ওলমার্ট, বুশ এবং আব্বাস শেষবারের মত মিলিত হয়েছিলেন গত নভেম্বর মাসে আনাপোলিস শান্তি সামিটে। ছবিটি ইইনাইটড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের সৌজন্যে প্রাপ্ত।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ আজকে ইজরায়েলে আসছেন আর এবারই প্রথমবারের মত ইংরেজীভাষী ইজরায়েলিদের বেশি কিছু বলার নেই। মতামত প্রাথমিকভাবে দুইভাগে বিভক্ত দেখা যাচ্ছে:
তার দুই দিনের অবস্থানকালে বুশের প্রধান কাজ হবে দেখা আর উৎসাহ দেয়া ইজরায়েলি আর প্যালেস্টাইনি কতৃপক্ষের মধ্যে শান্তি আলোচনায় যার লক্ষ্য হবে ২০০৮ সালের মধ্যে একটা প্যালেস্টাইনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। ইজরায়েলে থাকা কালীন তিনি পিএর প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সাথে আর পরে ইজরায়েলের প্রধান মন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট এর সাথে দেখা করবেন।
প্রেসিডেন্ট বুশের ইজরায়েলে শেষ সফর ছিল ১৯৯৮ সালে তার প্রথম বার রাষ্ট্রপতি হওয়ার একটু আগে।
এই সফরের জন্য ইজরায়েলের প্রতি ঘন্টার নিরাপত্তার জন্য ব্যায় হচ্ছে ২৫০০০ আমেরিকান ডলার আর জোর করে সব প্রধান সড়ক ২ দিনের জন্য বন্ধ রাখা হচ্ছে।
জিউ স্কুলের রুফটপার রাভ বিষ্মিত:
“এটি বিবেক বর্জিত মনে হয়। এই দেশ হাই স্কুলের ছাত্রদের স্কুলে ২ মাস যেতে দেয়নি কারন শিক্ষকদের বেঁচে থাকার মতো বেতন রাষ্ট্র দিতে পারেনি। এখনো ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের ভালো বেতন দেয়া হয়না, গাজার শরনার্থীদের জন্য ভালো অর্থনৈতিক আর অন্যান্য কথা যা দেয়া হয়েছিল তা পুরণ করা হচ্ছে না, আর এখন তাদের গরিব, বয়স্ক আর হলকাস্টের শিকারদের ঠিকমত আর্থিক আর স্বাস্থ্য সুবিধা দিতে পারছেনা। কিন্তু কোনভাবে জর্জ বুশের জন্য প্রতি ঘন্টা ২৫০০০ ইউ এস ডলার ব্যায় করার টাকা আছে।”
‘জর্জের জন্য অপেক্ষা’ নামক একটা লেখায় ফিউজিটিভ পিস এর গিদিওন লিশফিল্ড বলেছেন:
“জেরুজালেমের ট্রাফিক পূর্বের চেয়ে অর্ধেক স্পিডে কমে এসেছে। জেরুজালেম আর রামাল্লায় মিলিটারি হেলিকপ্টার মাথার উপর ঘুরছে। এন আর এ [জাতীয় রাইফেল এসোসিয়েশান] এর যে কোন সভার থেকে বেশি রাইফেল চারিদিকে। মানুষ পরবর্তী কয়েকদিনের জন্য কোন ধরনের কাজের জন্য সময় নিচ্ছে না… আশা করি এর থেকে ভালো কিছু আসবে।”
ফ্রম নেশান্স ক্যাপিটেল টু নেশান্স ক্যাপিটেলের এফ্রাত্তি বলেছেনঃ
“এই শহর পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছে। সব পুলিশ, জাতীয় ট্রাফিক পুলিশ আর নিরাপত্তার অন্যান্য শাখার লোকজন আমার সাধারন পাড়ায় এসেছে। আমি আশা করি পুলিশের সাহায্য লাগবে এমন কোন বাড়ির সমস্যা বা গাড়ির দুর্ঘটনা না ঘটে; কারন আক্রান্তরা কোন সাহায্য পাবে না।”
লিজরায়েলের এলিশেভা জিজ্ঞাসা করেছেন:
প্রেসিডেন্ট বুশ কি মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের সাথে একটা কনফারেন্স কল করতে পারতেন না? আমি নিশ্চিত যে আমেরিকান আর ইজরায়েলি সরকারের মধ্যে কেউ কয়েকটা ওয়েবক্যাম যোগার করতে পারতেন। ইজরায়েল না ওয়েব ক্যাম আবিষ্কার করেছে? আই সি কিউ? ক্ষুদ্র ইউ এস বি স্টিক?
যথাযথ সম্মানসহ বলতে চাচ্ছি যে আমরা জেরুজলেমের সাধারন মানুষ বুধবার থেকে শুক্রবার পযন্ত বেশ বিরক্ত থাকবো যখন আমাদেরকে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে বসে থাকতে হবে, কাজে দেরিতে পৌছাবো আর বসবাসের এলাকায় লম্বা সাইরেন শুনতে হবে। আহা, শান্তি নামে আমরা কি না উতসর্গ করি।”
গতকাল লেবানন থেকে ইজরায়েলে দুইটা কাতিউস্কা রকেট ছোড়া হয়েছে যার ফলে কেজিএস এর তুন্দ্রা ট্যাব্লয়েডস বলেছেনঃ
“হেজবুল্লাহ তার ইরানের সমর্থকদের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েছে যার ফলে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বুশের এলাকায় সফরের আগে তারা তাদের তলোয়ার দেখিয়েছে। এটা আশা করা যায়, বিশেষ করে ইরানের যখন মনে হয়েছে যে তাদের একটা নিশ্চিত সাড়া লাগবে আমেরিকার স্ট্রেটস অফ হোরমুজে থাকা জাহাজ থেকে।”
ইজরায়েলের একটা জনপ্রিয় মতামত তিনি আবার বলেছেন:
“যতোদিন প্যালেস্টাইনিরা তাদের ‘বৃহত প্যালেস্টাইনের’ স্বপ্ন না ছেড়ে দিচ্ছে ইজরায়েলের সংসদ আর মানুষ প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট এর রাজী হওয়া কোন কিছুর সাথে একমত হবার ইচ্ছা দেখাবেনা। ইজরায়েল আর প্যালেস্টাইনে বুশের সফরের ফলে কিছু ভালো হবে বলে দেখা যাচ্ছে না… আমার আশা আছে যে তার সফরের সময় কিছু আশার কাজ যদি করা যায় তা হলো আশেপাশের আরবদের বোঝানো যে আমেরিকা একটা পারমাণবিক ইরান অনুমোদন করবে না।”
দিস অন গোয়িং ওয়ারের লেখক আরো বলেছেন যে গাজা থেকে দক্ষিন ইজরায়েলেও রকেট হামলা হচ্ছে বুশের সফরের সতর্কবাণী হিসেবে:
“কোন কাকতালীয় ব্যাপার না, আমাদের উত্তর সীমান্তে যে গরম তার সাথে মিলে গেছে দক্ষিন দিকে হামলা। শহরে বুশ আসছে, আর মিডিয়াও এখানে আছে। ৯টা কাসাম আর অন্তত ২ টা মরটার ইজরায়েলের পশ্চিমের শহর নেগেভে আজ সকালে পড়েছে প্রেসিডেন্ট বুশের বেন গুরিয়ান এয়ারপোর্টে আসার কয়েক ঘন্টা আগে।”
প্রেসিডেন্ট বুশের ইজরায়েল সফর ৮ দিন মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ। তিনি কুয়েত, বাহরাইন, ইউ এ ই, সাউদি আরব আর মিশর সফর করবেন ইরানে পারমানবিক হুমকি মোকাবিলার চেষ্টা করার জন্য।