চাক দে ইন্ডিয়া – এগিয়ে যাও ভারত

‘চাক দে ইন্ডিয়া’ (এগিয়ে যাও ভারত) হচ্ছে একটি বলিউড চলচিত্র যেটি গত মাসে মুক্তি পেয়েছে এবং এটি ভারতীয়দের মানসিকতায় যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে। ভারতে ‘চাক দে ইন্ডিয়া’ একধরনের যাদুমন্ত্রের মত হয়ে গেছে আর ভারতীয় বানিজ্য বিদ্যাপীঠরা চিন্তা করছে এটিকে তাদের সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত করতে। ছবিটি একজন হকি কোচের দুরদৃষ্টি আর সংকল্পের কথা বলে যে দলের মনোবল আর চিন্তার পরিবর্তন করে তাদেরকে বিশ্বকাপ জিততে সাহায্য করে।

সাধারণত: ভারতীয়রা ক্রিকেট ছাড়া আর কোন খেলার জন্য খুব বেশি পরিচিত না। হ্যা, ক্রিকেটে ভারতীয় ক্রিকেট খেলোয়াররা ভালোই খেলে আর বেশ কিছু ম্যাচ তারা জিতেছেও। কিন্তু এবারের জোহেনেসবাগের টুয়েন্টি২০ বিশ্বকাপে মহিন্দ্র সিং ধ্বনির নেতৃত্বে ভারতীয় ক্রিকেট দল খুবই ভালো খেলে ২৩ বছর পরে ক্রিকেটের কোন বিশ্বকাপ জিতেছে।

অনেক ব্লগার মনে করছেন যে ‘চাক দে ইন্ডিয়ার’ প্রভাবে কি ভারত ক্রিকেট, ফুটবল আর হকিতে একনাগাড়ে জিতল?

সঞ্জয় গোয়েলের লেখায় একবাক্যে অনেক ব্লগারের অনুভুতি প্রকাশিত হয়েছেঃ

“কোনভাবে শাহরুখ খানের ‘চাক দে ইন্ডিয়া'র মুক্তি ভারতীয় খেলার একটা খুব ভালো সময়ের সাথে মিলে গেছে।”

কে ওয়াল্র্ড এর কার্তিক এর ধারনাও অনেকটা একই ধরনের আর তিনিও মনে করেন যে হয়তোবা ‘চাক দে ইন্ডিয়া'র মুক্তি ভারতের খেলার জগতে এতো কটি বিজয়ের জন্য দায়ী। তিনি লিখেছেনঃ

ভাবছি একটা ছবি কি একটি জাতির জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনতে পারে? একটা যৌক্তিক উত্তর হলো, “না;” শুধু না নয় একটি বড় “না”।

কিন্তু আমরা এই তারিখগুলো দেখি

১) আগাস্ট ১০ ২০০৭ – শাহরুখ খান অভিনীত চাক দে ইন্ডিয়ার মুক্তি

২) আগাস্ট ২৯, ২০০৭ – ইন্ডিয়া ফুটবলে নেহেরু কাপ জিতল

৩) সেপ্টেম্বর ৯, ২০০৭ – হকিতে ইন্ডিয়া এশিয়া কাপ জিতল

৪) সেপ্টেম্বর ২৪, ২০০৭ – ইন্ডিয়া ক্রিকেটে টি ২০ বিশ্বকাপ জিতল

আপনাকে কার্তিকের ব্লগ পড়তে হবে এই বিজয়, ভারতীয় খেলার টিম আর বলিউডের একটি ছবির মধ্যকার সম্পর্ককে তিনি কি ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন তা জানার জন্য।

মাটারিং দ্যাট ম্যাটারস ব্লগ তার ‘চাক দে ইন্ডিয়া’ লেখাতে লিখেছেঃ

“এই বিজয় অন্য দুই বিজয়কে ছাড়িয়ে গেছে কারন আমি ২২ বছর অপেক্ষা করেছি এতো আনন্দিত হওয়ার জন্য। অভিনন্দন ভারতীয় দল-টি২০ বিজয়ী – চাক দে ইন্ডিয়া…”

আনন্দ কৃশ্নান'স মিউসিং লিখেছেঃ

“আসল কথা হলো যে বিগত কয়েক মাসে ভারতীয় টেনিস, ব্যাডমিন্টন, হকি আর ফুটবল দল ভারতকে সেই পর্যায়ে নিয়ে গেছে যেখানে আগে অ-ভারতীয়রা ছিল। ভারতীয় খেলার জগতের এই বিশাল ব্যাপ্তির জন্য আমার বলতে ইচ্ছা করছে ‘চাক দে ইন্ডিয়া'!”

এই চাক দে ইন্ডিয়ার প্রভাব ডেভ অফ ডেভ'স ট্রাভেল ব্লগের লেখাতেও দেখা গেছে। নিজে একজন বেসবলের ভক্ত হলেও ডেভের মনে হচ্ছে যে সে ক্রিকেটের ভক্ত হয়ে যাবে। তার ‘চাক দে ইন্ডিয়া’ নামক লেখায় জোহানেসবার্গে ভারত -পাকিস্তানের মধ্যে ফাইনাল খেলার সময় পুরো জাতির মনোভাব সে এখানে তুলে ধরেছে।

“ভাগ্যক্রমে আমার জন্য, খেলাটি দেরিতে শুরু হয়েছিল যখন পাকিস্তান খেলাতে ফিরে আসছে। তারা বিজয়ের দোরগোড়ায় ছিল, আর সারা জাতির মধ্যে একটা হতাশা ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন হঠাৎ করে জাদুর মতো ভারত জিতে গেল। শেষ ক্যাচ ধরার সাথে সাথে মুম্বাই তে পটকা ফোটা শুরু হলো।”

আর গতকাল যখন বিজয়ী দল বিমানবন্দরে নামল তাদেরকে বীরের সম্বর্ধনা দেয়া হলো আর লোকের ভীড়ে পুরো শহর মনে হয় থেমে গিয়েছিল। ভেবে দেখুন তো কোন গানটা বাজানো হচ্ছিল যখন এই দল শহর দিয়ে ফিরছে? চাক দে ইন্ডিয়া।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .