বলিভিয়া: টোডোস সান্তোস উদযাপন

বলিভিয়া সস্প্রতি উদযাপন করেছে টোডোস সান্তোস উৎসব, যা অল সেইন্টস ডের উপর ভিত্তি করে পালিত হয়। তবে কিছু স্থানীয় আচারও এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ হয়েছে। স্থানীয় কমিউনিটি এবং পরিবার একসাথে হয় রুটি বানানোর জন্যে, মৃত আত্মীয় স্বজনের আত্মাকে স্বাগত জানানোর জন্যে বেদী তৈরি করা হয়, এবং লোকে স্থানীয় কবরস্থানে যায়। গ্লোবাল ভয়েসেস আউটরিচ প্রকল্প রাইজিং ভয়েসেসের অনুদান প্রাপ্ত প্রকল্প ভসেস বলিভিয়ানোস (বলিভিয়ার কন্ঠ) এর কিছু ব্লগার এই দিনটি সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছেন।

এল আল্টো নোটিসিয়ার আলবার্টো মেদরানা এই দিনটির ঐতিহাসিক পটভুমি সাংবাদিকের দৃষ্টিতে দেখেছেন এবং রিপোর্ট করছেন যে এই দিবসটি হ্যালোইনের সাথে কিভাবে প্রতিযোগীতা করেছে।

অবশ্যই এল আল্টোর জনগন মার্সেডারিওর ‘কাম্পো সান্তোস দো ভিলা ইনজেনিও’ কবরস্থানে যাবেন তাদের আরতি, খাদ্য ও স্থানীয় সঙীত সহ। আমি আশা করব যে অধিক মদ্যপানে অনেকে মাতাল হয়ে যাবেন না এবং পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সাথে অল সেইন্টস ডে স্বাস্থ্যবানভাবেই পালন করবেন। এই রীতি হ্যালোইনের কদুর সংস্কৃতি থেকে অনেক ভিন্ন।

বলিভিয়া ইনডিজেনার কৃস্টিনা কিসবার্ট দিনটির কার্যক্রম সম্পর্কে লিখছেন:

গতকাল নভেম্বরের ১ তারিখে দুপুরে, একটি বেদী তৈরি করে মৃতদের আত্মাদের স্বাগত জানানো হয়েছিল। বেদীটি সাজানো ছিল বিভিন্ন ধরনের রুটি, টান্টাওয়াওয়া (বাচ্চাদের আদলে তৈরি রুটি), মুকুট, মই, ঘোড়া, ফল, মিস্টান্ন, ফুল এবং মৃতদের পছন্দের অন্যান্য খাদ্য দিয়ে।

লেন্গুয়া ঈ কমুনিকাৎসিয়ন ব্লগের রুবেন হিলারী তার ধর্ম মতের জন্যে এই দিবসটি পালন করে না। তবে সে তার বন্ধুর একটি অভিজ্ঞতার কথা বলেছে যে একটি খনিতে এই দিবসটি উদযাপন করেছে:

এটি ঘটেছিল যখন সে (রুবেনের বন্ধুটি) ৮ বছর বয়সী ছিল। সে তার মার সাথে এক খনি অন্চলে তার খালার সাথে দেখা করতে গিয়েছিল। অল সেইন্টস ডের একটি আচার পালনে সে এবং তার মা প্রার্থনাগুলো না জেনেই গিয়েছিল। শুধু তারা ছাড়া ওই খনিতে সবাই আচার উদযাপনের ব্যাপারগুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল তাই সবার চোখ তাদের দিকে ঘুরে যাচ্ছিল। তবে তাদের প্রার্থনা করতে আমন্ত্রন ঠিকই জানানো হয়। তারা কিছুই করতে পারেনি (কারন তারা প্রার্থনাগুলো জানত না) তবুও বাড়ী বাড়ী গিয়েছে এবং তাদের খাবার দেয়া হয়েছে। তারা পার পেয়ে গেছে কারন তারা অতিথি ছিল।

এই দিবসটি সম্পর্কে আয়োজন একটি পারিবারিক ব্যাপার। কম্পারটিয়েন্দো ইডিয়া নুয়েভা ব্লগের গ্রাসিয়েলা রোমেরো লিখছেন রুটি কিভাবে বানানো হয়:

ভোর পাঁচটা থেকে চুল্লীটি জ্বলে যাচ্ছিল। সবাই যার যার সামর্থ ও পছন্দ মত রুটি সেঁকে নিচ্ছিল সেখান থেকে। আমি যখন আসলাম তখন আমি দেখলাম যে লোকেরা রুটি চুল্লিতে দিচ্ছে এবং মেয়েরা বাক্স বা বালটিতে করে হয়ে যাওয়া রুটিগুলো নিয়ে যাচ্ছে। কিছু রুটি ঐতিহ্য মানার জন্যে বানানো হচ্ছে এবং কিছু হচ্ছে প্রয়োজনের কারনে – দোকানে বিক্রির জন্যে।

সবশেষে কোরাজন দে লো আন্দেস ব্লগের হুয়ান আপাজা এই দিবসটিতে অর্জিত তার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছেন

এই নম্র ঐতিহ্যটি পিতামাতার মাধ্যমে পালন করা হয় এবং পরিবার থেকে সমাজে ছড়ায়। আমি তাই এটি পালনে বাধ্য হয়েছিলাম। আমার স্বকীয়তাবোধ কে তাই বিসর্জন দিতে হলো। এবং পরবর্তীতে যখন আমি সেই পবিত্র কবরস্থান দেখলাম, আমার মনে হলো “এই ঐতিহ্য আগ্রহের সাথেই পালন করা উচিৎ”। অনেকে হয়ত ভাববেন যে মৃতদেহ সৎকারের মত পরিবেশে দু:খী, ক্রন্দনরত মানুষের দেখা পাওয়া যাবে। কিন্তু না! বেশ সরব ছিল সবকিছুই সঙীত, হাস্যরস, আনন্দ এবং অপরের সঙ দিয়ে।

এবং হঠাৎ করেই “কেমন লাগছে বৎস?”

কেউ একজন আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরল। আমি সারা দিতে গিয়ে দেখি এটি আমার কাকা (এক বছরেরও বেশী তাকে দেখিনি)। এবং এর পরেই তিনি কিছু বললেন…

” এই নাও পানীয়! তোমাকে শ্রান্ত দেখাচ্ছে, একটু চিচা (শষ্যের গ্যাজানো পানীয়) খাও।” আমি গ্লাসটি নিয়ে সবটুকু গিলে ফেললাম।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .