মরক্কোতে ঘটনাবহুল সপ্তাহ ছিল এটি। প্রথমে একটা মৃদু ভূমিকম্প রবিবার রাতে সারা দেশকে নাড়া দিয়েছে, তার পর সোমবার সকালে মেকনেসে একটা আত্মঘাতি বোমা হামলার চেষ্টা করা হয়েছে (শেষ এমন চেষ্টা করা হয়েছিল গত এপ্রিলে)। বোমা হামলাকারিকে জরডানের আল বাওয়াবা খবরের সাইটে হিসাম দোক্কালি নামক ৩০ বছরের ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে সনাক্ত করা হয়েছে। হামলায় কেউ মারা যায়নি, এমনকি দোক্কালি পর্যন্ত না, শুধু তার একটা হাত উড়ে গেছে। মনে করা হচ্ছে যে মেকনেস এর কেন্দ্র বা মেদিনাতে প্লেস হেদিম এর কাছে পার্ক করা একটি টুর বাসকে সে লক্ষ্য করেছিল ।
প্লেস হেদিম এর ছবি (মেকনেস, মরক্কো) তুলেছেন জিলিয়ান ইয়র্ক।
এই চেষ্টার পর অনেক ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ব্লগার মিরটুস জিজ্ঞেস করেছেন, “কোথা থেকে তারা এইসব বোকা লোককে পায়?”
দ্যা মরক্কোর রিপোর্ট কিছুটা কঠোর মনোভাবাপন্ন ছিলঃ
“খুব ভালো, আমি মরক্কো থেকে দুই সপ্তাহের কম সময় বাইরে ছিলাম আর এই সময়ের মধ্যে একজন প্লেস হেদিমে নিজেকে বোমা হিসেবে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি সে নিজেকেও মারতে পারেনি। ঠিক একজন মরক্কান আত্মঘাতী বোমা হামলাকারি।”
এই লেখাটি বেশ কিছু কৌতুহল-উদ্দীপক মন্তব্যের সৃষ্টি করেছে – আদিলস্কি আহত হয়েছেনঃ
মরক্কোতে সব কিছু কাপছে। মাটি, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মিডিয়া আর মানুষ। আমার জানতে ইচ্ছে করে যে ওই লোকের মাথায় কি চলছিল যখন সে একটা বুটেন কন্টেনার নিয়ে নিজেকে ওড়াতে গিয়েছিল। ভালো কথা যে সবাই নিরাপদ আছে কিন্তু মরক্কান যুবকদের মধ্যে আত্মঘাতী মনোভাব ভীতিকর।
জুসেফ বোমা হামলাকারী অযোগ্যতার জন্য আল্লাহকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এলে এই ব্যাপারটি আরেকটু প্রসারিত করে বলেছেনঃ
তারা এতোটাই অযোগ্য যে তারা বুঝতে পারেনি যে আল্লাহ তাদের নিরীহ লোকদের ক্ষতি করতে সাহায্য করছে না!
এন্জে ব্লও খুব রেগে ছিলেনঃ
অনেকের মত এই আর এক দুর্বল যে মনে করে যে সংঘাত সব কিছুর সমাধান করে দেবে।
লাইফ কল্ড এর স্যামুয়েল গুন্টার, যিনি মরক্কোতে পিস কর্পস এর সেচ্ছাসেবক হিসাবে আছেন, তার ব্লগের মাধ্যমে লিখেছেনঃ
মরক্কোতে আবার একটা বোমা হামলা হয়েছে। এবার তা কাসাব্লাঙ্কাতে নয় বরং মেকনেসে হয়েছে। মেকনেস আমার জন্য কাসাব্লান্কা থেকে কাছে হলেও প্রায় ১৪০ কি.মি. দূরে। তাই আমার জন্য চিন্তা করোনা, চিন্তা কর মরক্কো আর আমাদের পৃথিবীর জন্য আর যদি দোয়া করো তো আমাদের সবার জন্য দোয়া করো।
আমরা সবাই আমাদের জীবনের জন্য যুদ্ধ করি। আমরা আমাদের জীবনের ঔদাসীন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি আর আমাদের সবার মনে ঘৃনা আর অজ্ঞানতার প্রভাব আছে। আমরা যত দিন “আমরা আর তোমরার” পৃথিবীতে থাকব ততদিন যুদ্ধ থাকবে। যতদিন না আমরা বুঝতে পারি যে আমরা ছাড়া আর কিছু নেই ততদিন এই যুদ্ধ থামবে না। এখানের কয়েকজন ওই ফাকে দাঁড়িয়ে দূর পরিবারকে একত্র করার চেষ্টা করছে, অথবা মনে করিয়ে দিচ্ছে যে আমরা একটা পরিবার।
এখানে সব সময় সন্দেহ আছে, কারন কখনো কখনো নৈকট্যটা প্রকাশিত নয়। কিন্তু তা আছে।