ভারত: জয়পুর বিস্ফোরণ, সন্ত্রাসবাদ আর সরকার

গত ১৩ মে পরপর (পাঁচটি) বিস্ফোরণ জয়পুর শহরকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত রিপোর্টে জানা গেছে যে ৬০ জনের বেশী লোক মারা গেছে, আর ১৫০ জন আহত হয়েছে। মাই জোন ব্লগ জয়পুর নিয়ে লিখেছেন, যেটি শহর হিসেবে শান্তিপূর্ণ ছিল, আর এই বিস্ফোরণ যে পরিমাণ আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।

অবিশ্বাস আতঙ্কে পরিণত হয়েছে যখন ১৫ মিনিটের মধ্যে (বিস্ফোরণের) সংখ্যা দুই থেকে পাঁচে বেড়ে গেল, আর সত্যি কি হয়েছে এবং তার বিশালতা কি সবাই বুঝতে পারল। প্রায় তিন শতকের জয়পুরের ইতিহাসে এই প্রথম সন্ত্রাসী হামলা হল। সেলফোনে চিন্তিত বাবা মা আর আত্মীয়রা আমাদের অবস্থান জানতে আর তখনি বাড়ি ফিরতে বলার জন্য ফোন করতে লাগল। আমরা সেই সৌভাগ্যবান কয়েকজন যাদের ফোন কাজ করেছে। ঘটনার পরপরই (অতিরিক্ত চাপে) নেটওয়ার্ক জ্যাম হয়ে গিয়েছিল। লাউন্জটি কয়েক মুহূর্তে খালি হয়ে গিয়েছিল, তরুণদের দ্বারা ভরা একটা জায়গা কয়েক মুহূর্তে ফাঁকা হয়ে গেল।

ভারতে যদিও সন্ত্রাসবাদ নতুন না আর বিভিন্ন শহর সন্ত্রাসী হামলা দেখেছে কিন্তু জয়পুরে কখনও এইভাবে হামলা হয় নি। বিস্ফোরণে শহর আর তার নাগরিকদের নিরাপত্তার অভাব আর গোয়েন্দাদের কার্যক্রমের অসারতাও প্রমাণ করে। গুজব রটেছে যে এই আক্রমণ বাইরের দেশ পরিকল্পনা করেছে। পাকিস্তানের একজন ব্লগার আক্রান্তদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন আর আশা প্রকাশ করেছেন যে ভারত সরকার তাড়াতাড়ি করে পাকিস্তানের দিকে আঙুল তুলবে না।

হা’স ব্লগ তাদের দলের সদস্যদের ব্যাপারে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছে।

আমাদের সহকর্মীরা এমন কিছু লক্ষণ দেখিয়েছিল যে আমরা যারা ডাচ অবস্থানে আছি তারা এই সবের জন্য জয়পুরকে কম নিরাপদ ভাববো। কিন্তু আমি মনে করি যে এটা আমাদের দায়িত্ব জয়পুর দলকে দেখানো যে আমরা তাদের সমর্থন করি যেহেতু তারা আমাদের দলেরই অংশ!

হিন্দুস্তানিয়াত দেখার চেষ্টা করেছেন কেন জয়পুরকে হামলার লক্ষ্য করা হল:

জয়পুর ভারতের সংস্কৃতির একটি প্রধান স্থান। এই গোলাপী শহরে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক আসে আর আগ্রার পাশাপাশি রাজস্থান ভারতের পর্যটনের স্থান হিসেবে বিশ্ব দরবারে নন্দিত। জাতিয়তাবাদী বিরোধী দলেরা মনে হয় মরিয়া হয়ে উঠেছিল যেহেতু দেশে বেশ অনেক দিন ধরে কোন গোত্রীয় ঝামেলা ছিল না।

ইন্ডিয়ান মুসলিম আগের সন্ত্রাসী হামলার সমাধানে সরকারের ব্যর্থতার কথা বলেছেন:

এই সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধে বা এই সমস্যা সমাধানে সরকারের ব্যর্থতার একটি কারন হল আগের হামলার ঠিক মত ফলোআপ না করা। একটা উদাহরণ হল: মক্কা মসজিদ বিস্ফোরণ। অন্ধ্র প্রদেশ সরকার বিচারপতি ভাসকারা রাও এর নেতৃত্বে একটা তদন্ত কমিশন তৈরি করেছিল ২০০৭ সালের জুন মাসে। যদিও ঘটনার তিন মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দেয়ার কথা ছিল ১১ মাসের বেশী হয়ে গিয়েছে এখন পর্যন্ত আর আমরা কিছু এই ব্যাপারে আর শুনি নি।

অফ স্ট্যাম্পড সরকারের উদ্যোগের অভাবের ব্যাপারে একই ধরনের মতামত প্রকাশ করেছে। সিনিকাল ইন্ডিয়ান জোর দিয়েছেন যে মানুষকে আরও বেশী সতর্ক হতে হবে ।


ডিজে ফাদেরো
জয়পুর থেকে আপডেট দিয়েছেন। ফেসবুকে একটি গ্রুপ ঘটনা যেভাবে আবর্তিত হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা করছে ।

ব্লগে যে একাত্মতা দেখানো হচ্ছে তার আর এক দিক হল যে মানুষ কিছু খারাপ উপসংহারেও পৌঁছাচ্ছে। প্রধান মিডিয়ার কিছু ম্যাসেজ বোর্ড মুসলমানদের দোষারোপ করে লেখায় ভরে গিয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .