শত শত ব্লগাররা ইরানের জেলে পাঠানো ছাত্রদের সমর্থন করছেন

Irani Bloggers

এক দল ইরানী ব্লগার সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদেরকে মনে রাখা আর তাদের সম্বন্ধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্যে একটি প্রচারনা শুরু করেছে। এই গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে তিনজন এখনও জেলে আছে। প্রচারনার লক্ষ্য হচ্ছে যত কটি সম্ভব ব্লগকে ‘আগস্ট দ্যা ফিফ্থ’ (ইরানী ক্যালেন্ডারে ১৪ মরদাদ) নাম দেয়া ।

আটককৃতদের পরিবার জানিয়েছে যে এই ছাত্রদের (যাদের বয়স ২০ বছররে নীচে) উপর শারীরিক ও মানসিক দুই ধরনেরই নির্যাতন করা হয়েছে – গালি দেয়া থেকে বৈদ্যুতিক তার দিয়ে মারা পর্যন্ত। তাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে ইসলামিক রিপাব্লিকের সুপ্রিম লিডারকে অপমান করা আর জনগনের মতামতকে উদবুদ্ধ করা।

৫ই আগস্ট , ২০০৭

১৪মরদাদ ব্লগ অনুযায়ী এই তারিখ:

ইরানী সাংবিধানিক বিপ্লবের ১০১ তম বার্ষিকী। কিন্তু ইরানীরা এখনও গনতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে আর বিপ্লবী ছাত্র নেতাদের জেলে পাঠানো হয়। এইসব বিপ্লবীদের জন্য (যাদের মধ্যে কেউ কেউ ব্লগার) ইরানী একদল ব্লগার তাদের ব্লগের শিরোনাম ওই তারিখে পালটিয়ে রাখবে “আগাস্ট ৫: জেলে পাঠানো ইরানী ছাত্রদের প্রতি সমর্থনের দিন”। ইরানী ব্লগার না হলেও আমরা আপনাদের আমন্ত্রন করছি এতে অংশগ্রহন করার জন্য। আপনারা আমাদের সাথে যোগ দিতে পারেন 14.mordad@gmail.com এই ঠিকানায় ই-মেইল করে।

উক্ত ব্লগে জানান হয়েছে যে ৩৯৭ ব্লগার ইতিমধ্যে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন এবং আগামীতে আরো অনেকে করবেন।

এই পদক্ষেপ সমর্থনকারী হামিদ সিটি জেলে যাওয়া ছাত্র আর কিছু রাজনৈতিক বন্দীদের ছবি তার ব্লগে প্রকাশ করেছেন। এই ব্লগার পরামর্শ দিয়েছেন যে প্রত্যেকের উচিত কমপক্ষে তার ১০জন বন্ধুকে এতে যোগদান করতে বলা।

মির বলছেন “ইরানী সাংবিধানিক বিপ্লবের ১০১ বছর পরেও ইভিন জেল ইরানের সাহসী সন্তান দ্বারা ভরে আছে”।

ফারদায়েকভাতান বলছেন যে আমাদের ন্যায়, গনতন্ত্র আর জেলে যাওয়া ছাত্রদের নিয়ে লেখা উচিত। হয়ত তাহলে নিরাশার মরুভূমির বুকে আমরা প্রত্যেকে একটি মোমের আলো হয়ে আশা জাগাতে পারি।

গাঞ্জি ডাক দিচ্ছেন সমর্থনের জন্য:

এক খোলা চিঠিতে সাংবাদিক আর ভূতপূর্ব রাজনৈতিক বন্দী আকবর গাঞ্জি জেলে থাকা ছাত্রদের সমর্থন করার জন্য জনগনকে লিখেছেন। কামাঙ্গির লিখছেন

বিশিষ্ট রাজনৈতিক কর্মী আকবর গাঞ্জি, যিনি ৫ বছর জেলে থেকেছেন এখন জেলে থাকা ইরানী ছাত্রদের মুক্তির জন্য ইরানীদের সাহায্যের আহ্বান করেছেন এক খোলা চিঠিতে। তার বন্দী থাকার সময়ের দিনগুলোর কথা মনে করে আর ধর্মের নামে এই ইসলামিক রিপাব্লিক যে সব অন্যায় করেছে তা সবাইকে মনে করিয়ে দিয়ে তিনি লিখেছেন যে নারী অধিকার সংস্থা আর লেবার সিন্ডিকেট বাইরে থেকে সমর্থন পায় কারন পৃথিবীর সব জায়গায় তাদের সংশ্লিষ্ট সংস্থা রয়েছে। অন্য দিকে এইসব ছাত্রদের পশ্চিমে কোন স্বপক্ষ নেই আর তাই তারা বেশি দুর্বল।

ইসলামী ব্লগার বনাম ইরানী টিভি:

এছাড়াও অন্য ব্লগাররা অন্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত আছেন। বেশ কিছু ইসলামী ব্লগার সম্প্রতি ইরানী টিভির সমালোচনা করেছেন। এর একটা প্রধান কারন হল ইরানী টিভি উপস্থাপক ফারজাদ হাসানি পুলিশ প্রধান সরদার রাদানকে চেপে ধরেছিলেন মহিলাদের সাথে সাম্প্রতিক পোষাক নিয়ম অভিযানের সময় খারাপ ব্যবহার করার জন্য।

আব্দেতো বলছেন যে উপস্থাপক আর তাদের অতিথিরা আসলে ইসলামিক পোষাকের নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় যদিও তারা জাতীয় মাধ্যমে উপস্থাপিত হন আর বিভিন্ন শ্রেনীর লোক তাদের দেখেন। তিনি বলেন যে প্রতিদিন এটি খারাপ হচ্ছে। তাদের পোষাকের ধরন বহু মানুষকে প্রভাবিত করে আর খুব দ্রুত তা ফ্যাশনে পরিনত হয়। উনি বলেছেন যে ওই উপস্থাপক পুলিশ প্রধানকে ঘাবড়িয়ে দেবার চেষ্টা করছিলেন।

আগাহি লিখেছেন:

টিভিকে আমরা গন্য করি আমাদের সন্তানদের বিপ্লবী মূল্যবোধে শিক্ষিত করার এক মাধ্যম হিসাবে। সেখানে প্রচারিত সিনেমা আর নাটকে যেহেতু শুধু কি করে বড়লোক হওয়া যায় আর আরামের জীবন পাওয়া যায় এই সব বিষয় উতসাহিত করা হয় তাতে আমার সন্দেহ হচ্ছে যে টিভি আসলেই এই ভাবে কাজ করে কিনা। এটা পালটানো দরকার। কি করে এই সংস্থা এমন উপস্থাপকদের নেয় যারা ইসলামিক নিয়মকানুনকে শ্রদ্ধা করে না। এই ব্লগার যোগ করেছেন যে ইরানী রেডিওতে তিনি পশ্চিমা বাজনার অধিক প্রচার শুনে অবাক হয়েছেন।

-হামিদ তেহরানী

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .