সাথীরা: ছবি তুলেছেন লন্ডনব্র্যাড
মিশর থেকে প্রকাশিত সাম্প্রতিক ভিডিও গুলো গোপন আর নোংরা সত্যি কথা জানাচ্ছে। তাদের মধ্যে একটি, হাইডেওয়াস (কুৎসিত), চেষ্টা করেছে ধনীদের একটা নাড়া দিয়ে তাদের দিয়ে কাজ করাতে যেখানে তাদের জীবনের সাথে রাস্তার গরিবদের জীবনের তুলনা দেখানো হয়েছে। আরো আছে মহামান্য বেগম সুজান মুবারককে উৎসর্গ করা একটি গান ও তার ভিডিও, যেখানে বলা হয়েছে শিশু নির্যাতন, পুলিশের নৃশংসতা আর কষ্টের কথা।
মিশরের রাস্তা দিয়ে রোজ হেঁটে যাবার সময় নাদের জি এল আত্তার লক্ষ্য করেছেন তার দেশের ধনী আর গরিবদের মধ্যকার সম্পর্ক, আর বিশেষ করে দুই প্রান্তের এই দুই শ্রেণী নিজেদের মধ্যে কি করে আদান প্রদান করে। তিনি এই ব্যাপারে তার এক বন্ধু রিইনে গামালের সাথে কথা বলেছেন আর এক সাথে তারাহাইডেওয়াস (কুৎসিত) নামক ভিডিওটা তৈরি করেছেন যেটি তার ফেসবুকের পাতায় আছে অন্যান্য ভিডিও এর সাথে। ‘কুৎসিত’ নামক ভিডিওতে, যেটি এখানে ক্লিক করে আপনি দেখতে পারেন, নাদের জি এল আত্তার আর রিইনে গামাল ধনী গরিব দুই জীবনযাত্রার পার্থক্যটা দেখিয়েছেন। ইমেইলে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে ভিডিও তৈরি করতে তাকে কি অনুপ্রাণিত করেছে। নাদের জানিয়েছেনঃ
… এখন যা পাওয়া যাচ্ছে তা হল একদল ধনী লোক যাদের কে অর্থ নিয়ন্ত্রণ করে…আর গরিব লোক ওই ধনীদের দেখছে আর ভাবছে ,”এরা আমাদের কেন একা ফেলে রাখছে…আমরা কি করেছি?” বিস্ময়কর হচ্ছে যে ধনীরা তাদেরকে এখন কি ভাবে দেখছে… বেশিরভাগ ভাবে যে তাদের দোষে তারা গরিব, যেহেতু তারা লোকের কাছে টাকা চাওয়া ছাড়া আর কিছু করেনা… তারা কাজ করেনা, এটা তারা ভুলে যায় যে এই লোভী, অর্থসন্ধানী, বিশ্বায়ন আর পূঁজিবাদী পৃথিবীতে এসব লোকের কাজ করার কোন জায়গা নেই… কোথায় একজন অশিক্ষিত, গরিব লোক আজকাল কাজ করবে???
চলচ্চিত্রে ঝলমলে দোকান, রেস্টুরেন্ট, গ্রাজুয়েশন, পার্টি, আরাম দায়ক বাড়ি আর সমুদ্রতটের রঙীন চিত্র দেখানো হয়েছে এবং এর সাথেই আছে রাস্তায় মানুষ ঘুমাচ্ছে, বাচ্চারা কাজ করছে আর ভিখারিরা রাস্তার কোনায় বসে আছে তার সাদা কালো চিত্র। চলচ্চিত্রের শেষে একটা প্রশ্ন করা হয়েছে: বিবেকের কাছে অপরাধ যোগ্য ছবি কোনটা – যেটা ছবির শুরুর যেখানে সুন্দর জীবন দেখানো হয়েছে না দ্বিতীয় ভাগেরটা। নাদের সরকারের ভুমিকা আর এ ব্যাপারে তাদের কোন উদ্যোগের অভাবের কথা বলেন:
… আমার কাছে একটা ছবি ছিল ৩টি বাচ্চা একটা ময়লার গাড়ি ঠেলছে… আর তখন আমি ভাবলাম, আমাদের ফাস্ট লেডি কই??? রাস্তার বাচ্চা নিয়ে তার সমস্ত কথা সহ!!!
মিশরীয় ব্লগার আর শিল্পী আহমেদ শেরিফ ফার্স্ট লেডি সম্বন্ধে কিছু বলতে চান। এটা একটা ভিডিও আর গান ইউটিউবে দিয়ে তিনি করেছেন যেটার নাম মান্যবর বেগম সুজান মুবারক। তিনি ভিডিওর বর্ণনা করেছেন:
মিশরীয় পুলিশের নৃশংসতা, শিশু নির্যাতন আর কষ্টের একটা সত্যি গল্প। এই গান উৎসর্গ করা হল “মান্যবর বেগম সুজান মুবারক, মিশরের ফাস্ট লেডিকে যথাযথ সম্মান সহ”।
গানের কথার ভাষান্তরঃ ”বেগম মুবারক, আমি আপনার সাথে টেলিভিশনে এসেছিলাম। আমি একজন ছোট্ট, খুশি আর দুরন্ত বাচ্চা ছিলাম। আপনি আমার কানে কিছু মিষ্টি কথা বলেছিলেন… ওগুলো ওয়াফা আর আমালের সুবর্ণ দিন ছিল ( একটা শিশু সংরক্ষণ প্রোগ্রাম মিশরের ফাস্ট লেডি করেছিলেন)। এই গানের জন্য রাগ করবেন না। আমি বিশ্বাস করি বেগম মুবারক যে এতে স্বাধীনতার কথা আছে। একটা বাচ্চা ছিল শাবান নামে। তার মা মারা গিয়েছিল, তার বাবা একজন অলস মানুষ আর তার দুই বড় ভাই একটা দলের সাথে মাদক ব্যবসা করত। আমি তাকে খালি চোখে দেখেছি একটা পমগ্রানেট (একটা মিশরিয় ফল) এর অবশিষ্ট অংশ চুষতে যেটা একটা রাস্তার কুকুর এক কাঁড়ি ময়লা থেকে তুলেছিল। আমার ফাস্ট লেডি: কত লাখ শাবান মিশরে থাকে? আমি তাকে আপনার পাশে কখনো দেখি নি টেলিভিশনে। আমার ফাস্ট লেডি, কতজন শাবানকে পুলিশেরা তুলে নিয়ে নির্যাতন করে আপনার মান্যবর সামীর পুলিশ স্টেশনে? বেশ কয়েক ভাষায় কোরাস: আমি শিশু থাকতে চাই, আমি খেতে চাই, আমি একটা স্কুল চাই, আমি বন্ধু চাই, আমি ভালোবাসা চাই, আমি ভীত হতে চাই না, আমি খেলতে চাই, আমি একটা বাড়ি চাই প্রভৃতি।”
আহমেদ শেরিফের ইউটিউব চ্যানেলে আরো অনেক ভিডিও আছে, যার মধ্যে বেশ কয়েকটা মোবাইলের মাধ্যমে প্রচার করা যায়। ‘নেকাবের ব্যাপারে ব্যঙ্গ থামাও আর কথা বলো‘ নামক নিচের যে ভিডিও আছে তিনি সেখানে বলেছেন যুক্তরাজ্যে নেকাব নিয়ে যে বিরোধ হচ্ছে , একটা আবরণ যা মুখ আর সারা শরীর কে ঢেকে রাখে, আর কি করে তা পছন্দের ব্যাপার হতে পারে? ‘মুক্ত ভালবাসা? কি হয়েছে?‘ ভিডিওতে তিনি আশা করছেন যে মিশরে বিয়ের আগে যৌন সম্পর্ক গৃহিত হবে যার ফলে কায়রোতে ধর্ষনের ঘটনা কমে যাবে। নেকাবের ব্যাপারে ব্যাঙ্গ থামাও।
আর একটা ভিডিও আরো জানার জন্য আপনারা দেখতে পারেন যেখানে আধুনিক মিশরে মহিলাদের গোপন জ়ীবন দেখানো হয়েছে। এটি দেখার জন্যে দয়া করে অনুসরণ করেন হালা লফটি এর ক্রিয়েটিভ কমন্সের আওতায় প্রকাশিত ৫১ মিনিট দীর্ঘ প্রতিবেদন টু ফিল কোল্ড এর লিঙ্কটি।