গ্রীস পুড়ছে

আমরা সবাই ইতিমধ্যে নিশ্চয়ই খবরটি শুনেছি: গ্রীস আগুনে জ্বলছে। আজ আগুন ছড়িয়েছে প্রাচীন শহন অলিম্পিয়াতে, যেটি অলিম্পিকস ক্রীড়ানুষ্ঠানের জন্মভূমি। এখানে অবস্থিত অলিম্পিয়া যাদুঘরে গ্রীসের নামকরা প্রত্নতাত্বিক সংগ্রহগুলো রাখা আছে।

এথেন্স
আগুনের কবলে এথেন্স (ছবি: ফ্লিকার ব্যবহারকারী আলেফবেতাকের সৌজন্যে)

এথেন্সের চারদিক যখন আগুনে পুড়ছে গ্রিক ব্লগোস্ফীয়ার এনিয়ে আলোচনা করছেন। এলাস ডেভিল শুধু একটি নামকরা গ্রীক দৈনিকের একটি হেডলাইনেরই পুনরাবৃত্তি করেছেন:

হেডলাইনটি অনুবাদ কররে দাড়ায় “আমরা বাকরুদ্ধ”

গ্রীসে বাসরত একজন আমেরিকান নাগরিক তার ক্যালীফোর্নিয়াক্যাট ব্লগে কি হচ্ছে তার একটি বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরছেন। তিনি আরও লিপিবদ্ধ করেছেন উল্লেখযোগ্য অগ্নিকান্ডগুলোর তালিকা, এগুলোর পেছনের ঘটনা এবং মানুষ কি করে সাহায্য করতে পারে:

১) শুকনো ঘাস, পাতা বা গাছের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কখনও সিগারেটের টুকরো ফেলবেন না – অনেক বনের আগুন এভাবেই শুরু হয়েছে।
২) ময়লা পোড়াবেন না
৩) রান্নার চুলোর আগুন যেন নিয়ন্ত্রনে থাকে এদিকে খেয়াল রাখবেন। জ্বলন্ত কয়লা বা ছাইয়ের দিকে লক্ষ্য রাখবেন কারন এগুলো হাওয়ায় ছড়িয়ে শুকনো পাতা বা ঘাসের সংস্পর্ষে আসতে পারে।
৪) বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তারের কাছের গাছ কাটার জন্যে স্থানীয় মিউনিসিপালিটির কাছে অভিযোগ করুন।
৫) প্রতিফলনকারী আয়নাকে সুর্যালোক থেকে দুরে রাখুন।
৬) গ্রামান্চল বা লোকালয় থেকে দুরের বাড়ীতে অগ্নিনির্বাপক সরন্জাম রাখুন: ফায়ার এক্সটিন্গুইশার, একটি পানির আধার হোস/পাম্পসহ, পশমের কম্বল, ঝাড়ু, মই, বুট এবং প্রাথমিক চিকিৎসার সরন্জাম।
৭) কিছু লোক তাদের দরকারী ও মুল্যবান সম্পদ বা কাগজপত্র অগ্নিরোধক সিন্দুকে রাখেন।

রাশিয়ান হেলিকপ্টার
অগ্নিনির্বাপনকারী রাশিয়ান হেলিকপ্টার (ছবি: ফ্লিকার ব্যবহারকারী এনএক্সডিএক্স)

এথেনা ব্লগের টিনা বলছেন গ্লোবাল ওয়ার্মিং এবং দুস্কৃতিকারীদের জন্যেই এই দুর্বিপাকের জন্যে দায়ী।

গত দুই দিন ধরে আমি অন্যান্য গ্রীকবাসীর জন্যে গ্রীসের সব অগ্নিকান্ডের খবর রাখছি। আমার প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে ও রাগ হচ্ছে। আমার কষ্ট হচ্ছে এতগুলো মানুষ মরল তার জন্যে, এই পুড়ে যাওয়া বনগুলোর জন্যে, চিরতরে হারিয়ে যাওয়া ইকোসিস্টেমের জন্যে। এই ‘ইকোলজিকাল ডিজাস্টার’ গ্রীস বা মধ্য সাগরের অন্য অন্চলে আগে দেখা যায়নি। আমি রাগান্বিত হচ্ছি এবং বিষ্মিত হচ্ছি। গত কয়েকদিন আমি এইসব অগ্নিকান্ডের পেছনে বেশ কটি সম্ভাব্য কারন শুনেছি: দুস্কৃতিকারীদের দ্বারা অগ্নিকান্ড অধিক উচ্চারিত কারন। মনে হচ্ছে অনেক লোকেরই মূল উদ্দেশ্য গ্রীসকে ধ্বংস করা। এই সম্ভাবনাটাকে আমি উড়িয়ে দিচ্ছিনা। কিন্তু আমি বিষ্মিত হচ্ছি যে কোথাও আমি এর চেয়ে যুক্তিযুক্ত কারন খুঁজি পাইনি: ‘আবহাওয়ার পরিবর্তন’ বা ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং'।

বেটাবাগ অগ্নিকান্ড নিয়ে তার নিজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন এথেন্সে তার বাসা থেকে:

এথেন্সের চারপাশে বনগুলো আগুনে জ্বলছে। অগ্নিনির্বাপক প্লেনগুলো আমার বাড়ীর উপর দিয়ে গুন্জন করে চলে যাচ্ছে। আমরা ব্যালকনিতে গিয়ে কয়েকটি ক্যানাডা এয়ারের প্লেন, একটি রাশিয়ান বেরেভ এবং একটি হেলিকপ্টার দেখলাম। চারদিকে প্রচুর ধোঁয়া এবং ইমিত্তোর আগুন (যা আমরা পষ্ট দেখতে পাচ্ছি) ছাড়া একটি বিশাল হলুদ মেঘ দেখা যাচ্ছে যেটি আগুনের ধোঁয়া না মেঘ সেটা বোঝা যাচ্ছে না।

এথেন্স

ইভিয়ার বনের আগুন থেকে ধোঁয়ার মেঘ (ছবি: ফ্লিকার ইউজার এনএক্সডিএক্স)

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .