তাইওয়ান: অলিম্পিক গেমসে আমাদের স্বপ্ন কি?

চীন যখন ২০০৮ এর অলিম্পিক গেমস এই বলে আয়োজন করতে চায় “এক পৃথিবী, এক স্বপ্ন” তখন এই স্বপ্ন সম্পর্কে আমরা কি আশা করতে পারি?

শুমান অলিম্পিক মশালের সংস্কৃতির শুরুর কথা বলেছেন:

প্রাচীন অলিম্পিক গেমসের আগে প্রাচীন গ্রীক লোকেরা একটি মশাল জ্বালাত অলিম্পিয়ান জিউসের মন্দিরের সামনে। মশালধারী মশাল ধরে দৌড়াতো আর চিৎকার করত “যুদ্ধ থামিয়ে অলিম্পিকে যোগ দেন!” মশাল যেখানে যেত, যুদ্ধ যেখানে থামত। গ্রীসের লোক অলিম্পিক গেমসে যেত আর তারা ঘৃণা আর যুদ্ধ ভুলে যেত। এর ফলে মশাল যা মূলত: সংকেত পাঠানোর মাধ্যম ছিল তা পরে শান্তি, আলো আর বন্ধুত্বের প্রতীক হয়ে যায়।

শুমান অবশ্য বলেছেন:

এই আশীর্বাদপুষ্ট মশাল রাস্তা দিয়ে দৌড়ুচ্ছে ইঁদুরের মত প্রতিবাদকারীদের সরিয়ে রাখতে। চীনের সরকার এই মশালকে কলংকিত করেছে।

অনেক তাইওয়ানী আলোচনা করেছেন যে তাদের কি উচিত অলিম্পিক মশালের আনুষ্ঠানিকতা বাদ দেয়া যেহেতু চীন সরকারের মানবাধিকার লংঘণের অনেক নজির আছে। এ ডাব্লু বলেছেন চীন সরকারের অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠানের পেছনে কারন কি:

চীনের সমাজতান্ত্রিক পার্টি অলিম্পিক গেমস আয়োজন করে তাদের ক্ষমতায় থাকার বৈধতা জাহির করতে চায়। মানুষ যখন খেলার মাঠে সাবাসী দেবে, মানবাধিকার কর্মীরা তখন খুব সম্ভবত জেলে কষ্ট পেতে থাকবে। পশ্চিমের রাজনৈতিক নেতারা যখন চীন সরকারের প্রতি তাদের সম্মান দেখাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে, তখন চীনের সমাজতান্ত্রিক পার্টি চাইবে চীনকে সারা জীবন শাসন করতে।

ডোর এন্ড উইন্ডো ব্লগ আলোচনা করেছে কাদের অলিম্পিক মশালকে কলুষিত করার দায়িত্ব নেয়া উচিত?

সব দেশের নেতাদের দায়িত্ব নেয়া উচিত মশালকে কলুষিত করার দায়িত্ব নেয়ার।

কোথায় সে সব দেশ যারা গণতন্ত্র হিসেবে গর্ব করে?

কোথায় সে সব দেশ যারা স্বাধীন হিসেবে গর্ব করে?

কোথায় সে সব দেশ যারা বিশ্ব পুলিশ হিসেবে আছে? তারা কি পক্ষপাতগ্রস্ত?

ভালো। আমরা দেখতে পারি তাদের বাইরের সদাচারন শক্তিশালি একনায়কতন্ত্রের কাছে কিভাবে দমে যায়।

ডাক্তার৬১ এই অলিম্পিক মশাল রক্ষার ব্যাপারটিতে আশ্চর্য হয়েছেন:

এই প্রথম অলিম্পিক গেমস আয়োজনকারী একটি দেশ বিদেশে থাকা চীনাদের কাজে লাগাচ্ছেন অলিম্পিক মশালকে রক্ষা করার জন্য।

অন্য দিকে, অনেকে অবাক হচ্ছে যে কি করে যারা তিব্বতকে সমর্থন করছে তারা অলিম্পিক মশাল বয়কটের ব্যাপারটায় জড়াতে পারে। ফোরামভিজিটর বলেছেন,

তিব্বতীরা বিদেশীদের কাছ থেকে যে সমর্থন পায় তা দেখে আমি অবাক, বিশেষ করে বিদেশে থাকা তিব্বতীরা যখন বিদেশে থাকা তাইওয়ানিজদের থেকে বেশী কিছু না। আমার মনে হয় তিব্বতীদের কাছ থেকে আমাদের শেখা উচিত বন্ধুদের কি করে রক্ষা করতে হয়।

ডোর এন্ড ইউন্ডো ব্লগ বয়কটকে সমর্থন করেছে:

দিনের পর দিন মশাল মিছিল দেখে আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলেছি। চীন সরকার যখন তিব্বতকে দমন করছিল, আমরা তখন অলিম্পিক মশাল নিয়ে একটাও কথা শুনি নি। সিঙ্গাপুর তো চীন সরকারের কাজকে সমর্থন ও করছিল। হায়!

তবে ন্যায় বিচারকে চাপিয়ে রাখা যায় না। মানবাধিকারের সমর্থনে লোক যখন এগিয়ে এসেছে অনেক নেতা তখন বলেছেন যে তারা অলিম্পিকের উদ্বোধনীতে যাবেন না। আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে না জানালে কোন আওয়াজ নেই।

মোবোবেইজিং২০০৮ মনে করেন তাইওয়ানের উচিত বয়কটে যোগদান করা:

চীনের সামরিক বাহিনী তাইওয়ানকে ভয় দেখিয়েছে। এই মুহূর্তটি কাজে লাগিয়ে আমাদের উচিত সীমান্ত ছড়ানো বয়কটে অংশগ্রহণ করা, আর চীন সরকারকে বলা উচিত ডান হাতে অলিম্পিক মশাল ধরে বাম হাতে মিসাইল না ধরতে। চীন সরকারের কথা দেয়া উচিত যে তারা তাইওয়ান সমস্যা সশস্ত্র উপায়ে সমাধান করতে চাইবে না।

চীনের জন্য যখন বয়কটটি একটা চিন্তার ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়, তখন তারা লোককে বলেছে খেলা আর রাজনীতিকে না মেলাতে। কিন্তু এই অনুরোধের মূল্য নেই।

জন্নিও বলেছেন:

আগের কিছু অলিম্পিক গেমসে চীন অংশগ্রহন করে নি রাজনৈতিক কারনে, কিন্তু এখন তারা আমাদের বলছে রাজনীতি আর খেলা না মেলাতে। এই দ্বিমুখী নীতি বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে।

নো জাস্টিস ব্লগ তর্ক করেছে:

রাজনীতি কি রাজনীতি? তাইওয়ান যখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাতে যোগদান করতে চায় যেটা রাজনৈতিক সংস্থা না, তখন তারা আমাদের আঁটকায় কেন?

২০০৮ বেইজিং অলিম্পিক বয়কট শুধু একটা রাজনৈতিক ব্যাপার না। সারা পৃথিবীর লোক একে অপরের সাথে কি স্বপ্ন ভাগ করতে চায় সেটাও এখানে ব্যাপার।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .