তিউনিশিয়ার ব্লগ স্টুপিয়ুর !! উন নুভু ডিপার্ট !! (স্টুপর !! একটা নতুন আরম্ভ!!) ইয়েমেন টাইমসের একটি রিপোর্টের উপর তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এই রিপোর্টে ৮ বছরের একটা মেয়ে ৩০ বছরের একটা লোকের কাছ থেকে তালাকের আবেদন করেছে যার সাথে তার বাবা তাকে জোর করে বিয়ে দিয়েছিল বলে সে দাবি করে।
ইয়েমেন টাইমসের সাংবাদিক হামেদ থাবেত ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন:
এপ্রিল ২, বুধবার নজূদ মুহম্মদ নাসের নিজে আদালতে এসেছিল তার বাবা মুহম্মদ নাসেরের বিরুদ্ধে তার মামলা লড়ার জন্য উকিল খুঁজতে যে তাকে দুই মাস আগে ফায়েজ আলি থামের নামে তার থেকে ২২ বছরের বড় একজনের সাথে জোর করে বিয়ে দিয়েছে। বাচ্চাটি তালাকের আবেদন ও করেছে শারীরিক আর যৌন নিপীড়নের কারনে।
ইয়েমেনী আইন অনুযায়ী নজূদ আদালতে যেতে পারে না কারন সে নাবালিকা। তার পরেও বিচারক মুহম্মদ আল- কাথি তার অভিযোগ শুনে বাবা আর স্বামীকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন।
স্টুপিয়ুর !! উন নুভু ডিপার্ট !! লিখেছেন:
আমরা যখন ৮ বছরের ছিলাম তখন আমরা ক্যাপ্টেন মাজেদ, গোল্ডেরাক আর তাকায়া তদোরকি দেখতাম (এগুলো সব মরোক্কো/ উত্তর আফ্রিকার টেলিভিশনে দেখানো কার্টুনের চরিত্র যা বেশ কিছু বছর আগে দেখানো হত)। আমরা এই বয়সে বল, লুকোচুরি আর মার্বেল খেলেছি। আমাদের মেয়েরা পুতুল দিয়ে খেলেছে বা শিক্ষক বা নার্স হওয়ার অভিনয় করেছে।
এখন ৮ বছর বয়সে তাদের আদালতে আসতে হয় তাদের উপর জোর করে চাপিয়ে দেয়া স্বামী থেকে তালাক চাইতে।
নজূদ মুহম্মদ নাসের একটা কম বয়সী মেয়ে যে সানার আদালতে হাজির হয়েছিল এবং বিচারকের সাহায্য চেয়েছিল। সেখানে সে তার বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল তাকে একজন যৌন নিপীড়নকারী লোকের সাথে বিয়ে দেবার জন্য।
“প্রত্যেক বার আমি বাইরে খেলা করতে চেয়েছি, সে আমাকে মেরে শোয়ার ঘরে যেতে বাধ্য করত।” কত দূর পর্যন্ত এই সব মানুষ নামের কলঙ্ক গুলো যাবে?
একবিংশ শতকে আমরা কি করে এই ধরনের কথা শুনতে পারি? আর তারপর প্রশ্ন করি যে কেন আরবদের বদনাম! আমরা এখনও জিজ্ঞাসা করি কেন লোকে আমাদেরকে বর্বর সন্ত্রাসী মনে করে।
আর আমাকে এটা বলার চেষ্টা করবেন না যে এটা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা! এমন প্রায়শ:ই ঘটে কিন্তু বলা হয় না। এটি শুধুমাত্র বাচ্চা না বড় মেয়ে আর মহিলাদের সাথেও ঘটে।
তার লেখাটার নাম “এই আরবরা যারা এমন না” অনেক ধরনের পাঠকদের মন্তব্য টেনেছে যেমন সাধারণ “এটি বিরক্তিকর” থেকে এই ছোট মেয়েটির সাহসের প্রশংসা করে আর এই আশা করা যে এমন আর কোথাও হবে না:
তারা বাচ্চা মেয়েটির নিষ্পাপ ভাব কেড়ে নিয়েছে! আর বিচারকের সামনে একা যাওয়ার জন্য কি সাহস!! এই ধরনের অমানবিক কাজ বন্ধ করা আর শাস্তি দেয়া উচিত। আমি আশা করি আমরা এদের মতো কখনো হব না!
আর একটি মন্তব্য মনে করিয়ে দেয় যে পেডোফিলিয়া কোন জাতিগত বিদ্বেষের ব্যাপার না বরং রাষ্ট্রের দায়িত্ব:
আরবরা অন্য সবার মতো মানুষ! পেডোফাইলদের (শিশু যৌন নির্যাতনকারী) যে কোন জায়গায় পাওয়া যায়, আর এটা ঘৃণার বিষয়। এটা জাতিগত বিদ্বেষের ব্যাপার না বরং কিছু দেশ দায়িত্ব নেয় না আইনের মাধ্যমে বিয়ের একটা বয়স নির্ধারণ আর মতামত নেয়া ব্যাপারটি ঠিক করার।
এই উক্তির উত্তরে আর একজন লিখেছেন:
ভালো বলেছেন মাদ জেরবা, পশ্চিমিরা ৮ বছরের মেয়েকে বিয়ে করে না কারন আইন তাদের বাধা দেয়, তবে তা তাদেরকে ধর্ষণে বাধা দেয় না…
একজন আবেগী ব্লগার বলেছেন:
কোরিয়েরা দেল্লা সেরা (একটি জনপ্রিয় ইটালীয় পত্রিকা) তে আমি মেয়েটির কথা প্রথম পড়লাম। বিশ্বাস করেন আমার চোখে পানি এসে গিয়েছিল আর ৫ মিনিট আমি কোন কথা বলতে পারি নি। ইয়েমেনের মতো দেশকে তিরস্কার করা উচিত: ছোট ছোট বাচ্চাদের ধর্ষণ করা এক ধরনের সন্ত্রাস আর তারা এটা সহ্য করছে। আমার জন্য এটা নির্যাতনের থেকেও খারাপ… আমি সত্যি সত্যি হয়রান…এটার জন্য … আমার মধ্যে অনেক ঘৃণা জমেছে!
তার ভাবের পুনরাবৃত্তি করে আর একজন লিখেছেন:
গর্ব করার মতো কিছু না … তাদের সোনালি দিন ( বা ঘুমাবার দিন) অবশ্যই অতীত হয়ে গেছে। আর জেগে ওঠা নিকটে হবে না…
শেষে একজন ব্লগার ইয়েমেনে সমাজতন্ত্রের দিনের কথা বলেছেন:
আর এটা ভাবা যে এডেনে ১৯৭২ সালে এই দেশ সমাজতন্ত্রের জন্য চেষ্টা করেছে, যেখানে মেয়েরা তাদের ছেলে বন্ধুদের সাথে হাই স্কুলে দ্বিতীয় বার চিন্তা না করে গেছে… এই গল্প আমাকে এত দু:খিত করেছে যে আমার ফেটে পড়তে ইচ্ছা করছে।