মাদাগাস্কারের নির্বাচনঃ বর্তমান সরকারের প্রতি একটি সাবধানবাণী কি?

(ছবি সৌজন্যে হরিনজাকা)

গত সপ্তাহে মাদাগাস্কারের রাজধানী আন্তানানারিভোর মিউনিসিপাল নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী এন্দ্রি রাজাওলিনা প্রেসিডেন্টের দলের প্রার্থী হেরি রাফালিমানানা কে পরাজিত করেছেন যাকে অনেক ব্লগার মনে করছেন বর্তমান প্রেসিডেন্টের জন্য একটি সাবধানবাণী হিসেবে।

আন্তানানারিভোর মেয়র মালাগাসির রাজনীতিতে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যেখান থেকে প্রায়ই আরো উচ্চতর রাজনৈতিক লক্ষ্যে পৌছানো যায়। বর্তমান রাষ্ট্রপতি একদা আন্তানানারিভোর মেয়র ছিলেন।

এন্দ্রি রাজাওলিনা, যাকে লোকে টিজিভি বলেও চেনে, হচ্ছেন মিডিয়া আর যোগাযোগ মাধ্যমে একজন বেশ নাম করা তরুন ব্যবসায়ী।

মালাগাসির ব্লগার হেরি তার নির্বাচন প্রচারনার অভিনব দিক তুলে ধরেছেন (মালাগাসি ভাষায়):

“তার প্রচারনায় ছিল তরুনদের প্রতি লক্ষ্য করে আর তাদের মতামত শোনা হচ্ছিল যদিও অন্যান্য ব্যাপারগুলোরও প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। তিনি বাচ্চারা খেলাধুলা আর নিজেদের পড়ালেখার উন্নতি পারে এমন কেন্দ্র খোলার কথা বলেছেন। এসব স্থানে তারা খেলতে বা নিজেদের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করতে পারবে। জাতীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারী সব ছাত্রদের জন্য বিনামূল্যে কোর্স থাকবে তারা প্রাথমিক, জুনিয়র হাই, বা হাই স্কুলে থাকুক না কেন যাতে তাদের ডিপ্লোমা পাওয়া সহজতর হয়।”

হরিনজাকা বলেছেন কিভাবে একজন তরুন ভোটার তার মত ঠিক করেছেঃ

“আমি টিজেভিকে ভোট দিয়েছি কারন সে তরুন। বর্তমান সরকারকে একটা শিক্ষা দেয়া উচিত আর তাদেরকে বোঝানো দরকার যে আমরা তাদেরকে আর সমর্থন করিনা।”

তবে রাজাওলিনার তারুণ্যদীপ্ত ক্যারিশমাতে সবাই আশস্ত নয়। দ্য ননরিকয়ারড ব্লগ আরো ভালো কিছু যৌক্তিক এজেন্ডা আশা করেছেন আর কিছুটা সমালোচনা মনোভাব নিয়ে বলছেনঃ

ঐতিহ্যবাহী মালাগাসি গান, ফ্যাশান মডেল, যত খুশি খাও বুফে, ৫০০ আমন্ত্রনপত্র, আলোকচিত্রীদের মাঝে আবির্ভাব, কেন নয়? কিন্তু এটা বাদ দিয়ে কিছু কি নেই! কোন বিস্তারিত প্রোগ্রাম নেই, শুধু একটু একটু ছেড়াছেড়াঃ

# আমি ভীত নই,

#এটা ভাবা যায়না যে এই যুগে কেউ একনায়কতন্ত্ আর ক্ষমতার আপব্যবহারের মধ্যে থাকে।

# সবার আধিকার আছে রোজগার করার, আমাদের উচিত আমাদের তরুনদের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে সাহায্য করা…

মিয়ালি বলেছে যে আন্তানানারিভো মাঝেমাঝে নির্দয় হতে পারেঃ

“(শহরটি) বিশ্বস্ত, কিন্তু খুবই নির্দয় হতে পারে যখন সে চায়। গত কয়েক মাসে দেখা যাচ্ছিল যে অসন্তোষ বেড়ে যাচ্ছে, বোঝা যাচ্ছিল কি আসছে:

আন্তানানারিভো টিম-ম্যানিয়াকে ভাল ভাবে নিচ্ছিলনা (টিম হচ্ছে প্রেসিডেন্টের দল)।”

জেন্টিলিসা আর বারিজোয়ানা টিম দল কেন নির্বাচনে হেরেছে তার কারন দেখিয়েছেনঃ

বারিজোয়ানা কয়েকজন ভোটারকে জিজ্ঞাসা করেছে কেন তারা মত পালটেছেঃ

আর একটু জোর দিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা হয়ত বলতো দেশের কার্যক্রম আপাতদৃষ্ট: থেমে যাওয়ার ব্যাপারটি। অথবা সরকারি আর বেসরকারি স্বার্থ গুলিয়ে ফেলে টিকো আর ম্যাগ্রোর মত পুরানো কোম্পানীর লোককে তুলে ধরা (বর্তমান প্রেসিডেন্ট দুই কোম্পানিতেই বিনিয়োগ করেছেন) রাষ্ট্রের ক্ষমতাশালী পদে। অন্যান্য কারন হলো মধ্য পর্যায়ে প্রশাষনিক ক্ষমতা একিভুতকরন, জোর করে সরকারি চাকুরি থেকে লোক টিম শিক্ষা আর টিম সাস্থ্যে নিয়ে আসা (প্রেসিডেন্টের দলের শিক্ষা আর স্বাস্থ্যের জন্য থিংক ট্যাংক) আর এ নিয়ে ওজর শুনতে রাজি না হওয়া। তার প্রার্থীতা দিয়ে এন্দ্রি টিজিভি গ্লামারাস লোকে পরিনত হয়েছে রাফালিমানানার দলের কুকীর্তির সামনে।

জেন্টিলিসা প্রেসিডেন্টের দলের পরাজয়ের আর কয়েকটি কারন বলেছেন:

“ অনেকে বলেছে যে উপরের দিকের পছন্দের লোক পাল্টাতে আন্তানানারিভোর পরিচিতি আছে। এই শহর প্রেসিডেন্ট আর মিউনিসিপাল নির্বাচনে এক দলকে দুইবার পর পর নির্বাচিত করেনা। আর একটি কারন হলো প্রার্থীরা মনে করে যে তারা কোন দলের প্রার্থী হলে ভালো- মন্দ যাই হোক নিরাপত্তা আছে দল থেকে। তৃতীয় কারন হলো প্রার্থী নির্বাচন করা। নির্বাচন প্রচারনার আগে এটা কি বলা হয়েছিল না যে বিরোধী প্রার্থী হবে মিডিয়া আর যোগাযোগে বিশেষজ্ঞ একজন আর তাদের প্রার্থী নিজেইতো একজন উত্তম যোগাযোগ রক্ষাকারী?”

-লোভা রক্তমালা

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .