২০০৮ সালের দশই মে গ্রিনউইচ মান সময় সন্ধ্যা ৬টায় চার ঘণ্টা ব্যাপী একটি অনুষ্ঠানে ২৪টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। এটি যে কারনে উল্লেখযোগ্য তা হল, প্যান্জিয়া দিবস নামের এই অনুষ্ঠান ছয়টি স্থান থেকে সাতটি ভাষায় সারা পৃথিবীতে প্রদর্শিত হবে যা ইন্টারনেট, টেলিভিশন বা মোবাইল ফোন দিয়ে দেখা যাবে। এটি আয়োজন করা হচ্ছে একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে আর তা হল একে অপরের জীবন সম্পর্কে জানা আর আমরা মানুষেরা কোন দিক থেকে এক তা বোঝা। কোন দিক থেকে আলাদা সে দিকে চিন্তা না করে বরং সম্মিলিত ভাবে শান্তির লক্ষ্যে কাজ করা।
মিশরীয় চলচিত্র নির্মাতা জেহানে নুজায়েমের ইচ্ছা অনুযায়ী এই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। টেড পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে এক লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কারের সাথে তাকে একটা ইচ্ছা পূরণের সুযোগ দেয়া হয়েছিল, যেখানে তিনি পৃথিবী পাল্টানো এমন একটি দিন এমন চাইতে পারেন যেখানে পৃথিবীর সবাই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে এক সাথে হবে। তার ২০০৬ এর পুরস্কার গ্রহণের ভাষন এখানে দেখা যাবে।
যেহেতু প্যান্জিয়া দিবস মানুষকে এক সাথে করার একটি উদ্যোগ তাই দর্শক শ্রোতাদের প্রতি এক আবেদনের জবাবে তারা এই পর্যন্ত ১০৩৭টি ব্যাক্তিগত ভিডিও আপলোড করে সমর্থন জানান প্যান্জিয়া ডে ভিডিও চ্যানেলে।
উদাহরণ হিসেবে উপরের ভিডিও তাঞ্জানিয়ার একটি চিত্রকলা বিষয়ের ছাত্রের, তার প্রতিদিনের জীবন আর তার গৃহহীন বাচ্চাদের আঁকা শেখানোর স্বপ্ন নিয়ে করা। নীচে রয়েছে জেমস স্টিফেন ব্রাউনের ভিডিও চ্যাদোর গল্প:
প্যান্জিয়া দিবসের আয়োজন বিশাল: কায়রো, কিগালি, লন্ডন, লস এঞ্জেলেস, মুম্বাই আর রিও দে জেনিরো থেকে চলচ্চিত্র, লাইভ গানের অনুষ্ঠান আর বক্তারা একসাথে মিলিত হবেন পৃথিবীকে অনুপ্রাণিত করার জন্য। একশ'র ও বেশী দেশের ২৫০০০ এরও বেশী চলচ্চিত্র থেকে এই সব চলচ্চিত্র বাছাই করা হয়েছে। এদের সব ক'টির মধ্যে কিছু মিল আছে যা আমাদেরকে অনুপ্রাণিত, পরিবর্তন করতে আর অন্যের চোখ দিয়ে জীবনকে বুঝতে সাহায্য করে। জর্ডানের রানি নূর একজন বক্তা হবেন, তার সাথে থাকবেন সংগীত শিল্পী বব গেল্ডর্ফ, সি এন এন থেকে ক্রিস্টিয়ানা আমানপুর আর ইরানি রক দল হাইপারনোভা। এসব জায়গায় মানুষ যেমন এক সাথে হবে সারা পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন দল আর সমর্থকরা এক সাথে হয়ে নাম লেখাতে পারেন জানানোর জন্যে যে আপনারাও যোগ দিচ্ছেন। আপনি একটি উন্মুক্ত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন আপনার শহরে বা নিজেই একটি সমাবেশের আয়োজন করতে পারেন।
কিন্তু প্যান্জিয়া দিবস ৪ ঘন্টার জন্য শুধু এক সাথে হওয়ার বিষয় না। আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলা শুরু করা আর পরিবর্তন আনা। এখানে অন্য সবাই শুধুমাত্র দর্শক না হয়ে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারে। পার্টনার সংস্থা নোকিয়ার সহযোগিতায় তরুণ চলচ্চিত্রকাররা গ্রাম্য এলাকায় মানুষকে, রিফিউজি ক্যাম্পে, চলচ্চিত্র স্কুলে ভিডিও সম্বলিত মোবাইল দিয়েছে যার মাধ্যমে তারা তাদের গল্প বলতে পারে। লোকে তাদের নিজেদের ভিডিও আপলোড করতে পারে একটি নোকিয়া এন৯৫ ৮ গিগাবাইট মডেলের মোবাইল ফোন জেতার জন্য। এই পার্টনারশীপের ফলে দেখা যায় একজন মিয়ানমারের শরণার্থী বাচ্চাদের হাসি ধারণ করছেন, আরেকজন আফগানিস্তান এর শরণার্থী ক্যাম্পে থাকা ইরানি পরিবার তাদের আশার কথা বলছেন, ব্যাঙ্গালোরে একজন ভারতীয় অশত্থ গাছ কাটার আর বাচ্চারা নতুন গাছ লাগাচ্ছে তার দৃশ্য ধারণ করছে। এই পাতায় আপনারা এইসব এবং অন্যান্য ভিডিও দেখতে পারেন।
তাই অনেক ভাবে অংশগ্রহণ করা যায়। এই সুযোগ হারাবেন না আর অন্যদেরকেও জানাবেন।
1 টি মন্তব্য
amader desha panir khub somossa