মালদ্বীপঃ পেডোফাইলদের গোপন স্বর্গরাজ্য

মালদ্বীপের ব্লগাররা দেশে শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের ব্যাপকতা আর সরকারের কঠোর ব্যবস্থা নেয়ায় অপারগতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

মালদ্বীপে সম্প্রতি একটি ঘটনা নিয়ে বেশ তোলপাড় হয়। ধর্ষনের সময় মেয়ে চিৎকার করেনি বলে তার সম্মতি ছিল বিবেচনা করে চার ধর্ষনকারীদের আদালত খুবই কম শাস্তি দিয়েছে। তার উপরে ধর্ষনকারীদের দ্বীপের আর একটি গোষ্টির কাছে নির্বাসন দেয়া হয়েছে যেখানে তারা আবার তাদের শিকার খুঁজতে পারবে। আর এক ঘটনায় এক ছাত্রী পড়ার সময় তার অংকের শিক্ষক তাকে যৌন নীপিড়ন করেছে বলে অভিযোগ করে। স্কুল ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে বিদেশী শিক্ষককে তদন্তের আগে দেশ ছেড়ে চলে যেতে দেয়।

আর এক ঘটনায় গয়ধু দীপের বেশ কয়েকজন মেয়ে অভিযোগ করেছে যে তাদেরকে যৌন নিযাতন করেছে তাদের কোরান শিক্ষক যে গ্রামের ইমামও বটে। সেখানে একটি লোক দেখানো তদন্তের পর ইমামকে সমাজে ফিরতে দেয়া হয়েছে।

মালদীপের হেল্থ ব্লগ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন:

এই যে, আবার হযেছে। তারা আগেও এরকম ব্যাখ্যা গ্রহন করেছে। এবার একটি ১২ বছরের মেয়ে ধর্ষনকারীদের সাথে যৌন কাজে সম্মত হয়েছে বলে প্রমানিত হয়েছে। সে চিৎকার করেনি মানে তো এইনা যে তার মত ছিল। এটি অদ্ভুত, আমার রাগ হচ্ছে। একটি ১২ বছরের মেয়ে আতঙ্কে তো কোন আওয়াজ করতে পারবে না।

এই ব্লগে বলা হয়েছে যে মালদ্বীপের সরকার এই ব্যাপারে নিরব আর ভয়ংকর ভূমিকা পালন করছে

জা'স ব্লগ বিচারকের সমালোচনা করেছেন ধর্ষিতা মেয়েটির যে ধর্ষনে সায় ছিল এই রায়ের।

আমি মাঝে মাঝে মালদ্বীপের খবর দেখি এবং টের পাই যে কি কি পাগলামি হচ্ছে, কিন্তু ৪ জন লোক একটা ১২ বছরের মেয়েকে ধর্ষন করল আর তার ব্যাপারে যা রায় হল তা দেখে আমি রীতিমত বিষ্মিত আর ক্ষুব্ধ।

মালদ্বীপ টুডে “প্যারাডাইস ফর পেডোফাইল” নামক লেখায় মালদ্বীপে শিশুদের যৌন নিপীড়নের ইতিহাস বর্ণনা করেছে এবং এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে দেশের সরকারের অপরাধীদের শাস্তি না দেয়ার আর ক্ষমা করার ইতিহাস রয়েছে।

এই ব্লগ দেশের স্বৈরশাসক মামুন আব্দুল গাইয়ুমকে এই ধরনের অপরাধীদের প্রতি হাল্কা ব্যবস্থা নেয়ায় সমালোচনা করেছে:

মালদ্বীপ যেহেতু কনভেন্সন অন দ্যা রাইটস অফ দ্যা চাইল্ড (সিআরসি) এর একজন স্বাক্ষরকারী, এই সংস্থা মালদ্বীপের সমালোচনা করেছে শিশু অধিকারের খারাপ রেকর্ডের জন্যে। মামুন আব্দুল গাইয়ুম শুধু যে শিশু নির্যাতনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে তাই না, সে তার তিন দশকের শাসনকালে একটাও আইন করেনি শিশুদের যৌন নিপীড়ন থেকে রক্ষা করার জন্য। যার কারনে মালদ্বীপে পেডোফিলিয়ার হার বৃদ্ধি হয়েছে।

এই বছরে প্রকাশিত এক হিসাবে মালদ্বীপে শিশু যৌন নির্যাতনের বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। এই হিসাব অনুযায়ী ১৫-৪৯ বছরের তিন জনের মধ্যে এক জন মহিলা শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের শিকার হযেছে, আর ছয় জনের মধ্যে এক জন বলেছে যে ১৫ বছরের কম বয়সকালে তাকে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। শুধুমাত্র মহিলাদের উপর গুরুত্ব দেয়া হযেছে এই সার্ভেতে আর তাই সমাজ কর্মীরা ঠিকই বলেছেন যে শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের হার আরো বেশি হবে। যদি ছেলে-মেয়ে উভয়ের হিসাব নেয়া হয় তাহলে মালদ্বীপ দক্ষিন এশিয়া এমন কি পৃথিবীর সব থেকে বেশি সংখ্যক শিশু যৌন নির্যাতনের দেশ হতে পারে।

আইসাথ মহামেদ দিদি, যিনি শিশু অধিকার রক্ষা মন্ত্রনালয়ের দায়িতে আছেন আর যিনি এই স্বৈরশাসকের কেবিনেটে যোগদানের আগে ইউনিসেফ এ কাজ করতেন , তিনি এই সার্ভের হিসেব আতো গুরুত্ব সহকারে দেখছেন না। তিনি মিনিভান নিউজকে বলেছেন যে শিশু যৌন নির্যাতনের এই চিত্রঅন্যান্য দেশের সাধারন পরিসংখ্যানের সাথে সামন্জস্যপূর্ণ

একজন স্বৈরশাসক আর একজন কেবিনেট মন্ত্রী পেডোফাইলদের যেখানে রক্ষা করে সেখানে মালদ্বীপের ব্লগারদের সামনে কঠিন সংগ্রাম। তবে এখন অন্তত ব্লগোস্ফিয়ারে পেডোফাইলদের স্বর্গরাজ্য করে রাখার বিষয়টি আর গোপন না

1 টি মন্তব্য

  • subir

    একটি ১২ বছরের মেয়ে ধর্ষনকারীদের সাথে যৌন কাজে সম্মত হয়েছে বলে প্রমানিত হয়েছে। সে চিৎকার করেনি মানে তো এইনা যে তার মত ছিল। এটি অদ্ভুত, আমার রাগ হচ্ছে। একটি ১২ বছরের মেয়ে আতঙ্কে তো কোন আওয়াজ করতে পারবে না।

আলোচনায় যোগ দিন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .