গত সপ্তাহে এই বিতর্কটি বেশ উপভোগ্য ছিল যে আফ্রিকায় ই-কমার্সের ভবিষ্যৎ কি।
ওলুনিই ডেভিড আজাও নাইজেরিয়ার ডিজিটাল সোনার মুদ্রা ই-গোল্ডের জনপ্রিয়তা নিয়ে মন্তব্য করে এই বিতর্কের শুরু করেছেন। অন্যন্য অন-লাইন পেমেন্ট সিস্টেমও একই ভাবে জনপ্রিয় হতে পারে আফ্রিকাতে: নাইজেরিয়াতে কেন ই-গোল্ড জনপ্রিয়?
খুব কম নাইজেরিয়ান ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের মাধ্যমে বিশ্ব বানিজ্যে অংশগ্রহন করেন। ইন্টারনেট ওয়ার্ল্ড পরিসংখ্যান অনুয়ায়ী ৫ মিলিয়ান লোক নাইজেরিয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহার করে যা নাইজেরিয়ার ১৪০ মিলিয়ান লোকের ৩.৫৭ % মাত্র (২০০৭ এর জরিপ অনুযায়ী)।
এই লোকদের অনলাইনে অর্থ আদান-প্রদান করতে হয় ই-কমার্সে অংশগ্রহন করার জন্য। কেনা- বেচা ছাড়াও তারা বিদেশী শেয়ার মার্কেটে আর মুদ্রা বাজারে (ফরেক্স) বিনিয়োগ করতে পারে, বেশি লাভের বিনিয়োগ প্রোগ্রাম (এইচওয়াইপি), মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) স্কিম এও অংশগ্রহন করে।
থট লিডারের জন্য ব্লগ করেন এরিক হার্সম্যান। তিনি আফ্রিকা, বিশেষ করে দক্ষিন আফ্রিকা থেকে ই-কমার্সে অংশগ্রহনের অসুবিধার কথা উল্লেখ করেছেন:
আফ্রিকার ই-কমার্সকে ধ্বংস করছে যথাযত অনলাইন অর্থ প্রদানের উপায়ের অভাব আর একই পরিস্থিতি বিদ্যমান দক্ষিন আফ্রিকাতেও। বাকি বিশ্বের সাথে একইভাবে পন্য আর কাজের জন্য অর্থ প্রদানের অসুবিধার মানে হলো যে অনেক কাজে আসার মতো বানিজ্যের উপায় আফ্রিকার ব্যবসায়ীদের হাতে নেই। যে কটি উপায় আছে তা ব্যবহার করতে বেশ কিছু ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা ও প্রচুর অর্থ লাগে।
এই লেখার শেষের দিকে এরিক হার্সম্যান কিছু পন্থার কথা বলেছেনঃ
আমি স্বীকার করছি যে আফ্রিকার জন্য যে কোন সমাধান ব্যাঙ্ক আর বাহকের আজ্ঞাবাহী হতে হবে।
তাই যে কোন সমাধানের শুরু দেখা যাচ্ছে কিন্তু আফ্রিকার জন্য কেউ ই-কমার্স সমস্যার কোন চূড়ান্ত সমাধান বলছে না। অবশ্য, পে পাল যদি আর একটু চেষ্টা করে দেখত সত্যতা যাচাই করার যে আমরা সত্যিকারের মানুষ এবং আমরা আফ্রিকায় সত্যিকার ব্যবসা করি কিনা তাহলে আমাদের অনলাইন ব্যবসা একরাতে অনেক বেড়ে যেত।
অবশ্য তিনি ওলুনিয়ি ডেভিড আজাও এর কাছ থেকে সাড়া পেয়েছেন যেখানে উনি বলেছেন যে অবশ্যি আফ্রিকা থেকে ই-কমার্সে অন্য কিছু উপায়ে অংশগ্রহন করা যায়। “কিন্তু আফ্রিকায় একটি সার্বজনীন ই-কমার্স প্লাটফর্ম কি সম্ভব?“
“ই কমার্সে অংশগ্রহন করতে যে কটাই উপায় আছে তা পেতে বেশ কিছু ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা ও প্রচুর অর্থ লাগে”।
এটাও সত্যি, কিন্তু একটা মাত্রা পর্যন্ত। এরিক হার্সম্যান অবশ্যি মূল ধারার অর্থ আদান প্রদানের ব্যবস্থা ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড মাথায় রেখেই কথাটা বলেছিলেন। মূলত: মাস্টার কার্ড আর ভিসা মাথায় রেখেও একজন আফ্রিকান ব্যবসায়ী ই-কমাসে অংশগ্রহন করতে পারেন।
তিনি এর পরে কিছু অনলাইন অর্থ আদান প্রদানের নিয়মের তালিকা দিয়েছেন যার মাধ্যমে যে কোন আফ্রিকান দেশ থেকে ই-কমার্সে অংশগ্রহন করা যাবে তার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি এই ভাবে শেষ করেছেন যেঃ
আমার বিশ্বাস আমি প্রমান করতে পেরেছি যে আফ্রিকার ব্যবসায়ীরা আজকেও ই-কমার্সে অংশগ্রহন করতে পারেন। আমি আপনার দৃষ্টিকোন থেকে বুঝতে পারি – এরিক হার্সম্যান- কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে আপনার আফ্রিকান ই-কমার্সের প্লাটফর্ম তখনই সম্ভব যদি আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে আরো শক্ত অর্থনৈতিক বন্ধন থাকতো। একটি মোর্চা যাদের একই অথনৈতিক নীতিমালা আর পলিসি থাকতো…যেমন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ান।
কিন্তু আজ আফ্রিকায় এই অবস্থা নেই। এমন কি আঞ্চলিক সংস্থারা (যেমন ইকোয়াস) অর্থনৈতিকভাবে একত্রিত নয় যদিও চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনার চিন্তার মডেল ইউরোপে আমার জানা মতে দুটো আছে আর তারা ভালো কাজ করে ইউরোপিয়ানদের জন্যঃ মানিবুকার্স এবং ক্রনোপে।
আফ্রিকান ই-কমাস প্লাটফর্ম কি সম্ভব? হ্যা, সম্ভব। কিন্তু আফ্রিকার দেশগুলোকে একত্র হতে হবে তা সম্ভব করার জন্য। অন্য সব কিছু আপনা আপনি হবে।
গ্রান্ডইওজ পারলর সংলাপে অংশগ্রহন করেছেন এই প্রশ্ন করেঃ আফ্রিকায় কি এয়ারটাইম ড্রিভেন ই-কমার্স চলতে পারে?
অনুরুপ প্যান আফ্রিকান আলোচনা রয়েছে যেমন এরিক ডেভিডের ব্লগোস্ফিয়ার এবং মূলস্রোত মিডিয়া বিতর্ক। কিন্তু আমি মহাদেশটির সামাজিক-অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুভব করি- তাদের বুদ্ধিমত্তার আবেদন স্বীকার করেও , ঐ কথোপকথনের অনেককিছুই প্রথমেই উড়িয়ে দেয়া যায়। অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে যা বেশীরভাগ প্যান আফ্রিকান ধারনাকেই সংখ্যাগুরু লোকের বোঝার জন্যে কঠিন করে দেয় – যদিও এগুলো অসম্ভব নয়। আমাকে ভুল বুঝবেন না, প্যান আফ্রিকানিজম একটি মহান এবং আকর্ষনীয় ধারনা- কে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং দ্বিতীয় জনবহুল মহাদেশে প্রবেশাধিকার না রাখতে চাইবে?
এমনকি নাইজেরিয়াতে, যা আমার সর্বাপেক্ষা পরিচিত -এবং এর বর্ধিতাংশ, পশ্চিম আফ্রিকান উপঅন্চলের সঙ্গে একটি অনলাইন অর্থপ্রদান সিস্টেমের সৃষ্টি যা “ব্যান্ক এবং বাহকের আজ্ঞাবহ” এখনও কঠিন কিন্তু এই বাধা অতিক্রম করার একটি ভাল সুযোগ রয়েছে।
গ্রান্ডইওজ পারলর এই প্রশ্নটি করেছেন:
আমি খুঁজে পেয়েছি নাইজেরিয়ানদের সবচেয়ে একক সাধারন বৈশিষ্ট্য- অনানুষ্ঠানিক অর্থব্যবস্থা সহ- যে তারা সবাই টেলিফোনের জন্যে এয়ারটাইম মিনিট ক্রয় করে। ঐ মিনিট কিছু কি ব্যবহার করা যায় অনলাইন লেনদেন এবং ই-কমার্সের জন্য আইনত: মুল্য পরিশোধের উপায় হিসেবে?
আপনি কি আফ্রিকাতে একটি অনলাইন ব্যবসা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে আছেন? যদি তাই হয় তাহলে আপনি কি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন? আপনি কি ব্লগাররা থেকে কোন পরামর্শ নিয়েছেন? দয়া করে আপনার মন্তব্য পোষ্ট করার মধ্যে কথোপকথনে যোগদান করুন।
-ডেভিড আজাও