ভারতের পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপতি আবুল কালাম অনেক ভারতীয় বিজ্ঞানীদের মধ্যে একজন যিনি দেশ ছেড়ে যাননি এবং এই উল্টো মেধা পাচার (রিভার্স ব্রেন ড্রেইন) চেয়েছিলেন। সাম্প্রতিককালে সংবাদ মাধ্যমগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে শুধূ এই উল্টো মেধা পাচার সংক্রান্ত খবর জানানো ছাড়াও এই সংবাদও জানাতে যে এখন বিপুল পরিমান বিদেশী ছাত্ররাও ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়তে চাইছে।
নিতা তার ব্লগ “মাই রাইটিংস” এ এত বছর পরে এটি কেন ঘটছে সেই প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করেছেন। তিনি এও বিশ্বাস করেন যে এমনটি হত না যদি না আমেরিকার ভিসার কড়াকড়ি না থাকত।
” এটি সত্যিই দু:খজনক যে ভারতকে আমেরিকার ভিসার কঠোরতার উপর নির্ভর করে থাকতে হয় এইসব মেধাকে দেশে ফিরে পেতে, মেধা অনুযায়ী তাদের আমন্ত্রন বা সুবিধা দিয়ে নয়। এছাড়াও যারা ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন তারা তা করেন পরিবারের কাছে থাকার জন্যে, অথবা দেশপ্রেমী চেতনার জন্যে..কিন্তু এদের মধ্যে কতজন আসে ভারত সরকারের বিনিয়োগ সংক্রান্ত সুবিধার জন্যে যা মেধাভিত্তিক এবং সবার জন্যে সমান সুবিধা দেয়? আমি দেখছি যে ভারতকে আরও বহুদুর যেতে হবে এইসব ভবিষ্যৎ উদ্দোক্তাদের উপর পরিপূর্ণ আস্থা রাখার জন্যে এবং এই জন্যেই আমেরিকা আজ প্রযুক্তিগত উদ্যোগে অনেক উপরে। ফলে সেদেশে এইসব বিদেশী মেধাকে দুরে রাখার চেষ্টা করা হলেও সবাই সে দেশেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে।”
যখন নিতা আমাদের এভাবে ভাবিয়েছে কিউরিয়াস ক্যাট তার “সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং ব্লগ” এ লিখছেন “ব্রেন ড্রেইন নিয়ে আমেরিকার সুবিধা কমে যাচ্ছে“। তিনি বিশ্বাস করেন যে এ প্রবনতা চলতেই থাকবে:
আমি মনে করি না যে এমনটা হ্রাস পেতে থাকবে। এবং আমি এও বিশ্বাস করি যে আগামী ২৫ বছরে আরও বেশী পরিমানে আমেরিকায় জন্মগ্রহন করা বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী ও উদ্যোক্তারা অন্য দেশকে তাদের কর্মস্থল হিসেবে বেছে নেবেন। আমি একমত যে আমেরিকার নিজেদের স্বার্থের জন্যেই বর্তমান (তাদের দেশে) মেধা পাচারের সুবিধাটুকু তারা ধরে রাখতে চাইবেন।
১৯৯২ থেকে বর্তমানে অনেক কিছুই বদলেছে এবং কৃষ্নকুমার যুক্তি দিয়ে দেখাচ্ছেন কিভাবে। তিনি বলছেন বদলে যাওয়া ধারা সম্পর্কে; উন্নত জীবনযাত্রার জন্যে বিদেশে যাওয়ার মানসিকতা এখন পুরনো হয়ে গেছে, তিনি মনে করেন।
“আমি প্রকৌশলবিদ্যা পাশ করেছি ১৯৯২ সালে, সফ্টওয়ারের যুগে। এটা তখন একটি আদর্শ ছিল যে এরপর জিআরই পাশ করে আমেরিকায় উচ্চ শিক্ষার চেষ্টা করা যাতে বিদেশে ভবিষ্যতে একটি চাকরি পাওয়া যায় এবং প্রবাসী ভারতীয় (এনআরআই) হিসেবে জীবন-যাপন করা যায়। এবং অবশ্যই যারা এটি পারত না তাদের পরিচিত কেউ দুবাই বা কাছের কোন দেশে থাকত যারা তাদের একটি ভাল চাকরি যোগাড় করে দিত। আমার মনে আছে, দ্যা টাইমস অফ ইন্ডিয়া (বোম্বে) বিদেশে চাকুরীর জন্যে একটি বিশেষ সংস্করন প্রকাশ করত এবং অনেকেই সেটি সপ্তাহের পর সপ্তাহ নিরবিচ্ছিন্নভাবে পড়ত।”
“আমার মত আরআইদের (দেশে বসবাসরত ভারতীয়) এটি দেখে আনন্দ লাগে যে এইসব ভারতীয় যারা স্বভুম ছেড়ে গিয়েছিল এখন অনুভব করছে যে ভারত কর্মক্ষেত্র হিসেবে খুব খারাপ নয়… আজ প্রযুক্তির কল্যানে যে কেউ যে কোন স্থানে অবস্থান করেই কাজ করতে পারে… এবং এটি স্বীকার করতেই হবে… নিজের ছেলেমেয়েকে গড়ে তোলার জন্যে এর চেয়ে ভাল দেশ আর নেই।”