- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

ইরাক: সাদর শহরের নৃশংসতা বন্ধ করুন

বিষয়বস্তু: ইরাক, আইন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, জাতি-বর্ণ, মানবাধিকার, যুদ্ধ এবং সংঘর্ষ

আল ঘাদ [1] তাই বলেছেন।

কয়েক সপ্তাহ আগে বসরাতে ইরাকী সেনাবাহিনী কর্তৃক শক্তিশালী আঘাত [2] আর তার উচ্চ মাত্রার বিফলতার [3] পর ইরাক জুড়ে ভেতরে ভেতরে যুদ্ধ চলছে মিডিয়ার চক্ষুর আড়ালে। কিন্তু মনে হচ্ছে পরিস্থিতি আস্তে আস্তে গরম হয়ে উঠেছে।

আল ঘাদ জনগণকে সতর্ক করে জরুরী একটা বাণী [1] দিয়েছে যে সাদর শহরের [4] নাগরিকদের উপর শীঘ্রই আরও নৃশংসতার পরিকল্পনা করা হচ্ছে:

দখলকারীরা ইজরায়েলী চালে মানুষদের কংক্রীটের দেয়ালে আটকিয়ে রাখার পন্থা অবলম্বন করবে বলে ঠিক করেছে। যখন এতে তাদের সমস্যার সমাধান হল না তারা তখন ঠিক করল সাদর শহরেসাধারণ জনগণের উপর মাস-বম্বিং, রকেট আর ভারি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে গণহত্যা চালাবে ।

বাগদাদের হাসপাতালে সৈন্যদের হামলা করার নিন্দা করেছেন ওয়াফা আল নাথহিমা [5]:

আজকে কার্খ প্রদেশের শুলা হাসপাতালে হামলা করা হয়… ইতিহাসে জনগণের হাসপাতালের উপর হামলা আমি আগে শুনিনি!!

কারা মৃতদেহ বের করবে আর আহতদের চিকিৎসা করবে? আমি আর চুপ থাকতে পারি না যখন আজকে আমার সহকর্মী সাংবাদিক ইয়াসির শাম্রি ব্যাখ্যা করলেন যে সাদর সিটি হাসপাতাল মূলত: মৃতদের হাসপাতাল যেখানে শুধু মৃতদেহ রাখা হয়।

লেডিবার্ড সাদর শহরে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের [6] গুজবের কথা বলছেন:

আমি এই কথার পিছনের সত্যটা জানি না… কিন্তু গুজব আছে… যে সদর শহরের আশেপাশের জায়গা খালি করা হচ্ছে।

আল বাদিল আল ইরাকির [7] তথ্য অনুযায়ী তাদের সাদর শহরের সোর্স খবর পাঠিয়েছে যে আক্রমণকারীরা শহরে ওপিয়েট ফেন্তানিল নন-লিথাল গ্যাস দিয়ে আক্রমণ করবে, যে গ্যাস দিয়ে ২০০২ এ মস্কো থিয়েটারে রাশিয়ানরা আক্রমণ করেছিল।

ইরাকের নতুন নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে যাই বলা যাক, তা কোন মূল্য ছাড়া আসে নি। নতুন ইরাকী সেনাবাহিনীকে অসাম্প্রদায়িক বলা যায় না। জেয়াদ একটি ভিডিও [8] দিয়েছেন যেখানে ইরাকী নিরাপত্তা বাহিনীকে ইরাকের একটা ছোট শহরে অভিযান চালাতে দেখা যায়। এটি স্মরণ করিয়ে দেয় ১৯৯১ সালে সাদ্দাম যেভাবে কঠোর ভাবে অভ্যুত্থান নিয়ন্ত্রণ করেছিল সেই কথাই। সে লিখেছে:

সিএনএন এ দেখতে পাবেন না আমেরিকার মদতপুষ্ট ইরাকী নিরাপত্তা বাহিনীর এই গণহত্যা, আরো ঠিক করে বলতে গেলে বদর/ এস২সি/ দাওয়া দল ইউনিফর্ম পরে আর ইউনিফর্ম ছাড়া…সৈন্যরা আহত বন্দীদেরকে গালি দিচ্ছে এমন কি মৃতদেহের প্রতিও একই আচরণ করছে।

অন্যদের দেখা যায় একজন আহত বন্দীকে টেনে নিয়ে যেতে, জোরে তাকে লাথি মারতে আর মৃতদেহের স্তুপের উপর ফেলার আগে গালিগালাজ করতে। এরা সেই নিরাপত্তা বাহিনী যাদেরকে আমাদের আমেরিকান বন্ধুরা বিশ্বাস করতে বলেন আর তাদেরকে আক্রমণ করলে তার নিন্দা জানাতে বলে।

একই ভিডিওর ছবি উপস্থাপন করে রায়েদ বলেছেন [9]:

ইরাকী পুলিশ, সেনাবাহিনী, অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয়ের বাহিনী আর অন্যান্য আমেরিকার মদতপুষ্ট বাহিনী এগুলো মিলিশিয়াদের সুন্দর উপাধি ছাড়া আর কিছুই না যা কোনভাবে ‘সরকারি’ ভাবে বলা হচ্ছে। যেসব সুন্নি আর শিয়া আমেরিকার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ তাদের মিলিশিয়াকে ভালো মিলিশিয়া বলা হয় সরকারি উপাধিসহ, কিন্তু বাকি সুন্নি আর শিয়া যারা বেশীর ভাগ ইরাকীকে প্রতিনিধিত্ব করে আর জবরদখলের বিরোধী তাদেরকে খারাপ মিলিশিয়া বলা হয় আর তাদেরকে সন্ত্রাসী আর চরমপন্থী বলা হয়…

আমেরিকার কংগ্রেস নাগরিকদের করের কোটি কোটি ডলার অনুমোদন করেছে এর সব জাতিগত গেরিলাদের সমর্থনের জন্য যারা সরাসরি জাতিগত হত্যাযজ্ঞের জন্য দায়ী যা ইরাকে গত ৫ বছর ধরে চলছে।

লাস্ট অফ ইরাকী [10] ব্লগের লেখকের সম্মুখ বিরোধ হয়েছিল এই ধরনের সৈন্যদের সাথে বাগদাদের একটা চেকপয়েন্টে। তাকে থামিয়ে প্রায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছিল। সে লিখেছে:

এই আতঙ্কের সময় আমার মাথার মধ্যে অনেক কিছু হচ্ছিল, এর আগে যে সব সমস্যার সম্মুখীন আমি হয়েছি আর যা যা উক্তি শুনেছি তা মনে পড়ছিল: এর ফলে আমি শান্ত হয়ে যাই। আমি আমার প্রিয় বন্ধু ওমর এর কথা চিন্তা করছিলাম যাকে ইরাকী সৈন্যরা আমার মতো অবস্থায় মেরে ফেলেছিল, সে আমার আর এক বন্ধুর সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে হারথিয়া এলাকার ইরাকী সৈন্যদের একটি চেকপোস্টে পৌঁছেছিল আর তাই সে ফোনটা একপাশে রেখেছিল যার ফলে আমার ওই বন্ধু সব শুনতে পেরেছে… আমার পরিস্থিতির সাথে এর এত মিল ছিল কিন্তু তারা তাকে ধরে নিয়ে যায় আর পরের দিন তার মৃতদেহ ময়লার মধ্যে পাওয়া যায়!!!

আমি জানি আমার কাছ থেকে একই কথা শুনতে শুনতে আপনারা বিরক্ত কিন্তু সাধারণ ইরাকীদের এমন পরিস্থিতির ভিতর দিয়ে রোজ যেতে হয় এত বিস্ফোরণ আর হত্যার পরও। এই হচ্ছে সেনা আর পুলিশ যারা আমাদেরকে বাঁচাবে!! কি মজার।

এইসব ঘটনার ফলে আমি ওয়াফা [5] যে প্রশ্ন করেছে সেই একি প্রশ্ন করছি:

এইসব অঘটন কি বিবেককে জাগ্রত করার পক্ষে যথেষ্ট না? কি স্বাধীনতা আর গণতন্ত্র আর সরকারি সংস্কার, পুন:নির্মাণ আর জাতীয় একাত্মতা? এইসব ঘটনা কি প্রধানমন্ত্রী মালিকির দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক দলদের নাড়াতে সক্ষম হবে? কোন সংবিধান সেনাবাহিনীকে অধিকার দেয় মানুষকে হত্যা আর অপমান করার আর ডাক্তারদের ভয় দেখানোর? ডেপুটি আর মন্ত্রীদের মধ্যে কি কোন বিচক্ষণ লোক আছে? ইসলামিক দলগুলোর ইসলাম কোথায় আর লিবারেল ও দেশপ্রেমী দলগুলোর গণতন্ত্র কোথায়?