- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

পাকিস্তানঃ ইসলামাবাদের বোমা বিষ্ফোরন নিয়ে ব্লগারদের আলোচনা

বিষয়বস্তু: জনপ্রিয় পোস্ট, আপনার প্রথম পোস্ট!, এক মাস , দুইটি পোস্ট, তিন মাস , পাঁচটি পোস্ট, ছয় মাস , দশটি পোস্ট, দক্ষিণ এশিয়া, পাকিস্তান, ধর্ম, প্রচার মাধ্যম ও সাংবাদিকতা, যুদ্ধ এবং সংঘর্ষ, রাজনীতি, সরকার

পাকিস্তানের সাময়িক ভাবে চাকুরিচ্যুত প্রধান বিচারপতির সমর্থনে আয়োজিত একটা সম্মেলনে এক আত্মঘাতি বোমা হামলায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন [1]। পাকিস্তানি আর্মির লাল মসজিদে অভিযানের [2] পরবর্তী উদ্বেগময় সময়ে দেশের ব্লগাররা রাজনৈতিক অবস্থা পর্যবেক্ষন করছিলেন। বোমা বিষ্ফোরনের কিছুক্ষনের মধ্যে মেট্রোব্লগিং ইসলামাবাদ [3] লিখেছেন-

—- মানুষ চিন্তা করতে বাধ্য হয় যে গত সপ্তাহে লাল মসজিদ ঘটনার কারনে যে সংঘাতপুর্ন প্রতিক্রিয়া হবে বলে মানুষ ভয় পাচ্ছিল এটা তারই শুরু কি না।

অল থিংস পাকিস্তানে [4] কিছু ছবি আছে (সতর্কীকরন: ভীতিকর ছবিগুলি বোমা বিস্ফোরন স্থানের)। লেখাতে যদিও বেশি কিছু ব্যাখ্যা নেই কিন্তু মন্তব্য সেকশনে বিষ্ফোরন আর মোশাররফ সরকার নিয়ে বক্তব্য আছে।

এফ -৮ মারকাজে আমার অফিসের নিচে আত্মঘাতি বোমা হামলার ঘটনাটা ঘটে। বিষ্ফোরনটি এতো শক্তিশালি ছিল যে আমার অফিসের বারান্দার দিকের সব জানালার কাচ ভেঙ্গে গেছে, দেয়ালের আস্তর ফেটে গেছে আর কাঠের দরজা তালা ভেঙে খুলে গেছে। বিষ্ফোরনের বেগ বেশ শক্তি নিয়ে দুই বাড়ি/প্লাজার মধ্যে দিয়ে ইসলামাবাদ কোটের দিকে ধাক্কা দেয়। এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত আর সম সংখ্যক আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

মন্তব্যে আলোচনা করা হয়েছে যে প্রেসিডন্ট মোশাররফ কি এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী যেহেতু অনেক মানুষ তার সরকারকে পছন্দ করে না। কেউ কেউ আবার এর বিরোধিতা করেছে। একজন বলেছেন কেন এটা শুধুমাত্র ঘরোয়া রাজনীতির ব্যাপার নয়:

এরা পৃথিবীর কোন ব্যাপারকে গন্য না করা সন্ত্রাসী। তাদের কোন উদ্দেশ্য নেই, অরাজকতা সৃষ্টি করাই এদের লক্ষ্য। পাকিস্তানের সীমানাজুড়ে মাদ্রাসাগুলিতে তৈরি করা কিছু জীবন্মৃত মানুষ আছে যাদের কাজের ধারা পূর্বে ছিল সশস্ত্র সংগ্রাম। কিন্তু বর্তমানে ইরাকে আত্মঘাতি বোমা হামলার সাফল্যের পর বোমার বেল্ট তাদের নতুন অস্ত্র হয়েছে। তাদের নিজেদের বিশ্বাসের প্রতিষ্ঠার জন্য এবং পৃথিবী জয়ের জন্য সন্ত্রাসী কাজের পরিকল্পনা করা ছাড়া তাদের অন্য কোন দাবি নাই।

দ্যা পাকিস্তানি স্পেকটেটর [5] পাকিস্তানের সাধারন মানুষদের কথা আর তাদের রক্ষা করতে সরকারের ব্যর্থতার কথা লিখেছেন। লেখক বলেন যে এর থেকে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তা হল গনপ্রতিনিধি দিয়ে দেশ শাসন।

দ্যা ক্যানভাস [6] টেলিভিশনে দেখানো বিষ্ফোরনের ছবি নিয়ে আর কি করে এই গোলমালকে কমানো যায় তা আলোচনা করেছেন। লেখক বলেন:

এরকম অবস্থায় পুলিশের উচিত মানুষকে কিছুদিন সভা করতে বারন করা কারন এখন আত্মঘাতি বোমা হামলার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এটা সাধারন জ্ঞানের ব্যাপার। প্রধান বিচারপতির সমর্থকদের বোঝা উচিত যে দেশ এখন কঠিন সময়ের মুখোমুখি কারন ওয়াজিরিস্থান এলাকা থেকে হুমকি দেয়া হয়েছে যে তারা নামি নেতাদের আত্মঘাতি বোমা হামলার লক্ষ্যে পরিনত করবে। লাল মসজিদ নিয়ে এত কিছু হচ্ছে যে ইসলামাবাদে থাকাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

রকেস্তানি [7] যিনি মিডিয়াতে কাজ করেন তিনি বলছেন গত এক সপ্তাহের ৪টা বোমা হামলার কথা এবং দেশের মিডিয়ার বর্তমান অবস্থা। লেখক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে লাল মসজিদের ব্যাপারটা যে পরিমান মনোযোগ পেয়েছে তার কিছু মজার দিক তুলে ধরেন।

লাল মসজিদের ব্যাপারটা আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে মনোযোগ পেয়েছে মূলত বোরখা পরা মহিলারা লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দেখে। সাধারন মহিলাদের ক্ষমতা পাওয়ার একমাত্র উপায় কি চরমপন্থা? আমার মনে হয় মৌলবাদ সমাজের এক অংশের মহিলাদেরকে ক্ষমতায়ন করেছে। এটা কিছুটা বোঝা যায়, তাই নয়কি? যেখানে সাধারনভাবে মহিলাদের কোনঠাসা অবস্থা সেখানে তারা হঠাত করে সরকার আর কর্তৃপক্ষের নজরে পড়েছে।

দ্যা মারমেইড ট্যাভার্ন [8] একটা ভিডিও দোকানের কথা স্মরন করছেন যেখানে ছোটবেলায় তিনি যেতেন । বোমা বিস্ফোরনের পর মারকাজের কাছে থাকা তার দাদা-দাদির খোঁজ নেয়ার সময় তার উদ্বেগের কথাও সে বলেছে।

এটা কে এবং কেন করেছে? কি কারন হতে পারে যা একজন মানুষকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সফল করার জন্য আর একজন মানুষের প্রান নিতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে? অন্যের রক্ত দিয়ে কি লিখতে হবে? জীবনের পবিত্রতা কি করে এই লোকদের কাছে কিছু মানে রাখে না? আমি এটা বুঝতে পারি না, আর বুঝতে চাইও না। এখানে, আমার শহরে না। আমি চিন্তা করি যে পৃথিবীর কত শহরের কত মানুষ এই কথাগুলো বলেছে …

মাইক্রো পাকিস্তান [9] মোশাররফ এর শাসনের ফলাফল আর দুর্ঘটনার দৃশ্য দেখানোর সময় টেলিভিশনের দায়িত্বের অভাবের কথা বলেছেন।

জিইও তাদের জঘন্য কাজের ধরনে বার বার রক্তে ভেসে যাওয়া আর কিছু ক্ষেত্রে শুধু দেহের উপরের অংশ আছে এমন সব ছবি পুরো জাতিকে দেখিয়েছে। কিছু দেহে তখনও শেষ নিশ্বাসটুকু ছিল আর পুরো জাতি এই বিভীষিকা বার বার দেখেছে।

পিস লাইক আ রিভার [10] রাজনৈতিক জটিলতা, পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক আর ধর্মীয় বিভেদ, দলীয় রাজনীতি আর দেশে আত্মঘাতি বোমা হামলার কথা বলেছেন।