গতকালের বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশের পর মিয়ানমার সরকার প্রতিবাদকারীদের রাস্তা থেকে দূরে থাকতে বলেছে। প্রতিবাদকারীদের নেতৃত্ব দিচ্ছে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা আর তারা দাবী করছে জিনিষের মূল্যহ্রাস এবং আরো স্বাধীনতা। আশেপাশের দেশ থেকে ব্লগাররা এ ব্যাপারে তাদের চিন্তা আর সমর্থন প্রকাশ করছেন তাদের লেখনীর মাধ্যমে।
সিটিজেন অন মার্স ব্লগ ফিলিপাইনে যখন এ রকম পরিস্থিতি ছিল সেই সময়ের কথা মনে করছে।
ইয়াঙ্গুনের গন বিক্ষোভে যাই হোক না কেন আমি আশা করি বেশী উগ্র কিছু হবে না যদিও সরকারের বিরুদ্ধে যে কোন পদক্ষেপ নেয়ায় সংঘাত (যে কোন রকম) হতে পারে। আমি আশা করি জেনারেলরা তাদের ধৈর্য রাখবেন আর প্রতিবাদকারীদের প্রতি ধৈর্যচ্যুত হয়ে অমানবিক কোন ব্যবহার করবেন না। একবার এই একই পরিস্থিতি হয়েছিল – বা দু'বার – প্রথমে ১৯৮৬ ইডিএসএ এর সাথে আর আবার ১৯৯১ এ বিগত প্রেসিডেন্ট জোসেফ এস্ত্রাডাকে যখন নামতে বাধ্য করা হয়।
ডায়াক্রিটিক যে ব্লগ এর আগে ভিয়াতনাম আর মিয়ানমারের মধ্যকার উষ্ণ সম্পর্ক নিয়ে লিখেছিল এবার ভিয়েতনামী পত্রিকায় এই বিক্ষোভ সম্বন্ধে ঠিকমত না লেখার সমালোচনা করেছেন।
তুই ত্রে ভিয়েতনামের সব থেকে জনপ্রিয় পত্রিকা ৫টি বাক্য লিখেছে এই ব্যাপারে আর থান নাইন ৭টি বাক্যে ঘটনাটি লিখেছে যেখানে আন্তর্জাতিক পত্রিকাগুলো প্রথম পাতার সম্পাদকীয় ছাপিয়েছে।
সে আরো বলেছে,
আমাদের বার্মীজ সহকর্মী জানিয়েছে যে কানাঘুষা শোনা যাচ্ছে যে আজ সন্ধ্যায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হবে যাতে আর কোন ছবি বা ভিডিও যা ইন্টারনেটে ব্যাপক প্রচারিত হচ্ছে তা আর না বের হয়।
‘আমরা তোমাদের সাথে আছি মিয়ানমার’ নামক পোস্টে কম্বোডিয়ার ব্লগার সমঙ্কল তেঙ বৌদ্ধ ভিক্ষুদের রাজনৈতিক ব্যাপারে জড়িত হওয়ার জন্য যে সমালোচনা করে মন্তব্য করা হয়েছে তার জবাব দিয়েছেনঃ
আমি জানি যে বুদ্ধর শিক্ষায় ভিক্ষুদের সংযত হতে হবে আর তাদের কোনভাবে রাজনীতিতে জড়িত হওয়া উচিত না। কিন্তু আমরা যদি যুক্তি দিয়ে চিন্তা করি তাহলে তারাও দেশের নাগরিক। দেশে যা কিছু হয় তা সাধারন মানুষ আর ভিক্ষুদের সমানভাবে প্রভাবিত করে। খেমারুজদের সময়কে আমরা উদাহরন হিসাবে নিতে পারি। হাজার হাজার ভিক্ষুকে হত্যা করা হয়েছিল। অনেক কারনে আমার মনে হয়না তাদের চুপ থাকা উচিত। যখন সমাজে তাদের হস্তক্ষেপ দরকার তখন তাদের কথা শোনা উচিত।
সিঙ্গাপুরের ব্লগার বেরনার্ড লিওং চায় মিয়ানমারে রক্তপাত রোধ করতে আসিয়ান আর চীনের হস্তক্ষেপ:
বিগত ২০ বছরে তিয়েনান্মেন বাদ দিয়ে এশিয়ার এই ধরনের প্রতিবাদগুলো (শুধুমাত্র ফিলিপাইন আর ইন্দোনেশিয়াতে এশিয়ান অথনৈতিক বিপর্যয়ের পর) রক্তপাতের মাধ্যমে শেষ হয়েছে। যখন সামরিক সরকার তাদের বাহিনীকে রাস্তায় নামিয়েছে শীঘ্রি একটি রক্তপাত হতে পারে। এমন হলে অনেক নিরাপরাধ লোক মারা যাবে। তাহলে, বিশ্ব এটি রোধ করতে কি করবে? আমেরিকা অবোরোধ শুরু করেছে, কিন্তু দেখতে হবে যে চীন এই ব্যাপারে কি করে। আমার মনে হয় আসিয়ান হস্তক্ষেপ করবে না, অন্য কথায় কিছু করবে না, আর যা হওয়ার তা হতে দেবে , ব্যক্তিগতভাবে আমি যার বিপক্ষে।
সিঙ্গাপুরের আরেকজন ব্লগ মনসুন ব্লগিং আশা করে যে এই সংকটের ফলে মিয়ানমারে একটা পরিবর্তন আসবে।
আমরা সবাই মিয়ানমারে অগ্রগতি দেখতে চাই, এই দেশ দুই যুগের অর্থনৈতিক উন্নয়ন থেকে রহিত যেখানে বাদবাকী দক্ষিনপূর্ব এশিয়ার দেশগুলো অনেক এগিয়ে। তাই মিয়ানমারের এখন সময় জেগে ওঠার এবং অন্য দেশগুলোর মতো অগ্রগতিতে অংশগ্রহন করা আর উন্নয়নের ভাগ নেয়া। কি ধরনের সরকার সেটা গুরুত্বপূর্ণ না যদি জনগনের খেয়াল রাখা হয় তাহলে তাদের বাচ্চারা ভালো থাকবে।