ইরানি ব্লগাররা ওবামার আইওয়ার বিজয় নিয়ে আলোচনা করেছেন

বেশ কিছু ইরানি ব্লগার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বারাক ওবামার আইওয়ার বিজয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। ২০০৮ এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী নির্ধারণের জন্যে এটি প্রথম নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীতা ছিল। কেউ কেউ তার বিজয় উদযাপন করেছে আর কেউ কেউ মূল্যায়ন করার চেষ্টা করেছেন যে প্রেসিডেন্ট হিসাবে ওবামা ইরানি রাজনীতিতে কি ভূমিকা রাখবেন।

ফারহাদ আফসার বলেছেন (ফার্সী ভাষায়) যে আইওয়ার বেশীর ভাগ লোক সাদা হয়েও কিভাবে একজন কালোকে ভোট দিয়েছে। তিনি আরো লিখেছেন :

… একজন ডেমোক্রাটিক প্রার্থী নির্বাচনে জিতবে এই কথা শোনা গেলে তা ইরানের অন্ধকার আর জমাট পরিবেশ কে হালকা করবে। ইরানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট- মাহমুদ আহমাদিনেজাদ – দুই বছর আগে নির্বাচিত হয়েছিলেন ‘ইরান শয়তানী চক্রের অংশ’ – বিদেশের এই ভীতিকে মোকাবিলার জন্য। দুই বছর আগে ইরান যে কোন সময় আক্রান্ত হতে পারতো, আর বিদেশী চাপ মোকাবিলার জন্য একজনকে বেছে নেয়া হয়েছিল। বিদেশী এই চাপ কমে গেলে, ধীরে ধীরে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায়। বৈদেশিক নীতি আর ইরানের ব্যাপারে ওবামার মতামত সংস্কারবাদীরা পছন্দ করছে… হয়তো কেউ কেউ জানে না কিন্তু শান্তি আর আলোচনা কোন দলের জন্য বিষের মতো কাজ করে যাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত যুদ্ধ আর সংঘাতের উপর নির্ভরশীল।

নেঘানো (ফার্সী ভাষায়) মনে করেন (ফার্সী ভাষায়) যে আমেরিকার নির্বাচন গনতন্ত্রের একটি বিশাল প্রাপ্তি আর বলেন যে আমেরিকার গনতন্ত্র ৩০০ বছরের সাধারন মানুষের সংগ্রামের ফল যা একদিনে হয়নি।

নিকাহাং কোসার, একজন কাটুনিস্ট আর সাংবাদিক বলেছেন যে ওবামার বাণী হলো ‘পরিবর্তন’ আর তাই তরুনরা তাকে সমর্থন করে, যদিও মনে হয় হিলারি ক্লিন্টনের নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বেশ কিছু রাজ্যে। ব্লগার বলেছেন যে ওবামার মধ্য নাম হোসেন, আর বেশ কিছু ডানপন্থী মিডিয়া মানুষকে বিশ্বাস করাতে চায় যে সে ইসলামি গোঁড়াদের সাথে সম্পর্কিত। নিকাহাং বলেছেন যে অনেক আমেরিকানই মুসলিম আর ইসলামী নামকে ভয় পায়। শেষে এই ব্লগার বলেছেন যে যদি ওবামা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন জেতেন তাহলে মার্টিন লুথার কিং এর সপ্ন সত্যি হবে।

আমিন ওবামার ধার্মিক বিষয়টা ভুল বুঝেছেন। যদিও মিডিয়া ওবামার খ্রীস্টান বিশ্বাস নিয়ে কথা বলে, এই ব্লগার বলছেন যে একজন কালো মুসলিম আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেছেন যে কিছু ডানপন্থী মিডিয়া তাকে কট্টোর ইসলামী বলছে, কিন্তু অনেকেই তাকে নিরপেক্ষ মুসলিম ভাবছে।

ননোঘালাম বলেছেন যে একটি প্রথম সারির ইজরায়েলী সংবাদপত্র হারেটজ সব প্রার্থীর মধ্যে ওবামাকে সব থেকে কম নম্বর দিয়েছে। ব্লগারের কথা অনুযাযী এই নম্বর কোন প্রার্থীকে ইজরায়েল কতটা সমর্থন করে তার উপর নির্ভর করে। বারাক ইরানের সাথে সরাসরি কথা বলার পক্ষপাতী।

ফাররাদ০২ ইরানিয়ান ডট কম ব্লগে লিখেছেন:

… হিলারির ফুঁসে ওঠার করার মূল কারন (আমার দৃষ্টিতে) যে তিনি আমেরিকার নির্বাচনের মূল বিষয়টি ভুলে গেছেন: দলের প্রথম দিকে কট্টরপন্থী হতে হয় (তার ক্ষেত্রে চরম বামপন্থী লিবারেল) যার মাধ্যমে দলের বিশ্বাসের স্তরে সব থেকে বেশী আবেদন হয়। তার পর প্রার্থীতা একবার জিতে গেলে, আপনি মধ্যবর্তী জায়গায় ফিরে যাবেন আর ওই অবস্থায় জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। আমি খুবই অবাক হয়েছি যে এই মূল বিষয় ভুলে গিয়ে মধ্য পন্থি হয়ে হিলারি প্রচারনা করছে, যেন সে প্রার্থীতা জিতে গেছে আর রিপাব্লিকানের বিরুদ্ধে সে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে লড়ছে!

- হামিদ তেহরানী

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .