- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

মিশরঃ ব্লগার ও একটিভিস্টদের নিপীড়ন

বিষয়বস্তু: মিশর, ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম, প্রতিবাদ, প্রযুক্তি, বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার, রাজনীতি

জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং বেতন বৃদ্ধি ও শ্রেয়তর জীবনের দাবীতে বিক্ষোভ করতে গিয়ে মিশরের ব্লগার, সাইবারএকটিভিস্ট এবং একটিভিস্টদের এখন চরম মূল্য গুনতে হচ্ছে। দাঙ্গাকারী, প্রতিবাদকারী ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ফলে ৬ই এপ্রিল [1]ধর্মঘটের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। আন্দোলনের বিবরণ ওয়েবের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছে যে সমস্ত একটিভিস্ট তাদের যে নিপীড়ন করা হয়েছে এবং এখনও করা হচ্ছে তার একটা চিত্র এখানে দেয়া হলো:

৬ ও ৭ ই এপ্রিলের অস্থিরতার সময় মিশরের ব্লগাররা ঘড়ির কাটা অনুসরণ করে বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করেছে কর্মজীবিদের বিক্ষোভে দেশটির টালমাটাল চিত্র, আল মহল্লা নামক একটা টেক্সটাইল মিলে হাজারের মত লোকের দাঙ্গার খবর। এই বিক্ষোভে প্রথম হতাহতের ঘটনা সেখানে ঘটেছে, কয়েকজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন, অসংখ্য আহত হয়েছে ও অনিদৃষ্ট সংখ্যক রাজনৈতিক কর্মী, আয়োজক এবং স্রেফ দর্শকদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ব্লগ পোস্ট, ইউটিউভে ভিডিও, টুইটার ফিডস, ফ্লিকার সটস, ফেসবুক মেসেজ এবং আরো যত অনলাইন মাধ্যম রয়েছে এসব ঘটনা সেখানে তারা তুলে ধরেছেন।

গ্রেফতারের ৬ সপ্তাহ পরেও অন্তরীণ থাকা সহকর্মীদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দেবার দাবী জানিয়ে এই বিক্ষোভের এখনও বয়ান চলছে। হয়রানি ও শারীরিক ভাবে নিগৃহিত এবং পরবর্তীতে পুলিশের হাত থেকে মুক্তি প্রাপ্তরা নিজেদের দুর্দশার কাহিনী বিশ্বকে জানানোর জন্য অনলাইনের শরণাপন্ন হয়েছেন।

পুরস্কার প্রাপ্ত ব্লগার ওয়ায়েল আব্বাসের তোলা মিশরীয় ফেসবুক ব্যবহারকারী নির্যাতনের শিকার আহমেদ মাহেরের পীঠের ক্ষতস্থানের আলোক চিত্র। ওয়ায়েল পোস্ট করেছেন [2]এই শিরোনামে “আপনার ফেসবুক একাউন্টের পাসওয়ার্ড বের করার সর্বাধুনিক মিশরীয় পদ্ধতি”।

أحمد ماهر هو المؤسس الحقيقي لجروب الإضراب على الفيس بوك وليست إسراء عبد الفتاح كما زعموا والسبب في وجود إسمها وحدها على الجروب الآن هو أن فيس بوك أوقفت حساب أحمد ماهر لأنه كان يرسل عدد ضخم من الرسائل يوميا ليضم أعضاء للجروب وكان هذا المجهود هو سبب إنضمام أكثر من سبعون ألف عضو للجروب فإعتبره سبامر واوقفوا حسابه بينما كان كل دور إسراء هو المساعدة في الإدارة وحذف التعليقات المسيئة فقط لكن بعض وسائل الإعلام كانت تبحث عن قصة شيقة وبالونة لنفخها ولم يكن همهم أبدا الدقة في المعلومة أو البحث عن الحقيقة والقصة السليمة مما أضر بالحركة الوطنية من اجل التغيير ككل وبمصداقية نشطاء الإنترنت خصوصا وهو أمر لا يمكن التسامح ف

ফেসবুকের ধর্মঘট গ্রুপের আসল স্থপতি আহমেদ মাহের; সবাই যাকে মনে করে সেই এসরা আব্দুলফাত্তাহ নয়। গ্রুপে এসরার নাম শুধুমাত্র দেখা যায় কারণ ফেসবুক কর্তৃপক্ষ গ্রুপে নতুন সদস্য যোগদানের জন্য অত্যধিক মেসেজ পাঠানোর কারণে মাহের এর একাউন্টটি স্থগিত করেছে। অবশ্য এই চেষ্টার কারণেই প্রায় ৭০ হাজার সদস্য এই গ্রুপে যোগ দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ তাকে একজন স্প্যামার হিসাবে চিন্থিত করে তার একাউন্ট বাতিল করেছে। এসরার ভূমিকা ছিল সাইট ব্যবস্থাপনার এবং অবমাননাকর মেইল মুছে ফেলার। প্রচার মাধ্যম সংস্থাগুলোর দরকার কেবল একটা উত্তেজনাকর ঘটনা যা বেলুনটিকে ফাটাবে, তারা সত্যতা সন্বন্ধে সজাগ ছিল না অথবা সত্য খুঁজে দেখেনি। এটা নেতিবাচকভাবে সামগ্রিক পরিবর্তনের জন্য সংগঠিত একটা জাতীয় আন্দোলনের উপরে প্রভাব ফেলে, নির্দিষ্টভাবে সাইবারএকটিভিস্টদের কৃতিত্বের উপরেও এবং এটা এমন একটা বিষয় যা আমরা ভুলতে পারি না।

মাহেরকে নিয়ে যা করা হয়েছে তার বিবরণ দিয়েছেন এলিজা যারওয়ান: [3]

আমার এক বন্ধুর কাছে শুনেছি, ৪ঠা মে ফেসবুক আন্দোলনের নায়ক বলে পরিচিত পশ্চিমা প্রচার মাধ্যমের ভাষ্যমতে ২৭ বছর বয়স্ক প্রকৌশলী আহমেদ মাহের অভিযোগ করেছেন তাকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা হেফাজতে নিপীড়ন করা হয়েছে। বিস্তারিত এখনও কুয়াশাচ্ছন্ন কিন্তু দৃশ্যত: যা বোঝা যায়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিভাগ তাকে সপ্তাহের শুরুতে বন্ধুত্বপূর্ণ কফি খেতে ডেকে পাঠিয়েছিল। বন্ধুটি জানিয়েছে, মাহের যখন কফি খেতে গেল না, নিরাপত্তা বিভাগের লোকজন মাঝরাত্রিতে তাকে ঘর থেকে তুলে নিল, নিপীড়ন করলো, এবং এই হুমকি দিয়ে ছেড়ে দিল যে সবেমাত্র কান মলেছে, পরের বার আরো নির্মম হবে। এখন সে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে বলে জানা গেছে।

আব্বাস নিম্নোক্ত ভিডিওপোস্টে দেখিয়েছেন কি পরিমাণ নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে মাহেরকে:

ভিডিওতে (আরবীতে) মাহের বলেছেন কিভাবে তার পোষাক ছিড়ে ফেলেছে পুলিশ এবং খালি হাতে পিটিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা তার পিঠের চিহ্ন দেখিয়েছেন।

ফেসবুক ব্যবহারকারীরকে নির্যাতন ও গ্রেফতারের খবর সম্বলিত একটা পত্রিকার লিংক দিয়েছেন ব্লগার হোসাম আল হামালায়া [4]

৭ই এপ্রিল থেকে বন্দী কারিমা আল বেহেইরী [5] নামে আরো একজন ব্লগার ও রাজনৈতিক কর্মীর দুর্দশার দিকে হামালায়া [6] আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে লিখেছেন:

আল-বাদিল এর সাথে দেয়া সাক্ষাৎকারে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত কারামা দলের কর্মী আহমাদ আমিন আহমাদ ঈদ বলেছেন:

কারিম আল-বেহেইরীকে মাহাল্লার স্টেট সিকউরিটি পুলিশ অফিসে ১৮ ঘন্টার বেশী সময় ধরে নির্যাতন চালানো হয়। তিনি বলেছেন তার নির্যাতন কুরান থেকে শোনা যাচ্ছিল। আমি মহাল্লার সেকেন্ড পুলিশ স্টেশনে ১৩ বছরের বেশী হবে না এমন বাচ্চাদের দেখেছি যাদের চোখ এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে রাবার বুলেটের ক্ষত ছিল। তারা জানিয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসারত থাকা অবস্থায় ধর্মঘটে অংশগ্রহণের জন্য পুলিশ তাদের সেখান থেকে ছিনিয়ে এনেছে।

হামালায়া [7]আরো জানিয়েছেন মাহাল্লাতে যারা বন্দী হয়েছে তাদের পরিবারের সাক্ষাৎকার নেবার সময় আমেরিকান ফটো জার্নালিস্ট জেমস বাক [8] এর সাথে মোহাম্মদ মারি নামে একজন অনুবাদককে বন্দী করে নির্যাতন করা হয়েছে। পরবর্তীতে বাককে মুক্তি দিয়ে দেশত্যাগের আদেশ দেয়া হয় কিন্তু সহকর্মীদের মুক্তির আর্তনাদ সত্ত্বেও মারি এখনও জেলখানায় ধুকছে । হামালায়া লিখেছেন:

মোহাম্মেদ সন্বন্ধে সর্বশেষ তথ্য আমরা জেনেছি মানবাধিকার আইনজীবির মাধ্যমে যিনি গত শনিবার বোর্গ আল-আরব কারাগার পরিদর্শন করেছেন:

আমরা আজকে বোর্গ ইল-আরব কারাগার পরিদর্শন করতে পেরেছি। যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক জেমস বাকের সংগী হিসাবে আটক অনুবাদক মোহাম্মদ সালেহ মারি একজন অপরাধী হিসাবে সেখানে বন্দী। জেমস বাক তার দেশের দূতাবাসের চাপে মাহাল্লার পুলিশের হাত থেকে মুক্তি পেলেও মোহাম্মদ সালেহ সরকার পক্ষীয় আইনজীবির প্রেরিত মুক্তির আদেশ সত্ত্বেও এখনও কারাগারে বন্দী রয়েছে। তাকে কোথায় রাখা হয়েছে সেটা না দেখে আমরা ফিরতে পারলাম না। আজকে তাকে আমরা দেখলাম। সে আমাদেরকে জানালো যে তাকে মাহাল্লার স্টেট সিকিউরিটি অফিসে নিপীড়ন করা হয়েছে, ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়ে মোহাম্মদের উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

বাক তার সহকর্মীর মুক্তির জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, এবং বিশ্বের মনোযোগ তার বন্ধুর দুর্দশার দিকে আকৃষ্ট করার জন্য একটা ক্যাম্পেইনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার ব্লগে মারীর মুক্তির জন্য একটা আনুষ্ঠানিক আবেদনপত্র স্থাপন করেছেন।