দক্ষিন আফ্রিকার স্বাস্থ্য মন্ত্রী মানতো শাবালালা- মিসিমাং সম্প্রতি তার অতিরিক্ত মদ্যপান, চুরির অভিযোগ আর লিভার ট্রান্সপ্লান্টের জন্য অযাচিত চাপ প্রয়োগের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। জনগন এই ব্যাপারে খুবই রাগান্বিত কারন এই সব অভিযোগের মাধ্যমে মন্ত্রীর স্বাস্থ্য দপ্তরের উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের খারাপ ফলাফল আর এইচআইভি চিকিৎসার ক্ষেত্রে তার বিতর্কিত মনোভাবের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। সাম্প্রতিক সময়ে এ বিতর্কে যোগ হয়েছে প্রেসিডেন্টের তাকে বহিষ্কারে অস্বীকৃতি, আর মন্ত্রীর তার সমালোচনাকারীদের উদ্দেশ্যে ঘোষনা যে তিনি পদ ছাড়বেন না। এর পর থেকে ডেমক্রাটিক এলায়েন্স তার পদত্যাগের দাবি বহুবার করেছেন, আর প্রেসিডেন্ট এম্বেকি যে সবাইকে মন্ত্রীর খারাপ ব্যবহারের ব্যাপারে সাক্ষ্য দিতে বলেছিলেন তাতেও তারা সাড়া দিয়েছে।
এই মাসের প্রথমে প্রেসিডেন্ট আহ্বান করেছিলেন যে কোন মন্ত্রীর বা উপমন্ত্রীর যদি তার দায়িত্বের অপব্যবহার বা অবহেলা করে থাকে তার প্রমান তার কাছে দিতে। জিল্লে বলেছেন যে সাম্প্রতিক শাবালালা- মিসিমাং এর বিরদ্ধে অভিযোগ আর তার চাপ প্রয়োগ করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করিয়েছেন– এটি তার দরকার ছিল কারন অধিক মদ্যপানের ফলে তিনি লিভারটি নষ্ট করেছেন। এছাড়াও বতসোয়ানায় চুরির অভিযোগ তার বিরুদ্ধে ছিল ফলে তার মুক্তি নির্ভর করছিল অখন্ডনীয় প্রমানের উপর। “খুব খারাপ ব্যাবস্থাপনা আর খারাপ বিচারের দ্বারা তিনি তার দপ্তরের মান, কর্মক্ষমতা আর নৈতিকতা নষ্ট করছেন,” বলেন জিল্লি।
দক্ষিন আফ্রিকার ব্লগোস্ফিয়ার এই ব্যাপারটি নিয়ে সরগরম হয়ে আছে আর বিভিন্ন ব্লগাররা তাদের মতামত, কার্টুন আর মজার মজার বিষয় লিখছেঃ
মেইল ফরোয়ার্ডসের মাধ্যমে:
কি করে আঘাত পেয়ে কারও লিভার ট্রান্সপ্লান্টের দরকার হয় যখন মদ্যপানের জন্য তার আগেই লিভার সিরোসিস ছিল, প্রাইভেট হাসপাতালে মাসের পর মাস থাকে (করদাতার টাকায়) আর বিটরুটকে এইচআইভি চিকিৎসার ঔষধ হিসেবে বিক্রি করেও পার পেয়ে যায়? আমি তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি? ছি!!! এটা চুড়ান্ত অযোগ্যতা আর বহিষ্কারের জন্য যথেষ্ট কারন, তাই নয় কি?
কেউ কেউ মজা করে ব্যাপারটা হাল্কা করার চেষ্টা করেছেনঃ
এক্ষুনি বলা হয়েছে যে জোহানেসবার্গ জেনারেল হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করা হবে। ১লা সেপ্টেম্বর ২০০৭ থেকে এটির নাম হবে “মানতো শাবালালা- মিসিমাং পাব এন্ড গ্রিল”। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের নাম পালটিয়ে হবে “আমাগ্লুগ -গ্লুগ” ( সাউথ আফ্রিকার একটা বিখ্যাত বিজ্ঞাপনকে অনুসরন করে) ।
দ্য সাউথআফ্রিকানইনসাল্ট এর সৌজন্যে:
চারিদিকে অনেক ধোঁয়া আর ধোঁয়া মানেই কোথাও আগুন আছে। আমরা কি তার মদ্যপান বা সামান্য চুরির কথা আরো শুনবো? একটি শিরোনাম আমি দেখতে খুবই পছন্দ করব আর তা হলো মানতো পদত্যাগ করলো!
আমি আশ্চর্য হয়েছি দেখে যে কোন বিজ্ঞাপনদাতা মানতোগেটের শেষ সংস্করনের এর ফলে যে সুযোগের সৃষ্টি হয়েছে তার সদ্ব্যবহার করেনি। ১৯৯০ এর দিকে এই ধরনের বিজ্ঞাপন খুব কম ছিলনা। যখন মেরি মেটকালফ, তখনকার শিক্ষামন্ত্রী, বলেছিলেন যে ম্যাট্রিকের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গেলে তিনি নিজের টুপি খাবেন, আর যখন সেটি ফাঁস হল তখন নান্দো কোম্পানির পেরি-পেরি সস এর একটি বিজ্ঞাপন বেরিয়েছিল এই খবরের ক্লিপিংয়ের সাথে “পরিবেশনের পরামর্শ” শব্দগুলো নিয়ে। যখন ২ দিনের জন্য প্রেসিডেন্ট ম্যান্ডেলা দেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন মাঙ্গসুথু বুথেলিজিকে দায়িত্ব দিয়ে তখন বিএমডাব্লিউ একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছিল, “জনাব প্রেসিডেন্ট, কেন মাত্র ৪৮ ঘন্টার পূর্ণ ক্ষমতার জন্য রাজি হলেন?”
আরো অনেক ব্লগ যোগদান করেছে এই বিতর্কে আর এই ব্যাপারটা মিডিয়ার অনেকটা সময় খেয়ে নিয়েছে। এএনসির সদস্য আর সমর্থকরা মন্ত্রীকে জনগনের মতামতের ভিত্তিতে বিচারে বসানোর জন্য মিডিয়াকে তিরষ্কার করেছে আর প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক সততার জন্য অজুহাত তৈরি করেছে।
-মুহাম্মদ