হিজাব বা মেয়েদের পর্দা নিয়ে অনেক কিছুই বলা হয়েছে। হয়তো বা বেশী, কারন এটি নিয়ে কথা বলা শুরু করলেই দেখবেন মুসলিম হোক বা না হোক সবাই এই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ। পশ্চিমে হিজাব বলতে লোকে শুধু মাত্র মাথার কাপড়কে বোঝে। কিন্তু এর সঠিক ব্যাখ্যা হচ্ছে ইসলাম ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী ছেলে বা মেয়ের কোন ধরনের পোশাক যেখানে মেয়েদের জন্য মাথা ঢাকার ব্যাপারটিও আছে – যদিও এটি সেটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়।
মরোক্কোতে হিজাব অবশ্যই পছন্দের ব্যাপার । তরুণ, বৃদ্ধ সবাই মাথায় স্কার্ফ পরে আর বড় শহরে এটা দেখা আর না দেখা দুটোই সমান। যদিও গ্রাম অন্চলে এটি বেশী দেখা যায় কিন্তু সব মহিলার স্বাধীনতা আছে এটা পরা না পরার সিদ্ধান্ত নেয়ার। এভরিথিং মরোক্কান মরোক্কোর পোশাকের বর্ণনা দিয়েছে:
পর্দা করা মরোক্কোতে আইন না, পছন্দ। কোন মহিলা তার স্বামীর প্রতি আনুগত্যে তা পরতে পারে, কিন্তু অনেকে এটি ইসলামের নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পরে । রাস্তায় পর্দা করা মহিলা তার পর্দা না করা বোন আর বন্ধুর সাথে হাটে। একই পরিবারের মহিলারা পর্দা করতে বা না করতে পারে। বয়স্ক মহিলারা এখনও শুধু চোখ বের হওয়া পর্দা করেন। আমি আফগান মহিলাদের মত বোরখাও মাঝে মাঝে দেখেছি ।
কোন সন্দেহ নেই যে হিজাব পরার সিদ্ধান্ত কিছুটা প্রথা আর সামাজিক নিয়মের কারনে হয়ে থাকে, কিন্তু তাও এতো শক্তিশালী না যে মহিলাদের পছন্দের পথে বাধা হবে। এটা অনেকটা ওই সময়ের মতো যখন পশ্চিমের একজন মহিলা টুপি, কোট আর গ্লাভ্স না নিয়ে বের হতো না। আমার মনে আছে যখন আমি নুর্নবার্গে ছিলাম তখন দেখদাম একজন মহিলা প্যান্ট বা শর্টস পরে শহরে যেত না। ঠিকভাবে পোশাক পরা না থাকলে দোকানের বিক্রেতা আপনাকে হয়তো ঠিকমত সেবা দেবে না। সেরকমই বেশীর ভাগ মরোক্কান মহিলা জেললাবা আর মাথায় স্কার্ফ ছাড়া বাইরে যাবে না।
আর একটা ভালো লেখা আছে ওয়াশিংটনপোস্ট.কম এ। পামেলা উইনডোর মরোক্কতে হিজাব নিয়ে তার অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন:
স্কার্ফগুলো যদিও রঙিন কাপড় আর পিছনে সুন্দর ক্লিপ দিয়ে তৈরি আমার কাছে অদ্ভুত লেগেছে হিজাব আর অন্যান্য কাপড়ের মধ্যেকার বিভাজন। যদিও কিছু মহিলা এটা তাদের জেললাবা আর অন্যেরা তাদের আধুনিক স্কার্ট দিয়ে পরে কিন্তু অনেকেই হিজাবের সাথে ফিগার বোঝা যায় এমন নীল বা কালো জিন্স, ঝকমকে বেল্ট, আধুনিক সেক্সি টপস আর ডিজাইনার সানগ্লাস । একই ভাবে চোখে পড়ার মত ম্যাগাজিনের মত মেকআপ, গাঢ় লিপস্টিক আর কাজল ।
’এডভাইস ফর গ্রান্ডমা’ (পিতামহীর জন্যে উপদেশ) লেখায় ট্রাভেলিং মামা এই দিকটাই মজা করে লিখেছেন:
’শালিন’ জামার অনেক বিস্তৃত বর্ণনা আছে কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম যা বেশীরভাগ মহিলা মানে তা হলো নিতম্ব যেন ঢাকা থাকে। বেশিরভাগ স্থানীয় মহিলা জেললাবা ব্যবহার করে এই জন্য কিন্তু উপরের ছবির রাস্তা পার হওয়া মহিলার মত অনেকেই লম্বা স্কার্ট বা জ্যাকেট পরে । আপনি এটাও চেষ্টা করবেন নিচু গলার, হাত কাটা কিছু না পরতে ।
হিজাবের ব্যাপারটা বিদেশীদের মধ্যে এত জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে যে ফেজ এর কাফেতে এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে , যা ভিউ ফ্রম ফেজ জানিয়েছে। সুবুল আসসালাম সেন্টারের সৌজন্যে ‘দ্য রোল অফ হিজাব’ (হিজাবের ভূমিকা) শিরোনামে এই আলোচনা আগামী ৭ই মার্চ কাফে ক্লকে অনুষ্ঠিত হবে।
হিজাব নিয়ে আরও জানতে আব্দুররহমান ওয়ারসামের সাম্প্রতিক লেখা ”সোমালিয়া: হিজাব পরিহিত ব্লগার কি আমেরিকায় সম্মানজনক কাজ পেতে পারে?” পড়ে দেখতে পারেন ।