ইকুয়েডরঃ বারসেলোনায় ট্রেনে ইকুয়েডরের একটি অভিবাসী মেয়েকে আক্রমন

একটি ১৬ বছরের ইকুয়েডরের অভিবাসি মেয়ে বারসেলোনার একটি ট্রেনে একা বসে ছিল যখন ফোনে কথা বলতে বলতে একজন স্পানিশ নাগরিক তার কাছে এসে তাকে বার বার আঘাত করে কোন কারন ছাড়া। ট্রেনের ভিতরের ক্যামেরায় এই দৃশ্য ধারন করা হয় আর এর ফলে ইকুয়েডর আর অন্যান্য জায়গার ব্লগারদের মধ্যে এটা নিয়ে বেশ আলোচিত হচ্ছে যার মধ্যে স্পেনে অভিবাসিদের মর্যাদা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কোবারটুরা ডিজিটাল ব্লগের ক্রিশ্চিয়ান এস্পিনোজা এই ছবি দেখে দু:খিত হয়েছেন কিন্তু তিনি এটাও বুঝেছেন যে ওই লোক সমগ্র স্পেনের প্রতিনিধি নয়:

দেশে এই চিত্র দেখে আমরা রাগে চিৎকার করি কারন আমাদের মনে পড়ে যে কোন বিদেশী আমাদের দেশে আসলে আমরা তাদের কতো যত্ন নেই। অবশ্য স্পেন বা ইউরোপের সবাই সেরগেই (আক্রমনকারী) এর মতো না আর এই ঘটনার নিন্দা করে যে সব বানী মন্তব্যে দেয়া হয়েছিল তা থেকেই তা বোঝা যায়। কিন্তু আমার মনে হয় এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটানোর জন্যে তাদের আরও বেশী কিছু করা উচিত।

স্লাই নেশন ব্লগের আন্দ্রেজ নিকোলাস হিলিব্রান্ড, যিনি একজন স্প্যানিশ নাগরিক, এই আক্রমনের ভিডিও চিত্রের লিঙ্ক দিয়েছেন আর আক্রমনকারীকে তিরষ্কারও করেছেন:

এই পৃথিবীতে কিছু লোক আছে যাদেরকে ছেড়ে দেয়া উচিত নয়। এটা হতে পারে না যে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক লোক একটি অল্পবয়সী মেয়েকে মেরেছে কারন তার মারতে ইচ্ছা করলো, বা তাকে দেখতে তার ভালো লাগলো না, বা সে বিদেশী। এই ধরনের ঘটনা দেখলে আমার ঘৃণা হয়। আমার ঘৃণা লাগে এটা চিন্তা করতে যে একটা মেয়েকে একজনের আঘাত সহ্য করতে হবে কারন ওই জ্ঞানশূন্য লোকটির মনে হয়েছিল যে একটা বিদেশীকে আঘাত করার অধিকার তার আছে। আমার মনে হয় ওই মেয়েটার এদেশে থাকার অধিকার অনেক বেশি ওই লোকটির থেকে যে একটি মেয়েকে মারা পুরুষত্বের কাজ বলে মনে করে। তার এদেশে থাকা উচিত নয়।

ভিডিওতে দেখা যায় আর একজন যাত্রী অন্য দিকে তাকিয়ে আছে আর এই বিনা কারনে আক্রমনের কোন প্রতিবাদ করছে না। এই লোকের দাঁড়িয়ে থাকা দেখে গ্যাবী কোরসালেস দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েছেন:

এটি বিষ্ময়কর যে এই ধরনের পরিস্থিতে আমরা কিছু করি না। মেট্রোতে আর একটা লোক ছিল যে ওই মেয়েটিকে সাহায্য করতে পারতো। কিন্তু অনেকে বলছে যে সে হয়ত ভয় পেয়েছিল। আক্রমনকারীর ক্ষমা ভিক্ষা যথেষ্ট না। এই ধরনের জাতি বিদ্বেষী লোকদের যথোপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত।

ব্লগাররা দ্রুতই তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যেমন জানিয়েছেন ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল করিয়া। ক্যাম্বিমোস ইকুয়েডর ব্লগ প্রেসিডেন্টের সহানুভুতিতে অবশ্য বিশ্বাস করে না

কয়েকদিন আগে স্পেনে একজন স্পানিশ নাগরিক একজন ইকুয়েডেরিয়ান মেয়েকে ভীতুর মতো আক্রমন করেছে, যার একমাত্র অপরাধ সেখানে শান্তিতে কাজ করা আর একটা ভালো জীবনের জন্য সেদেশে যাওয়া। আমাদের প্রেসিডেন্ট এই মেয়েটাকে আর তার পরিবারকে বাচানোর জন্য ছুটে গিয়েছেন এবং কিছু আশ্বাস দিয়েছেন যার মধ্যে স্পানিশ সরকারকে ভয় দেখানোর কথাও আছে। আমাদের নেতা বেশ সাহসী, তার আচরন প্রায় বিশ্বাসযোগ্য ছিল, শুধু চোখের পানির অভাব ছিল, তাহলে তাকে অস্কার এ মনোনয়ন করা যেত।

স্পেনে অভিবাসিদের দুর্দশা প্রায়শই ব্লগারদের মধ্যে আলোচনার বিষয় হয়ে থাকে। অতেন্টিকো ইকুয়াটোরিয়ানো ব্লগের উহরের মতো কয়েকজন মনে করে যে তার দেশের বেশীরভাগ লোক ওখানে ভালো সুযোগের জন্য যায়। তারা এই নির্যাতিতদের সাথে সংহতি প্রকাশ করেঃ

আমি তাদের সাথে আছি (স্পানিশ বা ইকুয়েডেরিয়ান) যারা জানে কি করে শান্তিতে থাকতে হয়, যারা কঠোর পরিশ্রমী আর নির্ভরশীল, যারা জানে কি করে সম্মানিত হতে হয় আর সম্মান দেখাতে হয় আর যারা হিংসাত্মক আচরন করে না যার মাধ্যমে বোঝানো হয় যে আমরা কি ধরনের পরিস্থিতিতে থাকি।

আর একটি লেখায় উহর তার সাথী ইকুয়েডেরিয়ানদের অনুরোধ করেছে তাদের নতুন অভিবাসী দেশের নিয়ম মেনে চলতে এবং তারা যাতে সংখ্যালঘুর আচরনকে আমলে না নেয়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .