হিহিহি… মধ্য প্রাচ্যে প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়েছে আর সাম্প্রতিক ব্লগের লেখা গুলোয় আসছে এই খবর। সাধারণত: অতিরিক্ত গরমের জন্য প্রসিদ্ধ মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অন্চলের ব্লগাররা এই শৈত্য প্রবাহের ব্যাপারে কি বলেছেন তার একটা ধারণা দেয়া হল নীচে।
কাতার:
আমরা প্রথমে থামব কাতারে, যেখানে মারজোরি ইন কাতার ব্লগ বর্ণনা করছে [1] যে কি রকম ঠাণ্ডা অনুভূত হতে পারে এই দেশে যেখানে ঘর গরম করার ব্যবস্থা অভ্যাস বশত:ই নেই। এই ব্লগ লিখছে:
যে দেশে কোন হিটার নেই সেখানের জন্য ৭ ডিগ্রি অনেক ঠান্ডা। এখন আমি কম্বলের তলায় আমার বিড়াল নিয়ে বসে আছি। আমি অন্তত রিয়াদে নেই যেখানে রাতে জমে যাবার মতো তাপমাত্রা হচ্ছে, বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাহাড়ী এলাকায় যেখানে বরফ পড়ছে।
ড্যান [2] ও নয় মাস শুকনো আবহাওয়ার পর এই প্রথম বৃষ্টি দেখছেন:
“দোহা, এই অদ্ভুত রকমের মরু শহর, বৃষ্টি পানিতে ধুয়ে গেছে। ৯ মাস কাতারে শুকনো আবহাওয়ার পর মুখে বৃষ্টির বিন্দু পড়া অনুভব করা বেশ আরামদায়ক। শেষ বৃষ্টি এখানে আমার মনে পড়ে এপ্রিলে। এটা ভালো যে এতোদিন আগে হয়েছে – আমি বৃষ্টির সময় দোহার পাগলামি ভুলে গেছি। গতকালই আমি ৫টি গাড়ি দুর্ঘটনা দেখেছি ( সাধারণত: ১ টা হয়…)।
দোহা বৃষ্টির জন্য না। রাস্তা ডুবে যায়, গাড়ি চালকরা ক্ষেপে যায়, বাড়ি থেকে পানি লিক করে আর ইঁদুর পর্যন্ত গর্ত খোঁজে,” তিনি ব্যাখ্যা করছেন।
এখানে ড্যানের কিছু ছবি [2] দেখুন।
কাতার লিভিং এ আজনাস [3] লিখেছেন যে এই বৃষ্টি কি অসুবিধা তৈরি করতে পারে আর গাড়ি চালক আর রাস্তার লোকদের কি অসুবিধা হতে পারে। তিনি বলেছেন:
বৃষ্টি প্রথম কয়েক দিনে মোট ১৫৩ টি গাড়ি দুর্ঘটনার কথা দোহাতে জানা গিয়েছে, স্থানীয় আরবী দৈনিক আরায়াহ জানিয়েছে।
খালিফা শহরে ৩৫ টি দুর্ঘটনা হয়েছে। একজন এশিয়ান যুবক আহত হয়েছে আল সাদ সড়ক পার হওয়ার সময় যখন একটা গাড়ি তাকে চাপা দিয়েছে।
আল রায়ান এ ৩০টি দুর্ঘটনা হয়েছে যার মধ্যে ১০টি মারাত্মক। আল মামুরা তে ৮৮টি দুর্ঘটনা হয়েছে কেউ আহত হয় নি।
আর মোহাম্মাদ অনুরূপ ভাবে বলছেন [4]:
মরুভূমিতে বৃষ্টি সব থেকে খারাপ দিক হল রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে যায়…
কুয়েত:
দোহার কর্দমাক্ত রাস্তা থেকে চলুন আমরা কুয়েতে যাই যেখানে ব্লগাররা ঠাণ্ডা নিয়ে অভিযোগ করছে।
এই শীত তাকে অলস করা ছাড়াও তার গাড়ির গিয়ারের জন্য খারাপ বলছেন [5] জে ডিস্ট্রিক্ট । তিনি ব্যাখ্যা করছেন:
“এত ঠাণ্ডা কেন! কোথায় থেকে এসেছে, আমি গরমের থেকে ঠাণ্ডা পছন্দ করি কিন্তু যখন আমি কাজে যাই তখন না, সকালে এই ঠাণ্ডায় উঠে কাজে যাওয়া কষ্টকর আর গাড়ি চালানো আর একটা ব্যাপার। সকালে ৪ ডিগ্রি বেশ ঠাণ্ডা আর আমি গিয়ারে দিয়ে গাড়ি গরম করতে চাই কিন্তু মাঝে মাঝে এত ঠাণ্ডা থাকে যে গাড়ি গরম না হওয়ার কারনে গিয়ার দিতে অসুবিধা হয়।”
কুয়েত থেকে ফঞ্জি ইমেইলে পাওয়া কিছু ছবি তার ব্লগে দিয়েছেন [6] যেখানে ওয়াফ্রার সামনের সমুদ্রে কিছু কিছু জায়গা জমে গিয়েছে দেখা যাচ্ছে।
“সমুদ্রের পানি জমে গিয়েছে!! আমি আশ্চর্য হবো না এটা যদি সত্যি হয়,” তিনি বলছেন।
লিবিয়া:
সপ্তাহ শেষে খারাপ আবাহাওয়া খাদিজা তেরির মেজাজ খারাপ করে দিয়েছে। তিনি লিখেছেন [7]:
আকাশ থেকে যে বালতি ভরে বৃষ্টি পড়েছে তাতে আমার ছুটির সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। বৃহস্পতিবার বাড়িতেই বেশীর ভাগ সময় ছিলাম কিন্তু বিকালে ভাবলাম সিনাবন এ যাই পরিবেশ পাল্টানোর জন্য। শুক্রবার পাহাড়ে যাবার কথা ছিল – আরো বৃষ্টি।
ইরাক:
বাগদাদে স্মরণ কালে প্রথম বারের [8] মতো বরফ পড়েছে [9]। মার্শমেলো২৬ বরফের কথা লিখেছেন [10] যা বাগদাদ বাসীর হৃদয় গরম করে দিয়েছে। তিনি বলছেন:
শেষ পর্যন্ত ইরাকে বরফ এসেছে আর এটি শুধু উত্তরে নয় বাগদাদেও এসেছে… কি ভালো লাগে জানতে যে বরফ, যা ইশ্বরের একটা আশ্চর্য জিনিষ, সেই দিন অনেক ইরাকির মুখে হাসি ফুটিয়েছিল যে দিন আবহাওয়া দপ্তর বাগদাদ আর কিছু শহরে বরফ পড়ার কথা প্রথম বলেছিল। এটা ভাবতে অবাক লাগে যে লণ্ডন এখনো বরফের জন্য অপেক্ষা করছে আর মধ্য প্রাচ্যের বধু বাগদাদে বরফ পড়েছে? হা!!
দু:সাহসিক মার্শমেলো২৬ তার বাবাকে রাজি করাতে পেরেছেন সুলেমানিয়াতে [11] দুই ঘণ্টা গাড়ি চালাতে আর আমাদের সাথে কিছু বরফের ছবি ভাগ করেছেন এখানে [10]।
স্নো ভার্কস:
আর সব শেষে মধ্যপ্রাচ্যের ভাষ্যকার মাক লিঞ্চ বা আবু আদ্ভাক ভাগ করেছেন স্নোভার্কের একটি ছবি – এই লেখার জন্যে একটি উপযুক্ত সমাপ্তি!
এর সাথে সম্পর্ক যুক্ত গ্লোবাল ভয়েসেস এর আরও লেখা: