা’ নামে রহস্যময়ী বৃদ্ধার কাছ থেকে শুনেছে। এভাবে সে সাকাইমিনাতো অন্চলের ভুতদের কথা শুনে বড় হয়েছে। যুদ্ধের সময় বাধ্যতামূলকভাবে তালিকাভুক্ত করে তাকে দক্ষিনে পাঠানো হয়, যেখানে সে শুধু যুদ্ধের কষ্টই ভোগ করেনি বরং একটুর জন্য মৃত্যু থেকে বেচে একটি হাত নিয়ে ফিরেছিল। এই অভিজ্ঞতা জীবন আর মৃত্যুর মধ্যে থাকার থেকে কিছু কম না। যুদ্ধের পর ইয়োকাই মাঙ্গা লেখার সময় তিনি ইয়োকাই ঐতিহ্য আর পুরানো সাহিত্য, লেখা আর ছবি মেলানো শুরু করেন, যার সাথে ছিল ইয়োকাই পুরা কাহিনী ইয়ানাগিদা কুনিও এর কিছু উপাদান। শুধু তাই না, ইয়োকাই পুরাকাহিনির সব উপাদান সংগ্রহ করতে তিনি তার পরিবারকে ছেড়ে দিয়ে বিদেশেও গিয়েছিলেন। কোন সন্দেহ নেই যে সংগ্রহকারী বা গবেষক হিসাবে মিজুকি শিগারু একজন আগ্রগামি ব্যক্তি।

そしてその研究を元に、そのつかみ所のない怪異な存在に、形と色を与えて行く。その成果が、『妖怪事典』*5シリーズや『妖怪画談』*6シリーズとして、結実している。『妖怪画談』のあとがきで、水木氏は、『柳田國男*7のあたりのものは愛嬌もあり大いに面白いが、形がないので全部ぼくが作った』と言っている。『妖怪画談』はもちろん怪異なもの達に溢れているのだが、いつの間にか日本の原風景の持つ郷愁にいざなわれ、葛飾北斎の浮世絵に見る美しさを感じてしまう。 500年くらい後の研究者には、柳田や北斎等と同列に水木氏が扱われているのではないだろうか。

তার গবেষনার মধ্য দিয়ে মিজুকি এইসব অদ্ভুত জীবদের রঙ আর আকার দিয়েছেন যা আগে বোঝা খুব কঠিন ছিল। তার কষ্টের ফল ছিল ইয়োকাই জিতেন (ভূত/ দানবের এন্সাইক্লোপিডিয়া) আর ইয়োকাই গাদান( ভুত/ দানবের ছবির উপর আলোচনা) এর সফলতা। ইয়োকাই গাদান এর পরিশেষে মিজুকি লিখেছিলেন: ”ইয়ানাগিদা কুনিও এর সফল কাজ অনেক সম্মান পেয়েছে আর তা বেশ চিত্তাকর্ষক, কিন্তু তাতে কোন আকার নেই, তাই আমি পুরোটা তৈরি করেছি।”

‘ইয়োকাই গাদান’ অবশ্য অদ্ভুত জিনিষে ভরা, কিন্তু [পাঠক] তা জানার আগে প্রলুব্ধ হয় জাপানী ধারার প্রকৃতির বর্ণনা দেখে, যেখানে হোকুসাই এর উকিয়ই এর সম্পূন সৌন্দর্য দেখার উপলব্ধি হয়। ৫০০ বছর পরের গবেষকরা মনে হয় মিজুকির কাজ ইয়ানাগিদা আর হোকুসাই এর সমান মর্যাদা দেবে।

その土地の風景にやどりながらけして姿をあらわすことがなかった妖怪は、水木氏によって次々とその姿を我々の前に現すことになる。日本人の心の古層とも言うべきレイヤー(層)に今も死に絶えることなく、妖怪、怪異なものが住んでおり、それを眼前にした我々ははっと驚きながらも、強く魅了されてしまうのではないだろうか。この古層にある原型を掘り出したものは、商業的な成功はもちろん、地域のコミュニティーの強烈な求心力を手にするのではないかと思う。そして、その実例が、鬼太郎TV番組の高視聴率や映画の成功であったり、境港の活性化なのだろう。

বিস্তীর্ণ অন্চলে যে সব ভুত থাকতো তারা কখনো নিজেকে দেখাত না। এখন এক জনের পর আর একজন সামনে আসা শুরু করেছে মিজুকির কাজের মাধ্যমে। এখনো জাপানী লোকের মধ্যে ইতিহাসের স্তর আছে আর ইয়োকাই [ভুত/দানব] আর অদ্ভুত জিনিষ ও আছে। যদিও চোখের সামনে এরা এলে আমরা অবাক হতে পারি, মনে হতে পারে যে এদের দেখে আমরা ভীষণ ভাবে আলোড়িত হই। এদের প্রতিরুপ যা ইতিহাসের স্তর থেকে খুঁজে বের করা হয়েছে বানিজ্যিকভাবে অবশ্য সফল হয়েছে কিন্তু আমি মনে করি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠির মধ্যে এটি একত্র করার একটা বড় শক্তি। মনে হতে পারে যে জীবনে এর প্রমান হলো কিতারো টেলিভিশন অনুষ্ঠান আর চলচিত্রের সাফল্য, আর সাকাইমিনাতোর পুনর্জীবন।

জাপানী ভাষায় মিজুকি শিগারু সম্পর্কে জানতে হলে ব্লগার ইয়োশিদা আমির সংগ্রিত তথ্য দেখতে পারেন। তিনি তার বিভিন্ন লেখায় মিজুকিকে নিয়ে আসেন (সম্প্রতি লিখেছেন এখানে আর এখানে)। এই ফ্যান সাইটও দেখতে পারেন। (এই প্যারার লিন্কগুলো সব জাপানী ভাষার)

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .