প্যালেস্টাইনঃ ড মোনা এল ফাররা আর অন্যদের প্রতি সহানুভূতি

ফিলিস্তিনি ব্লগগুলোর লেখা সব সময় খুশির বার্তা বয়ে আনে না। বিশ্বের অনেকে যখন তুরস্কে একেপি দলের বিজয় আর হ্যারি পটারের সর্বশেষ বই এর মুক্তি প্রকাশের আনন্দ করছে, তখন অনেকে কষ্টের মধ্যে আছে। প্রথমে আমরা ড: মোনা এল ফাররা এর ব্লগ ফ্রম গাজা উইথ লাভ এর লেখা নিয়ে আলোচনা করব। ড: এল ফাররা গাজার রেড ক্রিসেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট আর সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্রে একটা বক্তৃতা শেষ করেছেন যখন তিনি খবর পান যে তার মা খুবই অসুস্থ। কিন্তু তার মাকে জীবন্ত দেখার জন্য তাকে সময় মত সীমান্ত পার হওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। তিনি রোববার মারা যান। গত সপ্তাহে তিনি তার ব্লগে একটি আবেদন রেখেছেনঃ

আমি সব সময় আমার রুগী আর অন্যদের কষ্ট লাঘবের জন্য ছিলাম, কিন্তু তার শেষ সময়ে আমি থাকতে পারব না, আমার হাত বাধা। আমি অসহায়, কিছুই করতে পারছি না। আমি শুধু অপেক্ষা করতে পারি। আমার গলা শুকিয়ে গিয়েছে আর আমার চোখ ভরা পানি। এটা অন্যায়, অমানবিক। এটা দখল। কি করে এটা ন্যায় হতে পারে যখন এটার ভিত্তি হচ্ছে অন্যায়, আগ্রাসন আর নিষ্টুরতা? আমাকে কেউ কি বাড়ি যেতে সাহায্য করতে পারে? আমার মার শেষ দিনে তার কাছে আমার থাকা প্রয়োজন। বিদায় মা, শান্তিতে থাকো, যে শান্তি গাজাতে নেই।

আমি ড: মোনা এল ফাররাকে সহানুভুতি জানাচ্ছি । মিউনিখ এন্ড আ লিট্টিল বিট অফ এভ্রিথিং ব্লগ এর কারিন ড: এল ফাররাকে তার সহানুভুতি জানিয়েছেন এবং আরেকটি আবেদন করেছেনঃ

আমার আর অগনিত অনেকের নামে আমি আবেদন করছি সকল সরকার যারা সাহায্য করার মত অবস্থায় আছেনঃ সীমান্ত খোলার ব্যাপারে সাহায্য করুন! ৬০০০ নিরাপরাধ লোক যারা মিশরের দিককার রাফাহ সীমান্তে ২ মাস ধরে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছে তাদের কষ্ট লাঘবে সাহায্য করুন।
ফ

রাফায় ফ্যালেস্টাইন-মিশর বর্ডারের ক্রিয়েটিভ কমন্স-লাইসেন্সড ছবি টিয়েরএকে'র সৌজন্যে
পিস ফর প্যালেস্টাইন যৌক্তিকভাবে নামকরনকৃত ব্লগটি দেশের জন্য যারা কষ্ট করেছেন আর মারা গিয়েছেন তাদের কথা বলেছেন :

গত শতকে প্যালেস্টাইনে হাজার হাজার মানুষ খুন হয়েছে এই দখলের কারনে। এদের প্রত্যেকের ইতিহাস অন্যায় যন্ত্রনা ভোগ করা করার আর মুক্তির জন্য সংগ্রামের ইতিহাস। তাদের বেশিরভাগই অসাধারন লোক যারা কঠিন পরিস্থিতিতে তাদের জীবন আর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চেয়েছে। তারা অন্ধকারের মধ্যেও স্বাধীনতার আলো দেখেছেন।

আরাবিস্টো ব্লগে ড: আরেফ আসসাফ ইস্রায়েলে অভিবাসন (আলিয়া) করা আমেরিকান ইহুদি এ্যাব্বি লাইচম্যানকে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেনঃ

এ্যাব্বি যেখানে এমনিতেই ইস্রায়েলি নাগরিকত্ত পেয়ে যাবেন আমাকে তা অস্বীকার করা হবে। যদি পরবর্তী প্লেনে না ওঠানো হয় তার পরও আমি আমার মাতৃভূমিতে যাওয়ার জন্য অস্থায়ী ভ্রমন ভিসা পাব। ফিলিস্তিনি মানুষের দুর্ভোগের কি বেদনাদায়ক চিত্র যা এটিই যে তাদের দুরবস্থার মুলে তা সত্যিকারভাবে তুলে ধরে না।

ড: আসসাফ জনাবা লাইচম্যানকে আরও বলছেন:

এ্যাব্বি, ফিলিস্তিনিরা তোমার মত, কে তার চুল কেটে দেবে বা দুধ বোতলে না প্লাস্টিক ব্যাগে বিক্রি হবে তা নিয়ে চিন্তা করবে না। তাদের চিন্তা আরো সাধারন; তারা তাদের পরবর্তী খাবার নিয়ে চিন্তা করবে, তারা চিন্তা করবে যে তাদের বাড়িতে ফেলা ১০০০ পাউন্ডের পরবর্তী বোমা হামলা থেকে তারা বাঁচতে পারবে কিনা। তারা চিন্তা করবে যে সময় মত তারা একটা চেক পয়েন্ট পার হয়ে বাচ্চার জন্ম দিতে বা ব্লাড ট্রান্সফিউশন নিতে বা চাষ করতে পারবে কিনা। আমার বিশ্বাস এই ব্যাপারগুলো তোমার চকচকে বিক্রির বই থেকে বাদ গিয়েছে কারন তোমার জন্য এগুলোর কোন অস্তিত্ব ছিল না, আর যদি অস্তিত্বও থাকে তাহলেও মূল্য ছিল না।

আমি আপনাদের কাছে প্যালেস্টিনিয়ান পান্ডিটের একটা লেখা তুলে ধরতে চাই যেখানে তিনি নতুন ফিলিস্তিনি মুক্তি সংগ্রামের কথা বলেছেন :

এই নতুন সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে প্রবাসী লাখো ফিলিস্তিনিদের একত্র করে তাদের দিয়ে কথা বলানো। পিএ (প্যালেস্টাইনি আর্মি) তৈরির পর থেকে যে বিছিন্নতা আর আশার অভাব বেশিরভাগ প্যালেস্তিনিরা বোধ করেছে তা শেষ হওয়া উচিত। পিএ গঠিত হয়েছিল দখলকৃত ফিলিস্তিনিদের জন্য কিন্তু এখন তাদের আরও বড়ো কিছু দরকার। ষড়যন্ত্র হচ্ছে ফিরে যাওয়ার অধিকারের কথা বাদ দিয়ে ফিলিস্তিনিরা যাতে এখন শরনার্থীদের স্থায়ী করার অধিকারের কথা বলে। আমাদের সব প্যালেস্তিনিদের নিয়ে একটি কাঠামোর দরকার যার মাধ্যমে ফিরে যাওয়ার সংগ্রাম চালিয়ে নেয়া যায়।

-জিলিয়ান ইয়র্ক

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .